পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশ্ব মিডিয়ায় সমালোচনা
ইনকিলাব ডেস্ক : ৬ জুলাই ইরাক যুদ্ধে ব্রিটেনের সংশ্লিষ্টতার বিষয়ে চিলকোট রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার পর বিশ্বমিডিয়ায় তা ব্যাপক গুরুত্ব পেয়েছে। তবে সাবেক প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ারের প্রতি সহানুভূতি দেখা গেছে সামান্যই। খবর বিবিসি।
কিছু ভাষ্যকার তাকে আলোহীন নক্ষত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তারা বলেছেন, যেসব ব্রিটিশ সৈন্য ইরাক যুদ্ধে নিহত হয়েছেন তাদের স্বজনরা ব্লেয়ারের বিরুদ্ধে ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারেন। মধ্যপ্রাচ্যের কোনো কোনো ভাষ্যকার বলেছেন, ইরাক আগ্রাসনে ভুলের জন্য ক্ষমাপ্রার্থনা যথেষ্ট নয়। এর ফলে যা ঘটেছে তা কাটিয়ে উঠতে অনেক কিছু করা প্রয়োজন। উল্লেখযোগ্য, ইরাক যুদ্ধ বিষয়ে রিপোর্ট খোদ ইরাকের সংবাদ মাধ্যমগুলোতে সামান্যই প্রচার পেয়েছে।
মিসরের বেসরকারি দৈনিক আল ওয়াতান বলেছে, ১২ বছর পর ব্রিটেন ইরাক ধ্বংসের অপরাধ স্বীকার করেছে। বাহরাইনের সরকার সমর্থক দৈনিক আখবার আল খালিজ বলেছে, ঘৃণ্য ব্লেয়ার একজন যুদ্ধাপরাধী। চিলকোট রিপোর্টে ব্লেয়ারের ইরাক আগ্রাসনের প্রেক্ষাপট উন্মোচন ও এ জন্য তার নিন্দা করা হয়েছে।
ওমানের সরকারপন্থী আল-ওয়াতান পত্রিকায় ভাষ্যকার জুহায়র মাজেদ বলেন, পাশ্চাত্য সব সময়ই আরব বিশ্বের অবনতি চেয়েছে। সাইকস-পিকোট চুক্তি, বেলফুর ঘোষণা, ইসরাইলের প্রতিষ্ঠা ও আরবদের ওপর ইসরাইলের অব্যাহত হামলার কথা কে ভুলে যাবে? আর এ সবকিছুর পেছনেই ছিল ব্রিটেন।
লন্ডন থেকে প্রকাশিত দৈনিক আশারক আল-আওসাত বলে, এ রিপোর্টে কিছুই পরিবর্তন হবে না। ইরাক যুদ্ধ যে ক্ষতি করেছে তা কখনোই পূরণ হবে না। যে যুদ্ধের জন্ম দিয়েছে তা শেষ হবে না। আর তা জন্ম দিয়েছে ইসলামিক স্টেট গ্রুপের।
সংযুক্ত আরব আমিরাতের সরকারপন্থী দৈনিক আল-খালিজ বলেছে, ক্ষমা প্রার্থনাই যথেষ্ট নয় এবং যে ক্ষতি হয়েছে তা পূরণের প্রচেষ্টা নেয়া উচিত। একটি দেশকে আগুনে পুড়িয়ে এবং তার রাজনীতি ও অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়ে শুধু দুঃখ প্রকাশ করে কি পার পেতে পারে ব্রিটেন?
ফরাসি দৈনিক লা ফিগারোতে কলামিস্ট ফ্লোরেন্টিন কোলোম্প লিখেছেন, সাম্প্রতিক দশকগুলোর সবচেয়ে প্রতিভাবান ব্রিটিশ রাজনীতিক যিনি তিনবার নির্বাচিত, তিনি তার দেশেই কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।
অপর ফরাসি দৈনিক লা ইকোতে ভাষ্যকার জ্যাক হুবার্ট রোডিয়ার বলেন, মার্কিন অভিযানে ব্রিটিশ অংশগ্রহণ ছিল ইউরোপীয় ঐক্যে ছুরিকাঘাত, বিশেষ করে ফ্রান্স ও জার্মানির জন্য, যারা এ হামলার বিরোধিতা করেছিল।
জার্মানির সুয়েদ্দুৎসু জাইতুং বলেছে, চিলকোট রিপোর্ট সেখানে শেষ হয়েছে, যেখানে তা অপরাধের দায় বহনের ক্ষেত্রে ব্লেয়ারের জন্য আসলে ঝুঁকিপূর্ণ।
অন্য দৈনিক বার্লিনার জাইতুং বলে, ইরাকে অভিযানপরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে পরিকল্পনা সম্পূর্ণ অপর্যাপ্ত। সেখানে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ ইসলামপন্থ’ী সন্ত্রাসবাদের দরজা খুলে দেয়।
স্পেনের এল মুন্ডো দৈনিক বলে, বিশ্বকে এ রিপোর্টের শিক্ষা থেকে শিক্ষা নেয়া উচিত যাতে ব্যাপক ঐকমত্য ছাড়া এবং আন্তর্জাতিক আইনের ছত্রছায়া ব্যতিরেকে কেউ যেন পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী না হয়।
ইতালির দৈনিক কুরিয়ার ডেল্লা সেরার ভাষ্যকার ফ্যাবিও ক্যাভলেরা বলেছেন, টনি ব্লেয়ার জর্জ বুশের হাতের পুতুল হয়ে পড়েছিলেন। এ রিপোর্টের উপসংহার চরম রাজনৈতিক নিন্দা এবং সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর জন্য দুঃখজনক।
রাশিয়ার দৈনিক নেজাভিসিমায়া গ্যাজেটায় ভাষ্যকার ইয়েভজেনি মেদভেদেভ বলেছেন, চিলকোট রিপোর্ট ব্লেয়ারের খ্যাতির মারাত্মক ক্ষতি করেছে। যাহোক, ইরাকের পাপ ব্লেয়ারের ওপর শোধ তুলতে পারে। নিহতদের পরিবার এ রিপোর্টের সুবিধা নিয়ে দেওয়ানি মামলা করার আশা করছে।
আরেক রুশ দৈনিক ভেদোমস্তিতে ভাষ্যকার দিমিত্রি গোলোলোবভ বলেন, ব্লেয়ারকে মামলা থেকে মুক্তি পেতে দীর্ঘ লড়াই করতে হতে পারে। তিনি নিশ্চিতভাবেই জেলে যাবেন না, তবে প্রকাশ্যে তিনি হাঁটুতে পিটুনি খাবেন।
যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বলা হয়, ব্রিটেনের এস্টাবলিশমেন্ট ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের জন্য নিজেকে কখনো ক্ষমা করতে পারবে না। ৬ জুলাই ইরাকে হামলা বিষয়ে প্রকাশিত তদন্ত রিপোর্ট আত্মনিগ্রহের এক নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে। তথাকথিত চিলকোট রিপোর্ট আমাদের এমন কিছু বলেনি যা আগে আমাদের জানা ছিল না।
নিউইয়র্ক টাইমসে কারনি রস লিখেছেন, যারা বলেছেন যে ব্লেয়ার ও তার সরকার যুদ্ধের আগে গণবিধ্বংসী অস্ত্রের ত্রুটিপূর্ণ রিপোর্ট দ্বারা বিভ্রান্ত হয়েছিলেন, তাদের আর এখন কিছু বলার মুখ নেই।
টাইম ম্যাগাজিন বলেছে, ব্লেয়ার ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বুশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের সাক্ষ্যের প্রেক্ষিতে চিলকোট তদন্ত রিপোর্টে দেখা যায়, ওয়াশিংটনের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানানো ছাড়া লন্ডনের করার তেমন কিছু ছিল না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।