Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হাফ টিকিটের শিশুযাত্রীকে খাবার না দেয়ায় তোলপাড়

প্রকাশের সময় : ১১ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সোনার বাংলা এক্সপ্রেস
বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের নতুন ট্রেন সোনার বাংলা এক্সপ্রেসের যাত্রীদের খাবার নিয়ে অভিযোগ থামছেই না। একের পর এক অভিযোগ উঠছেই। গত শনিবার চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসার সময় হাফ টিকিটের এক শিশুযাত্রীকে খাবার না দেয়াকে কেন্দ্র করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপে বিষয়টির সুরাহা হয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে হাফ টিকিটের যাত্রী শিশুদেরও খাবার দেয়া হবে। যাত্রীদের অভিযোগ, এর আগে প্রথম যাত্রায় সোনার বাংলা ট্রেনে যাত্রীদের যে খাবার দেয়া হয় তার মূল্য ৬০ টাকার বেশি হবে না। অথচ যাত্রীদের কাছ থেকে খাবার বাবদ বাধ্যতামূলকভাবে আদায় করা হচ্ছে ১৯৫ টাকা। পর্যটন কর্পোরেশন সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে খাবার সরবরাহ করে থাকে। খাবার নিয়ে অভিযোগ ছাড়াও নতুন এই ট্রেনে নানা অনিয়ম যাত্রীদের হতাশ করছে।  
জানা গেছে, গত শনিবার সোনার বাংলা এক্সপ্রেসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন সরকারি চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম। বিকাল ৫টায় ট্রেনটি চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ার কিছুক্ষণ পর আসে খাবার পরিবেশনকারী দল। খাবার দেখে খুশি হয় রফিকুল ইসলামের ৬ বছরের শিশুপুত্র। কিন্তু ওই শিশুর সামনেই তার অবিভাবকের মুখের ওপর জানিয়ে দেয়া হয়, হাফ টিকিটের কোনো খাবার নেই। শিশুটির পিতা রফিকুল ইসলামের ভাষায়, এ কথা শুনে ‘সে লজ্জা পেল। আমার খাবারটি তাৎক্ষণিকভাবে তাকে দিয়েছি। অভিমানী সে নিতে চায় না। তাদেরকে (পর্যটন কর্পোরেশনের কর্মচারী) বললাম, ভাই কাজটা কি ঠিক হলো? আমার ছেলে সোনার বাংলার যে পরিচয় পেল তা ভালো হলো না।’
বিষয়টি নিয়ে রেল কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করার পর এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানান রেলওয়ের একজন কর্মকর্তা। তিনি বলেন, আমার জানা মতে, পর্যটন কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ এখন থেকে হাফ টিকিটের যাত্রীদেরও একই খাবার পরিবেশন করবে।
এদিকে, শনিবারের ঘটনার পর থেকে প্রচার করা হচ্ছে সোনার বাংলা ট্রেনে যাত্রীদের ফ্রি খাবার দেয়া হয়। খাবারের জন্য অতিরিক্ত কোনো টাকা আদায় করা হয় না। এমন ধারণা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রেলওয়ের একাধিক ফেসবুকে পোস্ট দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অথচ ২৩ জুন ২০১৬ রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাছুমা নাছরিন স্বাক্ষরিত সোনার বাংলা ট্রেনের ভাড়া নির্ধারণ সংক্রান্ত এক চিঠিতে (স্মারক নং-৫৪.০০.০০০০.০০৭.৩১.০১৭.০৮-১৫৮০) ওই ট্রেনের প্রত্যেক শ্রেণীর যাত্রীর জন্য পৃথকভাবে খাবারের জন্য ১৯৫ টাকা অতিরিক্ত মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। চিঠিতে ঢাকা-চট্টগ্রামের মূল ভাড়া এসি সিট ৬৮৫ টাকা, ¯িœগ্ধা (এসি চেয়ার) ৫৭০ টাকা এবং শোভন ৩৪৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর সাথে বিরতিহীন চার্জ (১০ শতাংশ) এবং প্রতিটি শ্রেণীর জন্য খাবারের চার্জ ১৯৫ টাকা এর সাথে ভ্যাট যুক্ত করে মোট ভাড়া এসি সিট ১১০০ টাকা, এসি চেয়ার ১০০০ টাকা এবং শোভন চেয়ার ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। রেল সূত্র জানায়, প্রথম দিন থেকে খাবারের মান নিয়ে অভিযোগ ওঠার পর এখন নতুন করে খাবার ফ্রি হিসেবে চালিয়ে দেয়ার চেষ্টা হচ্ছে। ফ্রি হলে যাত্রীরা এর মান নিয়ে আর প্রশ্ন তুলবে নাÑ এমন ধারণা থেকেই এই অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।
অপরদিকে, সোনার বাংলা ট্রেনে টয়লেটে পানি থাকে না এমন অভিযোগ করেছেন বেশ কয়েকজন যাত্রী। তারা বলেন, যেখানে পানিই থাকে না সেখানে টিস্যু পেপার বা লিকুইড সাবান আশা করা ভুল। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়েও অভিযোগ করেছেন অনেকে। গত শনিবার রফিকুল ইসলাম নামে যে যাত্রীর শিশুকে খাবার দেয়া হয়নি ওই রফিকুল ইসলাম রেলওয়ের ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ওয়াশরুমে ঢুকে দেখলাম পানি নেই এক ফোঁটাও।’ এসব অভিযোগ নিয়ে রেলওয়ের কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাই কথা বলতে রাজি হননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হাফ টিকিটের শিশুযাত্রীকে খাবার না দেয়ায় তোলপাড়
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ