Inqilab Logo

মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আদালতপাড়ায় তোলপাড়

আউয়াল দম্পতির জামিন কেলেঙ্কারি

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৫ মার্চ, ২০২০, ১২:০০ এএম

পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল মান্নানকে প্রত্যাহারের (স্ট্যান্ড রিলিজড) ঘটনায় আদালতপাড়ায় তোলপাড় চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক এমপি কেএমএ আউয়াল, তার স্ত্রী লায়লা পারভীনের জামিন আবেদন খারিজ করে দেয়ার পর মঙ্গলবার তাকে তাৎক্ষণিকভাবে প্রত্যাহার করে নেয়া হয় এ বিচারককে। খারিজাদেশের ৪ ঘণ্টার ব্যবধানে পিরোজপুর দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বিচারক নাহিদ নাসরিন তাকে জামিন দেন। এ ঘটনায় মঙ্গলবার থেকেই গণমাধ্যম, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচার বিভাগের ওপর সরকারের হস্তক্ষেপের সমালোচনা চলতে থাকে। এ প্রসঙ্গে ওইদিন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক নিজেকে ‘নিরপেক্ষ’ বলে দাবি করেন। তবে গতকাল বুধবার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জেলা জজ মো. আবদুল মান্নানের বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। কেএমএ আউয়ালের পক্ষে সাফাই গান।
অন্যদিকে স্ট্যান্ড রিলিজড কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- এই মর্মে স্ব-প্রণোদিত হয়ে রুল জারি করা হয়েছে। এর আগে বিষয়টির ওপর স্ব-প্রণোদিত হয়ে রুল জারির আবেদন দিয়ে একাধিক বেঞ্চে ধর্না দিয়েছেন আইনজীবীরা। এছাড়া সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন এ জামিন কেলেঙ্কারির ঘটনায় আইনমন্ত্রী এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের পদত্যাগ দাবি করেছেন। সব মিলিয়ে দুদকের মামলায় আওয়ামী লীগ নেতা কেএমএ আউয়াল দম্পতির জামিনকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার সংঘটতি ঘটনাপ্রবাহ ছিল আইন ও বিচারাঙ্গনের আলোচনার বিষয়।
আইনমন্ত্রীর সাফাই আ’লীগ নেতার পক্ষে : পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল মান্নান রূঢ় ও অশালীন আচরণ করায় তাকে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। গতকাল সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আবদুল মান্নান অত্যন্ত রূঢ় ও অশালীন আচরণ করেছেন। তাই তাকে প্রত্যাহার (স্ট্যান্ড রিলিজ) করা হয়েছে। পাশাপাশি উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম এ আউয়াল এবং তার স্ত্রী লায়লা পারভীনকে জামিন দেয়া হয়েছে। আইনমন্ত্রী বলেন, ওই ঘটনায় বারের সকলে আদালত বর্জন করার সিদ্ধান্ত নেন। এই পরিস্থিতিতে গন্ডগোল চলছিল। রাস্তায় লোকজন বেরিয়ে পড়েছিল। সেটাকে কন্ট্রোল করার জন্য বিচারককে স্ট্যান্ড রিলিজ করে আদেশ দেয়া হয় আইন মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবে। জামিন দেয়া না দেয়া সম্পূর্ণ আদালতের এখতিয়ার। কিন্তু আদালত যদি এমন ব্যবহার করে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি করেন, যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা ও আইনের শাসন রক্ষা প্রশ্ববিদ্ধ হয়, তখন একটা ব্যবস্থা নিতে হয়। সেই অবস্থার আলোকে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। আনিসুল হক বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তার স্ত্রীকে জামিন দেয়া হয়। আমি মনে করি এখানে আইনের শাসনের কোনও ব্যত্যয় হয়নি।
আনিসুল হক জানান, দুদকের আইনজীবীরা এই ঘটনাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করেছেন। জামিন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমি নিরপেক্ষ থাকতে চাই, যতক্ষণ না পুরো তথ্য আমার কাছে আসে। পুরো ঘটনার তদন্ত করা হবে। যে তথ্য পাওয়া গেছে, বারের রেজুলেশন আছে, তাতে জেলা জজ যে ব্যবহার করেছেন সেটা সমীচীন হয়নি।
আগের দিন মঙ্গলবার দুপুর পৌনে ১২টার দিকে পিরোজপুর জেলা জজ আদালতে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লা পারভীন জামিনের আবেদন করেন। বিচারক আবদুল মান্নান জামিন নামঞ্জুর করে আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এ ঘটনার ৪ ঘণ্টার মাথায় বিকেল চারটার দিকে পিরোজপুরের দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা জজ আদালতের বিচারক নাহিদ নাসরিনের আদালতে জামিন বাতিলের আদেশ পুনর্বিবেচনার জন্য আবেদন জানালে বিচারক আউয়াল দম্পতির জামিন মঞ্জুর করেন। এরপরই জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুল মান্নানকে প্রত্যাহার করা হয়।
দুদক সূত্র জানায়, দুর্নীতির অভিযোগে পিরোজপুর-১ (পিরোজপুর-নাজিরপুর-নেছারাবাদ উপজেলা) আসনের সাবেক এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আউয়াল ও তার স্ত্রী পিরোজপু জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি লায়লা পারভীনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর দুদক উপ-পরিচালক মো. আলী আকবর বাদী হয়ে পৃথক তিনটি মামলা করেন। মামলাগুলোর মধ্যে একটিতে আউয়াল ও তার স্ত্রী লায়লাকে আসামি করা হয়েছে। বাকি দুটিতে এককভাবে আসামি করা হয়েছে আউয়ালকে। মামলা দায়েরের পর তারা গত ৭ জানুয়ারি হাইকোর্টে হাজির হয়ে জামিনের আবেদন জানালে একটি বেঞ্চ তাদের ৮ সপ্তাহের আগাম জামিন দেন। সেই মেয়াদ শেষ হওয়ায় ৩ মার্চ পিরোজপুরের জেলা জজ আদালত থেকে তারা আবারও জামিন পেলেন।
অবশেষে হাইকোর্টের রুল :
পিরোজপুর জেলা জজ আবদুল মান্নানকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ হবে নাÑ এই মর্মে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। গতকাল বুধবার বিচারপতি উল হাকিম এবং বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের ডিভিশন বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এ রুল জারি করেন। আগামী ১১ মার্চের মধ্যে আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বিচারক প্রত্যাহার সংক্রান্ত কয়েকটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের দৃষ্টিতে আনেন সুপ্রিম কোর্ট বারের অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ। আবেদনে তিনি বলেন, মন্ত্রণালয়ের এই ধরণের সিদ্ধান্ত বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ মাসদার হোসেন মামলার রায়ের পরিপন্থী। সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এটি বিচার বিভাগের ওপর নির্বাহী বিভাগের সরাসরি হস্তক্ষেপের সামিল। তিনি বলেন, পিরোজপুরে সাবেক এমপি এ কে এম এ আউয়াল ও তার স্ত্রীর জামিন নামঞ্জুরের পরে বিচারক প্রত্যাহার করাকে কেন অবৈধ ও বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। শুনানির সময় সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এএফ হাসান আরিফের মতামত নেন আদালত। মতামতে তিনি বলেন, বিষয়টি (পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ আদালতের প্রত্যাহার) নিয়ম মেনে হয়েছে কি না পরীক্ষা করে দেখতে পারেন আদালত।
পরে স্ব-প্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। এ সময় সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত দাসগুপ্ত উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া গতকাল সকালে হাইকোর্টের কয়েকটি বেঞ্চে বিষয়টি নিয়ে যান ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমনসহ বেশ কয়েকজন আইনজীবী। এ সময় আদালত বিষয়টি নিয়ে প্রধান বিচারপতির কাছে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলমের দৃষ্টিতে আনেন। আদালত রিট করার পরামর্শ দিয়ে আবেদনটি গ্রহণ করেননি। এ সময় সায়েদুল হক সুমন বলেন, চার ঘণ্টার মধ্যে জেলা জজকে স্ট্যান্ড রিলিজ করা। রিলিজ করে তার অধীনস্থ একজন যুগ্ম জেলা জজকে দায়িত্ব দেয়া হয়। কিন্তু সারাদেশে যারা জেলা জজ আছেন তারা মানসিকভাবে কী চিন্তা করছেন? আমি বলেছি, প্রধানমন্ত্রী যে চেষ্টাটা করে যাচ্ছেন যে, বিচার বিভাগের স্বাধীনতার জন্য যতটুকু পারা যায়, চেষ্টাটার মধ্যে এটা কি একটা বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে না? এটা সরকারকে কি বিব্রত করছে না? আমি বলেছি এটা আপনারা (হাইকোর্ট) ইন্টারফেয়ার (হস্তক্ষেপ) করলে করতে পারেন। তখন তিনি (আদালত) রিট করার পরামর্শ দেন। এদিকে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম এবং বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের ডিভিশন বেঞ্চে বিষয়টি নজরে আনেন অ্যাডভোকেট মুহাম্মদ শিশির মুনির ও ব্যারিস্টার আব্দুল কাইয়ুম লিটন। এ এ সময় আদালত বলেন, এটি প্রধান বিচারপতির নজরে আনেন। কী হয়েছে আমরা জানি না। প্রধান বিচারপতি জিএ (জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) কমিটির প্রধান।
আইনমন্ত্রী ও দুদক চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি :
এদিকে বিচার বিভাগের ওপর সরাসরি হস্তক্ষেপ আখ্যা দিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের পদত্যাগ চেয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট বারের সম্পাদক ও বিএনপি নেতা ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন। বার ভবনের শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে ‘পিরোজপুরে সরকারি দলের সাবেক এক সংসদ সদস্যের জামিন কেলেঙ্কারি ও তাৎক্ষণিক বিচারকের বদলি’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে তিনি তাদের পদত্যাগ দাবি করেন। ব্যারিস্টার খোকন বলেন, ওই ঘটনা স্বাধীন বিচার বিভাগের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপের শামিল। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক অযাচিতভাবে আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক এমপির জামিন নিশ্চিত করার জন্য পিরোজপুরের জেলা ও দায়রা জজ মো. আব্দুল মান্নানকে বদলি করেন। এ বদলিতে সুপ্রিম কোর্টের অনুমতির তোয়াক্কা করা হয়নি। ওই জামিন-কলেঙ্কারি বিচার বিভাগের ওপর দেশের সাধারণ জনগণের আস্থা নষ্ট করেছে। বিচার বিভাগের ভাবমর্যাদা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে দেশবাসী মনে করছে যে, সরকারের নির্দেশে যেকোনও ব্যক্তির জামিন হতে পারে, বা সরকার চাইলে আদালতের মাধ্যমে বাতিল করতে পারে। জামিন কেলেঙ্কারির এই ঘটনার জন্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এবং দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের অবিলম্বে পদত্যাগের দাবি জানাচ্ছি। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্তে বিচার বিভাগীয় কমিটি করারও দাবি জানান ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন।



 

Show all comments
  • Mohammad Sabooj ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০২ এএম says : 0
    কিসের আইন কিসের আদালত জোর যার মুল্লুক তার চলছে চলবে..
    Total Reply(0) Reply
  • Khandaker Abid Tarique ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০২ এএম says : 0
    আইন মন্ত্রী আদালত ও বিচারকের বিচবরের অবমাননা করেছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • Md Akram Ashrafi ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০২ এএম says : 0
    আজব এক দেশে আছি যার ব্যাখ্যা আমাদের আইন মন্ত্রী সাহেব দিলেন ক্ষমাতা জোরে হয়েছে
    Total Reply(0) Reply
  • Hasan Jewel ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৩ এএম says : 0
    Honorable PM. Please take action against law Minister. Please.
    Total Reply(0) Reply
  • Shahjahan Nizamee ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৩ এএম says : 0
    Our concern ministry learn from indian law ministry or India learn lesson from us. They transfer a judge during Delhi riot over night.
    Total Reply(0) Reply
  • Badal Ahamad ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৩ এএম says : 0
    It's really unfortunate for our nation, where people go for justice ?
    Total Reply(0) Reply
  • Sk Md Bahar Ullah ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৪ এএম says : 0
    আমাদের অবশিষ্ট বলতে কিছু ই থাকলো না। সবই ধ্বংস করে দেয়া হলো। এসবের দায় কে নিবে!
    Total Reply(0) Reply
  • Shahid Alam ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৪ এএম says : 0
    চোর কে শাস্তি দিতে গেলে অসদাচরণ, কি নীতি এদের , একদম stand release, বিচার বিভাগ নাকি স্বাধীন
    Total Reply(0) Reply
  • Shuva Das ৫ মার্চ, ২০২০, ২:০৪ এএম says : 0
    যেখানে একজন জজ এর সিকিউরিটি নাই। সেখানে সাধারণ মানুষের কী ধাকবে।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আদালতপাড়া

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ