Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মুজিব শতবর্ষের অনুষ্ঠানে কেমন প্রভাব ফেলবে করোনা?

বিবিসি বাংলা | প্রকাশের সময় : ৭ মার্চ, ২০২০, ১:০৬ পিএম | আপডেট : ১:২২ পিএম, ৭ মার্চ, ২০২০

বাংলাদেশের স্বাধীনতার স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর দিনক্ষণ গণনা চলছে। আনুষ্ঠানিক মুজিববর্ষ উদ্বোধনের দিন এগিয়ে আসছে। মুজিববর্ষ উদ্বোধন ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা এমন এক সময় হচ্ছে, যখন বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়াচ্ছে। এ অনুষ্ঠানের ওপর ভাইরাস সংক্রমণ পরিস্থিতির কোন প্রভাব পড়বে কিনা - অনেকেই এ প্রশ্ন করছেন।
বিশ্বের প্রায় ৮০টি দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ হয়েছে। এতে মৃত্যু হয়েছে ৩ হাজারের বেশি মানুষের। এ ভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে বিভিন্ন দেশের সরকার। এমন প্রেক্ষাপটেই আসছে ১৭ই মার্চ বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠান হবার কথা রয়েছে।
সেই বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন হবে ঢাকার তেজগাঁও এলাকার পুরাতন বিমানবন্দরে। সে অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্রে মোদী ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আসা অতিথিরা থাকবেন।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া থেকে অতিথিদের যোগ দেবার কথা রয়েছে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য ছাড়াও আতশবাজি এবং কনসার্টও থাকবে। স্বভাবতই সেখানে হাজার-হাজার মানুষের সমাবেশ হবে বলে আশা করছে সরকার। তবে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাসের ব্যাপক সংক্রমণের প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন দেশে লোক জমায়েত বন্ধ করে দিয়েছে সেসব দেশের সরকার।
মুসলিমদের জন্য সবচেয়ে পবিত্র স্থান কাবায় প্রবেশও বন্ধ করে দিয়েছে সৌদি আরব সরকার। ইটালিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে ফুটবল মাঠে দর্শক ঢুকতে দেয়া হচ্ছেনা।। এমনকি স্কুলও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিভাগ বারবারই দাবি করছে যে দেশটিতে করোনাভাইরাসের কোন সংক্রমণ হয়নি। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যেসব দেশ খেকে অতিথিদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, সেসব দেশগুলোর বেশ কয়েকটিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ হয়েছে।
এমন অবস্থায় সেসব দেশ থেকে অতিথিরা আসলে বাংলাদেশের জন্য কোন ঝুঁকি তৈরি হবে কিনা সে প্রশ্ন অনেকের মনে আছে।
বিদেশ থেকে যারা বাংলাদেশে আসবেন তদের জন্য কিছু নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউট। এগুলো হচ্ছে: ১৪দিন বাসার ভেতরে নিজকে আলাদা রাখতে হবে। বাইরে কোন জনসমাগমে না যাওয়া। জরুরী প্রয়োজনে বাইরে যেতে হলে মুখে মাস্ক লাগানো।
প্রশ্ন হচ্ছে, শেখ মুজিবের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যারা আসবেন - তাদের ক্ষেত্রে কী হবে? তাদেরও কি এই নিয়ম মানতে হবে?
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মি: মোমেন বিবিসি বাংলাকে জানান, "আমরা তাদের জন্য স্পেশাল ব্যবস্থা করবো।" এ ব্যাপারে বিস্তারিত আর কিছু বলেননি পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের পরিচালক মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা আশা করেন, ১৭ই মার্চের অনুষ্ঠান ভালোভাবেই সম্পন্ন হবে।
বিদেশী অতিথিদের ক্ষেত্রে কী করা হবে - সে বিষয়ে এখনো কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সরকার।
"এ বিষয়টা নিয়ে এখনো পরিকল্পনা চলছে। এটা যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে করা হচ্ছে, সম্পূর্ণ পরিকল্পনাটা এখনো আমাদের কাছে নেই। আমরা যখন পরিকল্পনাটা আমাদের হাতে পাবো, তখন আপনাদের জানিয়ে দেবো" - বিবিসিকে বলছিলেন মীরজাদি সেব্রিনা ফ্লোরা। উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত সরকারি হাসপাতালে শয্যার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং তাদের এই ব্যবস্থা যথাযথ বলে তারা মনে করছেন।
তিনি বলেন, “সারাদেশে সব হাসপাতালে পাঁচটি করে বেড নিয়ে আইসোলেশন ইউনিট করে রাখা হচ্ছে। এছাড়া আরও কিছু হাসপাতাল ডেজিগনেট করে দেয়া হচ্ছে। যে সব হাসপাতাল ভবন নতুন হয়েছে বা পড়ে আছে, যেমন ঢাকায় কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আমরা অন্য রোগী ভর্তি বন্ধ করে দিয়ে করোনার জন্য ডেজিগনেট করেছি। এরকম ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি।"
করোনা প্রতিরোধ প্রসঙ্গে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ডা: জাফরুল্লাহ চৌধুরী মনে করেন, শুধু হাসপাতালে শয্যা রাখলেই হবে না। জেলা উপজেলায় এর চিকিৎসা কতটা আছে, তা নিয়ে তার সন্দেহ আছে।
"চিকিৎসাটা বড় বড় হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও করা সম্ভব না। করোনাভাইরাসে যদি কেউ আক্রান্ত হয়েই যায়, তখন মুল প্রভাবটা পড়বে ফুসফুসে। আর ফুসফুসে হলেই শ্বাসকষ্ট হবে, অক্সিজেন নিতে পারবে না। সেখানে রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা নিরুপণের যন্ত্র থাকতে হবে।"
"ভেন্টিলেটার এবং মনিটর থাকতে হবে। সার্বক্ষণিক নার্স ডাক্তার থাকতে হবে। এমন ব্যবস্থা আমাদের কয়টা হাসপাতালে আছে।"
"দেখেন আমার গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে আইসিইউতে মাত্র ১০টা বেড আছে। আমি ১০জনের বেশি রোগী নিতেই পারবো না। অন্য রোগীর বিষয়ও আছে। এই জন্য আমার মনে হয়, প্রতিরোধের বিষয় আরও জোরদার করা দরকার।"



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মুজিব শতবর্ষ

২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২১
১৮ মার্চ, ২০২০
১৭ মার্চ, ২০২০
১৭ মার্চ, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ