পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জঙ্গি দমনে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে বলেছেন, তার সরকার এই দানবকে নির্মূল করতে অতিকঠোর ব্যবস্থা নেবে। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ নির্মূলে প্রয়োজনে আমরা অতিকঠোর অবস্থান নেবো। আমাদের অবশ্যই প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি মনুষ্য দানবদের বিরুদ্ধেও লড়াই করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল রোববার তার কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীন বাস্তবায়নাধীন প্রকল্পগুলোর পর্যালোচনাকালে জঙ্গি দমনে সরকারের কঠোরতর অবস্থান গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
শেখ হাসিনা বলেন, তিনি জনগণের আস্থার সঙ্গে জনগণের সাথে থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। এ জন্য সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ ছড়িয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করা যাবে না এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচারও বন্ধ করা যাবে না। কারণ, জনগণ সবসময় এই দুই দানবের বিরুদ্ধে রয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদের ব্যাপারে সব সময় সজাগ থাকার আহবান জানান। তিনি বলেন, জঙ্গিবাদ সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের জনগণকে সতর্ক করতে হবে এবং সামাজিক এই দুষ্কর্মকে মোকাবেলার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ মোকাবেলায় ইউনিয়ন, উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠনের আহবান জানিয়ে বলেন, এই অপরাধীদের বিরুদ্ধে মসজিদ থেকে নিয়মিতভাবে বক্তব্য দিতে হবে।
গুলশানের রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু দেশে এখন এ ধরনের হামলা হচ্ছে। এটা এখন বৈশ্বিক সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, বেলজিয়াম, জাপান, ভারত ও অন্যান্য দেশে জঙ্গি হামলা সংঘটনের কথা উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জঙ্গিবাদের লাগাম টানতে সবাই ঐক্যবদ্ধ। আমেরিকাতেও কিছুদিন আগে একই ঘটনা ঘটলো। এখন দেখা যাচ্ছে যারা এসব তৈরি করেছিলো তারাই এখন লাগাম টানতে চাইছে। কেননা হামলা তাদের উপরও আসছে।
জঙ্গিবাদ রোধে সবাইকে আরো বেশি সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবার জঙ্গিবাদ বপন হলে তা আর রোধ করা যায়না। বিস্তৃত হতেই থাকে। গত কয়েকদিন আগে যে ঘটনাটি ঘটলো তা এদেশে প্রথম। প্রত্যেকটা ধর্মের মানুষের উপর যেমন মসজিদ, মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডায় এর আগে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। তারপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকের উপর হামলা করা হলো। তবে এমন ঘটনার ক্ষেত্রে এভাবে হামলাকারীদের শেষ করা এবং জিম্মিকে উদ্ধার করার ঘটনা আর কোনো দেশেই হয়নি। গুলশান হামলার ঘটনায় নিহতদের সবাই বন্ধুপ্রতীম দেশের নাগরিক। দেশে এই ধরনের ঘটনা অত্যন্ত দুখজনক। সেক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও ভালো কাজ করেছে।
শোলাকিয়ার হামলার কথা টেনে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, শোলাকিয়ার আগেই আমি সতর্ক করেছিলাম যে এটা দেশের সবথেকে বড় জামাত। সেখানে হামলা হতে পারে। সেখানেও ২ পুলিশ মারা যায়। কারা এর পেছনে ছিলো সেটাও গোয়েন্দা সংস্থা বের করে ফেলেছে। আমি অবাক হলাম যে, এরা কোন ধরনের মুসলমান যে এশার নামাজের পর তারাবি না পড়ে গেলো মানুষ খুন করতে। ঈদের দিন নামাজ না পড়ে নামাজ যারা পড়ছে তাদের উপর হামলা করতে গেলো।
এই ঘটনার পরে মিডিয়ার উপরও ক্ষোভ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের কিছু মিডিয়া আছে। তারা নানান রকম জ্ঞান বিতরণ করে যাচ্ছে। যারা এসব কথা বলে বেড়াচ্ছে আমার মনে হয় তাদের মনের আশা পূরণ হয়নি। তারা চায় এ ধরনের ঘটনা আরো ঘটুক। অবশ্যই আমি যেভাবে নির্দেশ দিয়েছি সেভাবেই কাজ করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বাহবা না দিয়ে তাদের দুর্বলতা প্রকাশ করার চেষ্টা কেন করছে তা আমরা দেখতে চাই।
দেশের স্বার্থে কিছু করণীয় সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জানান, দেশে এসব নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রাইভেট সেক্টরে অনেক কোম্পানি আছে তাদের সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে হবে। আমরা মনে করি উচ্চশিক্ষিত পরিবারের ছেলেমেয়েদের অনেক বড় মন হবে কিন্তু তারা যে ধর্মান্ধ হয়ে যাবে সেটা কেউই ভাবেনি। বাংলাদেশের মানুষ ধর্মভীরু কিন্তু ধর্মান্ধ নয়, কখনোই ছিলো না। এব্যাপারেও আমাদের সবার সচেতন হওয়া উচিত।
প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, কেউ গুম হলেই সবাই সরকারকে দায়ী করে। কেউ কেউ যে স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছে। সেসবের ব্যাপারে কোনো রকম তথ্য দিতে এসব প্রতিষ্ঠান কেন ব্যর্থ হচ্ছে? যারা নিজেরা নিজেরা হারিয়ে যাচ্ছে তাদের ব্যাপারে এসব তথ্যাদি নেই। আমরা চাই এরপর থেকে প্রত্যেকটা স্কুল-বিশ্ববিদ্যালয়ে কতজন কতদিন অনুপস্থিত আছে তা নিশ্চিত করা। কারা তাদের বিপথে নিয়ে গেলো তা খুঁজে বের করা দরকার সবার আগে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।