Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দুনিয়াকে আখিরাতের পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে

নেছারাবাদী হুজুর

মু. আব্দুর রশীদ, ঝালকাঠি থেকে | প্রকাশের সময় : ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২০, ১২:০০ এএম

উপমহাদেশের বজুুর্গ-ওলী, দার্শনিক ও মুজাদ্দেদ বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ হযরত মাওলানা আযীযুর রহমান কায়েদ সাহেব হুজুরের একমাত্র সাহেবজাদা আমীরুল মুসলিহীন মাওলানা খলীলুর রহমান নেছারাবাদী বলেছেন, ক্ষণিকের জন্য আমরা দুনিয়ায় এসেছি, এখানে বেশি সময় থাকা যাবে না। আল্লাহ যতটুকু সময় দিয়ে আমাদের এখানে প্রেরণ করেছেন, ঠিক ততক্ষণই দুনিয়াতে আমাদের থাকতে হবে। হাজার হাজার বছর ধরে আমাদের কবরের জগতে থাকতে হবে। এ কারনে আল্লাহর রসুল (সা.)বলেছেন, ‘এ দুনিয়ার জীবন একটা স্বপ্নের মতো, ঘুমে বিভোর থাকার মতো’। আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করেছেন, আবার আল্লাহর কাছে ফিরে যাবার জন্যই। তাই আল্লাহর সকল নির্দেশ মেনে চলতে হবে। ইসলাম শান্তির ধর্ম, মুসলমানের জীবনের লক্ষ্য একমাত্র আখিরাত, তবে দুনিয়াও পরিত্যাজ্য নয়, বরং দুনিয়াকে আখিরাতের পরিপূরক হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। রোববার বাদ ফজর নেছারাবাদী হুজুর তাঁর বয়ানে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, কলেমা তাওহীদের শিক্ষা বিচ্যুত হয়ে বিলাস ও দুর্নীতিমত্ততায় নিমজ্জিত হওয়ার ফলেই মুসলমান আজ জীবনযুদ্ধে পরাজিত হচ্ছে, অশান্তি ও বিশৃঙ্খলার আগুনে জ¦লছে।’

হুজুর আরো বলেন-‘কলেমা তাওহীদ মুমিনকে আদর্শের নিরীখে ঐক্যবদ্ধ হতে শেখায়, কলেমা তাওহীদ মুমিনকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানবজাতির প্রতি সাম্যবাদী হতে শেখায়, কলেমা তাওহীদ মুমিনকে রসূলে পাক (সা.) এর আদর্শ বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে ইনসাফ কায়েম করতে শেখায়। কলেমা তাওহীদ কোন মুমিনের হৃদয়ে অঙ্কিত হলে সে বিচ্ছিন্ন হতে পারে না বরং আল্লাহ ওয়ালাদের শান্তি-শৃঙ্খলার সঙ্গেই ঐক্যবদ্ধ হয় তার শান্তিবাদী জীবন। কলেমা তাওহীদ কোন মুমিনের হৃদয়ে অঙ্কিত হলে সে বর্ণবাদী ও সাম্প্রদায়িক হতে পারে না বরং একই স্রষ্টার সৃষ্টি হিসেবে মানুষে-মানুষে বৈষম্যমুক্ত সাম্য ও মানবতায় পরিণত হয় তার জীবন, কলেমা তাওহীদ কোন মুমিনের হৃদয়ে অঙ্কিত হলে সে রসূলে মকবুল (সা.) এর আদর্শ ও নীতি পরিপন্থী বিলাসমত্ত, স্বৈরাচারী ও দুর্নীতিবাজ হতে পারে না বরং ন্যায়-ইনসাফের মূর্ত প্রতীকে পরিণত হয় তার জীবন।’

নেছারাবাদী হুজুর বলেন-‘কলেমা তাওহীদের এ শিক্ষা অন্তরে অঙ্কিত ছিল বলেই অর্ধ পৃথিবী শাসন করতে পেরেছিলেন মুসলমান, এ শিক্ষা অঙ্কিত ছিল বলেই সাহাবায়ে কেরামের আদলে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে গণ-মানুষের হৃদয় জয় করতে পেরেছিলেন আওলিয়ায়ে কেরাম। তাই সাহাবায়ে কেরাম, তাবেঈন, তাবে-তাবেঈন, সলফে সালেহীন এবং আওলিয়ায়ে কেরাম তথা আহলে সুন্নত অল-জামায়াতের অনুসৃত পথেই অর্জিত হতে পারে কলেমা তাওহীদের এ শিক্ষা। সুতরাং কলেমা তাওহীদের শিক্ষা তথা শান্তি, ঐক্য ও ইনসাফ কায়েমে আমাদেরকে অবশ্যই আহলে সুন্নত অল জামায়াতের অনুসারী হতে হবে।’

মাহফিলে অন্যদের মধ্যে বয়ান করেন ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. আহসান উল্লাহ সাইয়্যেদ ও বাংলাদেশ জমিয়াতুল মুদার্রেছিনের মহাসচিব প্রিন্সিপাল মাওলানা সাব্বির আহম্মেদ মোমতাজি, পিএইচপি কুরআনের আলো ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান হাফেজ ক্বারী মো. আবু ইউসুফ, হযরত শামসুল হক ফরিদপুরী রহ.-এর সাহেবজাদা হাফেজ মাওলানা রুহুল আমিন সাহেব এবং হযরত নেছারাবাদী হুজুরের সাহেবজাদা ও বাংলাদেশ ফোরকানিয়া বোর্ডের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ আযীযুর রহমান তাকী (ছদর ছাহেব হুজুর)। এছাড়াও মাহফিলে সারা দেশ থেকে আগত পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরাম গুরুত্বপূর্ণ নসীহত পেশ করেন। দ্বিতীয় দিনের ওয়াজ মাহফিলে লক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মানুষ অংশ নেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ