Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বাকি এক হাজার কোটি টাকা গ্রামীণ ফোন দেবে তিন মাসে

আমরা চাই বিদেশি প্রতিষ্ঠান নির্বিঘ্নে ব্যবসা করুক : সুপ্রিম কোর্ট

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১২:০৪ এএম, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২০

জরিমানার আরো ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধে গ্রামীণ ফোনকে ৩ মাস সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। গতকাল সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে গঠিত ৬ বিচারপতির আপিল বিভাগীয় বেঞ্চ এ সময় মঞ্জুর করেন। এর আগে সময় প্রার্থনা করে গ্রামীণ ফোন কর্তৃপক্ষ। এর আগে গ্রামীণ ফোন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনকে (বিটিআরসি) পাওনা বাবদ ২ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ১ হাজার কোটি টাকা ইতিমধ্যেই পরিশোধ সংক্রান্ত প্রমাণাদি আদালতে দাখিল করে। 

গতকাল বিটিআরসির পক্ষে ছিলেন ছিলেন এটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ব্যারিস্টার খন্দকার রেজা-ই-রাকিব। গ্রামীণ ফোন কর্তৃপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এ এম আমিন উদ্দিন ও মোহাম্মদ মেহেদী হাসান চৌধুরী।
আদালত থেকে বেরিয়ে অ্যাডভোকেট মেহেদী হাসান জানান, আদালতের নির্দেশে গত রোববার ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করেছে গ্রামীণফোন। অবশিষ্ট ১ হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে তিন মাস সময় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। নিরীক্ষা পাওনা দাবি নিয়ে করা মামলাটি (নিম্ন আদালতে থাকা) নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলেছেন আপিল বিভাগ। একই সঙ্গে গ্রামীণ ফোন যাতে নির্বিঘেœ ব্যবসা করতে পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিতের কথা বলেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
এরআগে আদালতে শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, আমরা চাই বিদেশি কোম্পানি এদেশে নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে ব্যবসা করুক। কিন্তু সেই ব্যবসাটা করতে হবে এদেশের সকল আইন ও নিয়মকানুন মেনে।
শুনানির শুরুতে আদালতের নির্দেশে বিটিআরসিকে রোববার পে-অর্ডারের মাধ্যমে এক হাজার কোটি টাকা দেয়ার বিষয়টি হলফনামা আকারে আদালতকে অবহিত করেন গ্রামীণ ফোনের আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন। তখন প্রধান বিচারপতি আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, বাকি টাকা কবে দেবেন? গ্রামীণ ফোনের কৌঁসুলি বলেন, আমাদের ৬ মাস সময় দিন। মোবাইল অপারেটর রবিকে ১৪০ কোটি টাকা দিতে পাঁচটি কিস্তিতে দিতে সময় দেয়া হয়েছে। তখন প্রধান বিচারপতি বলেন, টাকা দিতেই হবে। টাকা পরিশোধ না করলে হাইকোর্টের যে স্থগিতাদেশ আছে তা আমরা প্রত্যাহার করে নেব। আপনারা টাকা দিয়ে দিন আমরা বিটিআরসিকে বলে দেবো যেন আপনাদের ব্যবসা পরিচালনায় কোনো ঝামেলা না করে।
এরআগে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিমকোর্টের সাত সদস্যের বেঞ্চ ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিটিআরসিকে এক হাজার কোটি টাকা পরিশোধ করতে নির্দেশ দেন। সে অনুসারে রোববার গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল বিটিআরসিতে গিয়ে ১ হাজার কোটি টাকার পে-অর্ডার কমিশনের চেয়ারম্যান জহুরুল হকের কাছে হস্তান্তর করে। গ্রামীণফোনের কাছে নিরীক্ষা আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে বলে গত বছর দাবি করে বিটিআরসি।
একপর্যায়ে বিটিআরসির দাবি করা টাকার অঙ্ক নিয়ে আপত্তি তুলে নিম্ন আদালতে একটি টাইটেল স্যুট (স্বত্তে¡র মামলা) মামলা করে গ্রামীণফোন। মামলাটি আদালতে গৃহিত হয়। ওই টাইটেল স্যুটের অধীনেই গ্রামীণফোন বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আবেদন করে। এটি গত ২৮ আগস্ট নিম্ন আদালত খারিজ করে দেন। নিম্ন আদালতের খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে পরে হাইকোর্টে আপিল করেন গ্রামীণফোন। সেই আপিলটি শুনানির পর বিটিআরসির পাওনা আদায়ের ওপর দুই মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট।
তবে, হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগে আবেদন করে বিটিআরসি। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৪ নভেম্বর আপিল বিভাগ ৩ মাসের মধ্যে বিটিআরসিকে ২ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনের প্রতি নির্দেশ দেন। এছাড়া সুপ্রিমকোর্ট ওইদিন তার আদেশে বলেন, ২ হাজার কোটি টাকা দেয়া আদেশটি বাস্তবায়ন না হলে গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসির নিরীক্ষা দাবির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকার বিষয়ে হাইকোর্টের দেয়া নিষেধাজ্ঞার আদেশটি বাতিল হয়ে যাবে।
এরপর বিটিআরসিকে ৩ মাসের মধ্যে ২ হাজার কোটি টাকা দেয়ার আদেশটি পুনঃবিবেচনা চেয়ে ২৬ জানুয়ারি গ্রামীণফোন আপিল বিভাগে রিভিউ আবেদন করে। গত ২০ ফেব্রুয়ারিসেই রিভিউ আবেদনের শুনানি নিয়ে আপিল বিভাগ ২৪ ফেব্রুয়ারির মধ্যে বিটিআরসিকে ১ হাজার কোটি টাকা দিতে গ্রামীণফোনের প্রতি নির্দেশ দেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ