পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
৩শ’ বাড়ীঘরে লুটপাট : ফের সংঘর্ষের আশঙ্কা
সরকার আদম আলী নরসিংদী থেকে : রায়পুরার দুর্গম চরাঞ্চলে এমপি রাজু সমর্থক ও রাজু বিরোধী আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আব্দুর রহিম (৩৪) নামে এক আওয়ামী লীগ নেতা নিহত এবং অন্তত ১৫ জন আওয়ামী লীগ কর্মী আহত হয়েছে। লুণ্ঠিত হয়েছে ২ থেকে ৩শ’ বাড়ীঘর। গত ৮ জুন (ঈদের পর দিন) সকাল ১১ টায় রায়পুরার চানপুর ইউনিয়নের কালিকাপুর গ্রামে এই রক্তক্ষয়ী হামলার ঘটনাটি সংঘটিত হয়েছে। আহতদের মধ্যে নিহত রহিমের পিতা নাজিম উদ্দিন (৬৫), শহিদ মিয়া (৫৫), রিপা (১৩) এবং তাজুল ইসলাম (৪৮)কে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পর বাবুল বাহিনী এলাকা দখল করে নিয়েছে। পক্ষান্তরে আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল কাদির জিলানী গ্রুপের ৫/৬শ’ নেতাকর্মী গ্রাম ছেড়ে নিরাপদ দূরত্বে চলে গেছে। প্রতিপক্ষকে তাড়িয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল এখন সারা গ্রাম দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। সে ও তার বাহিনী অবাধে লুটপাট চালাচ্ছে জিলানী গ্রুপের নেতাকর্মীদের বাড়ীতে।
জানা গেছে, চানপুর ইউনিয়ন পরিষদের স্থগিত নির্বাচন নিয়ে সেখানে রায়পুরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কাদির জিলানী গ্রুপ এবং চানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল গ্রুপের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। সেখানে আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী দেয়া হয়েছে ইউনিয়ন সেক্রেটারী বাবুল মিয়াকে। কিন্তু আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মী ও সমর্থকরা বাবুল মিয়াকে চেয়ারম্যান পদ প্রার্থী হিসেবে মেনে নিচ্ছে না। তারা চাচ্ছে আব্দুল কাদির জিলানীকে মনোনয়ন দেয়া হোক। এ নিয়ে দ্বন্দ্ব চরম আকার ধারণ করলে ঈদের আগের দিন ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিনের সাথে আব্দুল কাদির জিলানীর কথা কাটাকাটির ঘটনা ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ নেতা বাবুল বাহিনীর কয়েক শ’ লাঠিয়াল ও ভাড়াটে সন্ত্রাসী ঈদের পর দিন শুক্রবার সকাল ১১ টায় জিলানীর ভাগিনা ৫ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহিমের বাড়ীতে টেঁটা, বল্লম, লাঠিসোটা ও ককটেল নিয়ে অতর্কিত হামলা চালায়। হামলার সময় বাবুল বাহিনী আব্দুর রহিমকে মারাত্মকভাবে টেঁটাবিদ্ধ করলে সে গুরুতর আহত হয়। এসময় তার পিতা নাজিম উদ্দিন ও অন্যরা ছুটে এলে হামলাকারী বাবুল বাহিনী তাদেরকেও মারধোর করে। অতর্কিত হামলায় টিকতে না পেরে জিলানীর সমর্থকরা বাড়ী থেকে সরে যেতে বাধ্য হলে বাবুল বাহিনী তাদের বাড়ীঘরে কয়েক ঘন্টাব্যাপী অবাধ লুটপাট চালায়। পরে মারাত্মক অবস্থায় আব্দুর রহিমকে প্রথমে রায়পুরা তুলাতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত শনিবার রাত আড়াইটায় আব্দুর রহিম মারা যায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা দেখা দেয়। পাল্টা হামলার আশংকায় বাবুল বাহিনীর শত শত লাঠিয়াল ও ককটেল সন্ত্রাসী কালিকাপুর গ্রামসহ আশেপাশের কয়েকটি গ্রামে ব্যাপক সন্ত্রাস শুরু করে। গতকাল রোববার সকালে বাবুল বাহিনী জিলানী সমর্থক মাওলা মেম্বারের বাড়ী দখল করে লুটপাট করে। পরে তারা কালিকাপুর বাজার দখল করে বর্তমানে নিহত আব্দুর রহিমের লাশ কেড়ে নেয়ার অপেক্ষায় ওঁৎপেতে বসে রয়েছে। এলাকাবাসী জানিয়েছে, সেখানে কোন পুলিশ নেই। ঘটনার দিন ৮ জুন শুক্রবার সকালে পুলিশ ঘটনাস্থলে গেলেও বাবুল বাহিনীর নেতা বাবুলের বাড়ীতে খাওয়া দাওয়া করে বাবুলের নিজস্ব স্পীড বোট দিয়ে আবার রায়পুরা থানায় চলে আসে। এরপর তারা আর এলাকায় যায়নি। আব্দুর রহিমের মৃত্যুর খবরের পরও পুলিশ সৃষ্ট উত্তেজনা প্রশমনে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না। এলাকার লোকজন জানিয়েছে, বাবুল বাহিনীর নেতা বাবুল মিয়া রায়পুরার এমপি সাবেক মন্ত্রী রাজিউদ্দিন রাজুর সমর্থক বিধায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে কোন আইনী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সাহস পাচ্ছে না। বাবুল বাহিনীর নেতা বাবুল মিয়া প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে তার পেছনে এমপি রাজুর সমর্থন রয়েছে। ১০টি খুন করলেও পুলিশ তাকে কিছুই করতে পারবে না। এমপি রাজুর দোহাই দিয়ে বাবুল বাহিনী এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। এদিকে জিলানীর সমর্থকরা জানিয়েছে আব্দুর রহিমের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে এলাকায় নিতে সাহস পাচ্ছে না। সেখানে গেলেই তারা আব্দুর রহিমের লাশ কেড়ে নিবে এবং লোকজনকে মারধোর করবে। সেখানে আরো রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটার আশংকা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।