Inqilab Logo

শক্রবার ০৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ কার্তিক ১৪৩১, ০৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকার মাদক বিরোধী আইন বাস্তবায়নে ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে : তথ্যমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১০:০১ পিএম

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার মাদক বিরোধী আইন বাস্তবায়নে ‘জিরো-টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িতরাসহ ইয়াবা সেবনকারি, মাদক পাচারকারি, মাদক বিক্রেতা ও মাদক সেবনকারি-সবার বিরুদ্ধেই মাদক বিরোধী আইনের প্রয়োগ করা হচ্ছে।

তথ্যমন্ত্রী শনিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম জমিয়তুল ফালাহ মাঠে আঞ্জুমানে রজভীয়া নুরিয়া ট্রাস্ট আয়োজিত ‘যৌতুক, মাদক ও নারী নির্যাতন বিরোধী’ এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

ড. হাছান বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কে কোন দলের, কোন মতের, কোন পথের সেটি দেখছে না, দেখা হবেও না। দলমত নির্বিশেষে যারা এটির সাথে যুক্ত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে এবং হচ্ছে।

আঞ্জুমানে রজভীয়া নুরিয়া ট্রাস্টের চেয়ারম্যান আল্লামা আবুল কাশেম নূরী’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশের উদ্বোধন করেন সৈয়দ সাইফুদ্দিন আহমেদ আল হাছানী। অন্যান্যের মধ্যে ড. নূ. ক. ম আকবর হোসেন, আলহাজ্ব নুরুল হক, মাছুমুর রশীদ কাদেরী, জাহিদুল হাসান রুবায়েত ও মাওলানা আবুল হাসান ওমাইর রজভী সমাবেশে বক্তৃতা করেন।

ড. হাছান বলেন, মাদক এমন একটি বিষ সেটির কারণে শুধুমাত্র যারা মাদক সেবী তার জীবনটা ধ্বংস হয় তা নয়, পুরো পরিবারটা ধ্বংস হয়ে যায়। মাদকাসক্ত অনেক সন্তানের হাতে মা-বাবা ও স্বামীর হাতে স্ত্রী হত্যার স্বীকার হয়েছেন, এমনকি মাদকাসক্ত পিতার কাছে নিজের সন্তান পর্যন্ত নিরাপদ নয়। মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে সন্তানকে পর্যন্ত বিক্রি করে দিয়েছে এমন নজিরও রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন,এই অভিশাপ থেকে সমাজকে পরিপূর্ণভাবে মুক্ত করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে আঞ্জুমানে রজভীয়া নুরিয়ার চেয়ারম্যান আল্লামা আবুল কাশেম নূরী’র যৌতুক ও মাদক বিরোধী যে আন্দোলন, তা মাদক ও যৌতুকের বিরুদ্ধে সরকারীভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে সহায়ক ভূমিকা রাখবে বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

যৌতুক বিরোধী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে ড. হাছান বলেন, এসব আন্দোলন ও সরকার যে যৌতুক বিরোধী আইন করেছে তার কারণে যৌতুক এখন অনেক কমে গেছে। আজ থেকে ৩০/৪০ বছর আগে যৌতুকের জন্য দেনদরবার হত। এখন কিন্তু সেটা আর হয়না। তবে বিয়ের বর যাত্রী কত হয় সেটা নিয়ে এখন আলোচনা হয়। তিনি বলেন, অনেক বৃদ্ধা বাবা-মা মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার জন্য সাহায্যের আবেদন নিয়ে বিভিন্ন জনের কাছে যায়। এটি হওয়া উচিয় নয়।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এভাবে বিয়ে করলে জীবনে সুখী হওয়া যায় কিনা সেটা আমার কাছে বোধগম্য নয়। মেয়ের পিতাকে পাথরের উপর পাথরের বোঝা চাপিয়ে দিয়ে ওই মেয়েকে জীবন-সঙ্গী করে জীবনে সুখী হওয়া যাবে না। এজন্য আবুল কাশেম নূরীর আন্দোলনকে আমি সমর্থন জানাই। আমি বিশ্বাস করি এ ধরণের আন্দোলনের মাধ্যমে দেশকে মাদক ও যৌতুক মুক্ত করতে পারবো। সরকার যৌতুক বিরোধী আইন করেছে, বাল্যবিবাহ বিরোধী আইন আছে। এবং এই আইনগুলো যদি সঠিক প্রয়োগ হয়, তাহলে আমি বিশ্বাস করি বাংলাদেশ যৌতুক ও মাদক মুক্ত হবে। মানুষ এখন যেমন যৌতুক দাবি করতে লজ্জা পায়, তখন গোপনে যৌতুক নিতেও সাহস করবে না।’ তিনি বলেন,‘যেই ছেলে ১০ বছর আগে বিদেশ গেছে সে এখন এসে তার গ্রাম চিনতে পারেনা, শহরও চিনতে পারে। আমার নিজের গ্রামেও ১০ বছর আগে বিদ্যুৎ ছিলনা। সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে ১০ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে গিয়েছি। কিন্তু এখন সেখানে সব বাড়ির আঙ্গিণায় গাড়ি যায়। যেখানে রাস্তা কেউ কখনও কল্পনা করেনি সেখানে পাকা রাস্তা হয়েছে। এটি সারা বাংলাদেশের চিত্র।’
ড. হাছান বলেন, এই উন্নয়নের সাথে মানুষের আত্ত্বিক ও আত্মার উন্নয়ন প্রয়োজন। তাহলেই দেশটাকে সত্যিকার অর্থে একটি উন্নত দেশে রূপান্তর করা যাবে।

তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ক্ষেত্রে পৃথিবীর কাছে উদাহরণ।
সাম্প্রদায়িক সম্প্রতির ক্ষেত্রে আমরা যে উদাহারণ সৃষ্টি করেছি তা অনেক দেশ আমাদের কাছ থেকে শিখতে পারে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ দেশের স্বপ্নের ঠিকানায় পৌছে দিতে পারবো।’

সূত্র: বাসস



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: তথ্যমন্ত্রী


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ