পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
নদী দখল করে ক্ষমতাসিন আওয়ামী লীগ নেতা আসলামুল হক এমপি অবৈধভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছেন। নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযানের অংশ হিসেবে অবৈধ দখল উচ্ছেদ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ )। অভিযানে সরকার দলীয় এমপির বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের প্রায় পাঁচ একর জায়গা উচ্ছেদ করা হয়েছে। এ সময় বিআইডব্লিউটিএ ম্যাজিন্টেট মাইশা পাওয়ার প্লান্ট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির মালিক ঢাকা-১৪ আসনের এমপি আসলামুল হকের বাধার মুখে পড়েন।
উচ্ছেদে বাধা দিয়ে হুমকির সুরে আসলামুল হক এমপি বলেন, আমি আইনে যাব। আমি কি এভাবে ছেড়ে দেব নাকি? অন্যায়ভাবে স্থাপনা ভাঙ্গা হচ্ছে? আবার সীমানার বাইরে থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রেটিকে নদীর জায়গা আখ্যা দিয়ে সেখানে উচ্ছেদ পরিচালনা করা হচ্ছে দাবি করেন তিনি। তবে অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান হাকীম বলেন, নিয়ম মেনেই অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ সূত্র জানায়, এখনো সাড়ে তিন একর জমি সরকারি দলের এমপি আসলামের দখলে রয়েছে।
নদীর জমি উদ্ধার অভিযানের অংশ হিসেবে গতকাল মঙ্গলবার বুড়িগঙ্গা নদীর চর ওয়াশপুর এলাকায় অবস্থিত মাইশা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির অবৈধ অংশটি ভেঙ্গে ফেলা হয়। অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হাবিবুর রহমান হাকীম ইনকিলাবকে বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির উত্তর-পশ্চিমে ২৫০ ফুট ও দক্ষিণ-পশ্চিমে এক হাজার ফুট জায়গাসহ মোট পাঁচ একর জায়গা উদ্ধারে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। অভিযানে বাধা দেয়ার অভিযোগে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তির নাম মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি মাইশা গ্রুপের সমন্বয়ক। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন সরকারি দলের এমপি আসলামুল হক। তিনি উচ্ছেদ অভিযান ঠেকাতে বিআইডব্লিউটিএ›র কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি তার স্থাপনা বৈধ বলে দাবি করেন। আসলামের দাবি, আদলত এবং নদী কমিশন যে যৌথ জরিপ করেছে তাতে তার স্থাপনা অবৈধ হওয়ার কোনো প্রমাণ নেই।
এ সময় আসলামুল হক বলেন, আমি আইনে যাব। আমি কি এভাবে ছেড়ে দেব নাকি? আপনি অন্যায়ভাবে ভাঙ্গবেন, এই ধরনের স্থাপনা ভেঙ্গে দেবেন, আমাকে নোটিশ করবেন না? আমি তো বিআইডব্লিউটিএ’র অনুমতি নিয়েই স্থাপনা নির্মাণ করেছি।
উচ্ছেদের আগে সীমানা নির্ধারণ করে বিআইডব্লিউটিএ । সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রেটির বাইরে সীমানা খুঁটি স্থাপন করা হয়েছে। আবার সীমানার বাইরে থাকা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রেটিকে নদীর জায়গা আখ্যা দিয়ে সেখানে উচ্ছেদ পরিচালনা করা হচ্ছে দাবি করেছেন এমপি আসলামুল হক। আইনগতভাবে বিষয়টি মোকাবেলার কথা জানিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন তিনি।
এদিকে পাওয়ার প্লান্টের পাশ ঘেঁষে যে সীমানা খুঁটিটি স্থাপন করা হয়েছে, তা নির্দেশ করে পাওয়ার প্লান্টটি নদীর সীমানার বাইরে। বিষয়টি খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছেন সংস্থাটির যুগ্ম পরিচালক (ঢাকা নদী বন্দর) এ কে এম আরিফ উদ্দিন। সীমানা পুননির্ধারণ এবং প্রয়োজনে সীমানা খুঁটি পুনস্থাপন করা হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এই জায়গার জন্য ২০০৫ সালে আনাপত্তিপত্র ছিল। আদালতের রায় ২০০৯ সালে। এরপর তারা আবেদন করেছে। কিন্তু আমরা অনুমতি দিইনি। বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রটির উত্তর পাশে নদীতে একটি জেটি নির্মাণ করা হয়েছিল। যার মাধ্যমে পাওয়ার প্লান্টটিতে জ্বালানি তেল সরবরাহ করা হতো। নদীতে অবৈধভাবে গড়ে তোলা এই জেটিটিও অভিযানকালে ভেঙ্গে দেয়া হয়।
মাইশা পাওয়ার প্লান্ট মালিকের দাবি, জেটি স্থাপনের জন্য বিআইডব্লিউটিএ ’র অনুমতি নেয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ বলছে, জেটি স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে একাধিকবার বিআইডব্লিউটিএ’র কাছে আবেদন করা হলেও সংস্থাটি সে অনুমতি দেয়নি।
মাইশা পাওয়ার প্লান্ট কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের স্থাপনাটি নদীর সীমানার বাইরে। এমন ছাড়পত্র খোদ বিআইডব্লিউটিএ তাদের দিয়েছে। ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট সংস্থাটির তৎকালীন উপ-পরিচালক (বন্দর) মো. সুলতান আহম্মদ স্বাক্ষরিত ঢাকা ওয়াস্ট পাওয়ার প্লান্ট, ওয়াসপুর, বছিলা, কেরানীগঞ্জ, ঢাকা নামক প্রকল্প সম্পর্কে প্রতিবেদক প্রকাশ করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, প্রকল্পটি বুড়িগঙ্গা নদীর তীর সংলগ্ন এলাকায় হলেও কর্তৃপক্ষের ফোরশোর সীমানা অর্থাৎ বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানার বাইরে অবস্থিত।
সূত্র জানা গেছে, পাওয়ার প্লান্টটি নির্মাণের সময় দক্ষিণ পাশে চর ওয়াসপুর গ্রামের অনেক মালিকানা জমি মাইশা গ্রুপ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। যার ওপর পাওয়ার প্লান্টটি স্থাপন করা হয়েছে। জমি কিনে নেয়ার কথা থাকলেও এক যুগের বেশি সময় পার হয়ে গেলেও অনেক জমি মালিক তাদের টাকা বুঝে পাননি বলে স্থানীয়ভাবে ঢাকা জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে অভিযোগ রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।