পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাহে রমজান মাসের বাকি মাত্র ৪৫ দিন। এ মাসে ডাল, তেল, চিনি, ছোলাসহ কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ব্যবহার বেড়ে যায়। প্রতি বছর রমজান শুরুর আগে এক দফা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেয়া হয়। আবার রমজান মাসে নতুন করে পণ্য মূল্য বৃদ্ধি পায়। দাহিদা বেশি এবং কৃতিম সঙ্কট দেখিয়ে মূলত পণ্যমূল্য বৃদ্ধি করে রোজাদারদের ভোগান্তিতে ফেলা হয়। কিন্তু ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) আগাম প্রস্তুতি নিয়ে পণ্যের সরবরাহ বাড়িয়ে মূল্য নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। এবার ঠিক রমজানের আগেই বিশ্বব্যাপী নতুন করে দেখা দিয়েছে করোনাভাইরাসের ছোবল। ইতোমধ্যে এ কারণে বিশ্বব্যাপী আমদানি-রফতানিতে ধস নেমেছে। তাই আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়ার আশঙ্কা ভোক্তাদের। কিন্তু এবারের রমজান মাস পণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে টিসিবি কি প্রস্তুত?
টিসিবি সূত্র জানায়, বিগত রমজানের আগে খেজুর আমদানি হয়েছিল ১০০ টন। এ বছর ৩০০ থেকে ৫০০ টন খেজুর আমদানি করা হবে। গত বছর টিসিবি ভোজ্য তেল আমদানি করে ৩ হাজার টন। এবার আমদানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ হাজার টন। গত বছর চিনির আমদানি ছিল সাড়ে ৩ হাজার টন। এ বছর চিনির আমদানি করা হবে ২৫ হাজার টন। মসুর ডাল গত রমজানে আমদানি করা হয় দুই হাজার ৫০০ টন। এবার পণ্যটির আমদানি কয়েক গুণ বাড়ানো হচ্ছে। টিসিবি আগামী ১২ মার্চের মধ্যে রোজার পণ্য আমদানির সব টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করবে বলেও জানানো হয়। শুধু তাই নয়, এবার রমজানে রাজধানীর খোলা বাজারে টিসিবির পণ্য বিক্রির জন্য ট্রাকের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ করে ৩৫০টি করা হচ্ছে। এর বাইরে ১০টি সেলস সেন্টার, নতুন চারটি ক্যাম্প অফিস এবং আটটি আঞ্চলিক অফিসের মাধ্যমেও এসব পণ্য সরবরাহ করা হবে জানায় টিসিবি।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স‚ত্রে জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রভাব মোকাবেলা করে মুজিববর্ষ আর রমজান মাসে পণ্যমূল্য স্থিতিশীল রাখতে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ- টিসিবিকে ব্যাপক প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। এবারই প্রথমবারের মতো সংস্থাটি নিজেই রমজানের পণ্য আমদানি জন্য দরপত্র আহ্বান করেছে। সব মিলিয়ে এবার রমজানের আগেই অন্যবারের চেয়ে প্রায় দশগুণ বেশি পণ্য নিয়ে টিসিবিকে মাঠে নামতে বলা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৪ মার্চ রমজানে ভোগ্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণ রাখাসহ অন্যান্য ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে রমজান উপলক্ষ্যে নিত্যপণ্যের মজুত ও সরবরাহ, ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে এবং জনদুর্ভোগ লাঘবে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে বলা হয়। বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়কে নিত্যপণ্যের মজুদ, সরবরাহ ও ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার বিষয়টি কঠোরভাবে বাস্তবায়নেরও নির্দেশ দেয়া হয়। একই সঙ্গে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে জেলা প্রশাসন, খাদ্য মন্ত্রণালয় ও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে দায়িত্ব দেয়া হয়।
এবার রমজান মাসে যাতে মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বাজার অস্থিতিশীল করতে না পারে সে জন্য বড় পরিসরে টিসিবির মাধ্যমে পেঁয়াজ, ছোলা, চিনি, মসুর ডাল, ভোজ্য তেল ও খেজুর বিক্রি করা হবে। এবারই প্রথম পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হওয়ায় এ পণ্যটিও টিসিবি পণ্যে যুক্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে খেজুর ছাড়া বাকি পণ্য বাফার স্টক (আপৎকালীন মজুতের গুদাম) হিসেবে সারা বছরই ৫০০ থেকে এক হাজার টনের বেশি মজুদ থাকে। চলতি বছরও একই পরিমাণ মজুদ রয়েছে।
জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি সাংবাদিকদের বলেন, করোনাভাইরাসের প্রভাব এবং রমজান মাসকে কেন্দ্র করে নিত্যপণ্যের বাজারদর নিয়ন্ত্রণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কঠোর দৃষ্টি রাখছে। চীনে করোনাভাইরাসের পাশাপাশি তাদের হলি ডে (ছুটির দিন) ছিল, তাই আমদানি-রফতানি কিছুটা কমে যায়। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে আসছে চীন। দেশটি থেকে বেশকিছু পণ্য আমদানির জন্য এলসিও খোলা হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এবার আমরা টিসিবিকে রমজান কেন্দ্রিক পণ্য বিক্রির কার্যক্রম জোরদার করতে বলেছি। খোলা ট্রাকে বিক্রির জন্য ইতোমধ্যে টিসিবি বেশকিছু পণ্য সংগ্রহ করেছে, আরও সংগ্রহ করতে বলা হয়েছে। রমজানের সময় ইফতারিতে ব্যবহার হয় এমন পণ্য বিশেষ করে পেঁয়াজ, চিনি, ডাল, ছোলা, ভোজ্যতেল ও খেজুরের আমদানি বাড়ানো হচ্ছে। বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে, তারা যেন এসব পণ্যের আমদানি ও মজুত বাড়ান। যাতে ওই সময় দেশের মানুষ এসব পণ্য ন্যায্য দামে কিনতে পারেন। এ বিষয়ে বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফর উদ্দীন বলেন, আসন্ন রমজানকে সামনে রেখে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে তারা প্রস্তুত রয়েছেন। বিশেষ করে ভোগ্য ও নিত্যপণ্যের দাম যাতে ওই সময় না বাড়ে সেদিকে সবচেয়ে বেশি নজরদারি রাখা হবে। রজমান ও করোনাভাইরাসকে পুঁজি করে কোনো ব্যবসায়ী মনোপলি ব্যবসা করছে কি-না, বিষয়টি কঠোরভাবে নজর রাখা হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।