পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গতকাল বাদ ফজর মহান আল্লাহর দরবারে মুসলিম উম্মাহর নাজাত কামনা করে অশ্রুসিক্ত নয়নে আখেরি মুনাজাতের মাধ্যমে কুমিল্লা সোনাকান্দা দারুল হুদা দরবার শরীফের ২ দিনব্যাপী বাৎসরিক ইছালে ছাওয়াব মাহফিলের কার্যক্রম সম্পন্ন হয়েছে। গত শুক্রবার জুমার নামাজের সময়েই দরবারের ১, ২ ও ৩ নম্বর মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। সন্ধ্যার আগেই আশপাশের ফসলী মাঠ, রাস্তাঘাট ও দোকানপাটসহ কোথাও তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না।
বাদ মাগরিব ৬ রাকাআত সালাতুল আউয়্যাবিন সালাত আদায় করে দরবারের পীর ও বাংলাদেশ তা’লিমে হিযবুল্লাহ’র আমীর প্রিন্সিপাল শাহসূফি হযরত মাওলানা মাহমুদুর রহমান জিকিরের তা’লীম শুরু করেন। তা’লীম শেষে পীর সাহেব মাহফিলে আগত অনাগত সকল মুসলিম উম্মাহকে লক্ষ্য করে নসিহত পেশ করেন। তিনি তার নসীহতে বলেন, আমল থেকে আমাদের মুসলিম উম্মাহর বিচ্যুতিই বর্তমান এই দুর্দশার মূল কারণ। আমরা অনেকেই পারস্পরিক মতপার্থক্যকে কেন্দ্র করে এমন মতবিরোধে লিপ্ত হয়ে পড়ছি যা দেখে কাফির মুশরিকরা আমাদের ওপর হামলে পড়ছে। শুরু থেকেই মতপার্থক্য ছিল, আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। কিন্তু এ নিয়ে মতবিরোধে লিপ্ত হয়ে উম্মাহর ক্ষতি করা হারাম। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্যের সন্তুষ্টি তালাশে ব্যস্ত থাকায় দ্বীন ইসলামের প্রতি আমাদের আন্তরিকতা ও মহব্বত কমে যাচ্ছে।
একমাত্র মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি ব্যতীত অন্যের সন্তুষ্টির জন্য কোন চিন্তা, কথা ও কাজ করলে তাতে কোন বরকত থাকে না। মহান আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য কাজ করতে গেলে দেহ ও মনে যেই শক্তি পাওয়া যায় অন্য কোন উদ্দেশে তা হয় না। মনুষ্যত্ব ও মানবতার প্রতি খন্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি পৃথিবীতে প্রচলিত কোন ধর্মই সমর্থন করে না। ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে সকল মানুষকেই খন্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে মানবতার ধর্মে উজ্জীবিত হতে হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের সরকার ও রাষ্ট্র প্রধানকে এই খন্ডিত দৃষ্টিভঙ্গি পরিহার করে মানবতার মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে মুসলমান ভাইবোনদেরকে শান্তি ও সম্প্রীতির সাথে বসবাস করার সুযোগদানের আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ তা’লিমে হিযবুল্লাহ’র মহাসচিব মাওলানা মোতালেব হোসাইন সালেহীর সঞ্চালনায় মাহফিলে কিংবদন্তি ওয়ায়েজ মাওলানা মীর হাবিবুর রহমান যুক্তিবাদী বলেন, এই বিশ্বে শান্তি স্থাপনের জন্য রাহমাতুল্লীল আলামীন নবী মুহম্মাদ (সা.) এর আদর্শের আর কোন বিকল্প নেই। বাংলাদেশ তা’লিমে হিযবুল্লাহ’র সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফাসসির মাওলানা বেলাল হোসাইন দেহ-মন ও সমাজে শান্তি, রহমত, বরকত ধারা অব্যাহত রাখতে হালাল ও হারামের গুরুত্ব, সুফল ও কুফল তুলে ধরেন। অর্থ সম্পাদক মাওলানা আবুবকর রাহমানী মানব জাতির নফসের পরিশুদ্ধতার গুরুত্ব বিষয়ে কথা বলেন। মুফতী শাহ আলম সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজ থেকে বিরত থাকার প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন। মুফতী মাওলানা দেলোয়ার হোসেন আজিজী বর্তমান যুবসমাজের নৈতিক চরিত্রে আকাশ সংস্কৃতির মারাত্বক কুপ্রভাবগুলো তুলে ধরেন।
আখেরি মুনাজাতে মুরিদ, মুতাকিদ, আশেক্বীন, মুহিব্বীনদের চোখের পানিতে বুক ভেসে যায়। সারা বিশ্বব্যাপী মুসলিম ভাইবোনদের দু:খ-দুর্দশার কথা স্মরণ করে মহান আল্লাহর দরবারে মুনাজাতে কান্নার রোল পড়ে যায়। জান্নাতী আমেজ ও ইমেজ লক্ষ করা যায় সর্বত্র। পরিশেষে মাহফিলে আগত সবাই যাতে সহীহ সালামতে নিজ নিজ ঘরে ফিরে যেতে পারেন এ জন্য সুরা ফাতিহা পাঠের মাধ্যমে বিশেষ দোয়া করেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।