Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঝিনাইগাতীতে ছোট হয়ে আসছে মাছের আকার

প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এস কে সাত্তার, ঝিনাইগাতী (শেরপুর) ঃ ঝিনাইগাতীতে জলবায়ুর বিরূপ প্রভাবে ছোট হয়ে আসছে মাছের আকার। শুধু যে মাছের আকারই ছোট হচ্ছে তা নয়, এর প্রভাব পড়েছে প্রকৃতির ওপর নির্ভর করে বেঁচে থাকা প্রণিকুলের ওপরেও। তবে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে মৎস্যকুলের ওপর।
ঝিনাইগাতীর ক’জন জেলে এই প্রতিবেদককে জানান, ক্রমেই সব মাছের আকার ছোট হয়ে আসছে। তারা এই অবস্থাকে ‘কলির কাল’ বলে মন্তব্য করলেও পরিবেশবিদদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের কারণে ক্রমেই মাছের আকার ছোট হতে শুরু করেছে। ফলে মানুষের খাদ্যের এই বিরাট উৎসটি বর্তমানে চরম হুমকির মুখে পড়েছে।
ঝিনাইগাতী উপজেলার বড় কৃষক সরোয়ার্দী দুদু মন্ডল জানান, আজ থেকে ৩ বছর আগে তার পুকুরে ছেড়ে দেয়া মাছ যতটুকু পোনা ছাড়া হয়, প্রায় তাই রয়ে গেছে। বড়ই হয়নি। এতে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছেন। এক একরের পুকুর তার।
অপর দিকে ব্রিটেনের বায়োলজি লেটার নামের রয়্যাল সোসাইটির জার্নালে তাদের গবেষণায় ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে মাছের আকার ছোট হয়ে আসছে এই ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে।
এর আগের গবেষণায় দেখা গেছে, কোনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ মৎস্য প্রজাতির বড় বড় মাছগুলোকে বেছে বেছে ধরা এবং খাদ্যচক্রের ওপর পরিবেশ পরিবর্তনের প্রভাবের কারণে সেসব মাছের আকৃতি ছোট হতে শুরু করে।
তবে এভাবে আকার ছোট হতে থাকলে তার প্রভাব কতটা পড়বে বা কতটা ছোট হবে সে ব্যাপরে এখনো খতিয়ে দেখা হয়নি। এই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অস্ট্রেলিয়া এবং ফিনল্যান্ডের গবেষক দল উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কম্পিউটারের সহায়তা নিচ্ছে বলে জানা যায়।
আমাদের দেশে এ সংক্রান্ত কোনো গবেষণা চলছে কিনা বা হয়েছে কিনা তা জানা না গেলেও জলবায়ু পরিবর্তণের কারণে ইতোমধ্যেই দেশের ঝিনাইগাতীতে সব ধরনের মাছের আকার ছোট হয়ে আসতে শুরু করেছে বলে মৎস্যচাষিরা জানিয়েছেন।
জানা যায়, উপরোল্লিখিত গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি মৎস্য প্রজাতির গড় আকার ছোট হয়ে আসতে থাকলে আগামী ৫০ বছরে তার কি প্রভাব পড়বে তাও খতিয়ে দেখছেন বিজ্ঞানীগণ। এভাবে মাছ ধরার ক্ষেত্রে তার বড় ধরনের প্রভাব পড়ছে বলে দেখতে পান এই গবেষক দল।
তারা দেখতে পান যে, চার থেকে পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ মাছের মোট জৈব ভরের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে ৩৫ শতাংশ। এই সঙ্গে মাছ ধরার পরিমাণও সমপরিমাণে হ্রাস পাচ্ছে বলে তারা খুঁজে পান।
গবেষক দলটির মতে, মাছের দেহ আকৃতি সামান্য হ্রাস পেলেও প্রাকৃতিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে তার ব্যাপক প্রভাব পড়ে। তারা আরো লিখেছেন, বিশ্বজুড়ে সাগরের পরিবেশ মানুষ বদলে দিচ্ছে। আর এই পরিবর্তন ঘটছে দুই ভাবে। মাছ ধরার মাধ্যমে সরাসরি পরিবর্তণ ঘটছে এবং বিশ্ব উষ্ণ হওয়ার মাধ্যমে।
তবে এই অবস্থা থেকে কিভাবে মৎস্যকুলকে রক্ষা করা যায় সে নিয়ে ও চালানো হচ্ছে ব্যাপক গবেষণা। গবেষক দলটি মনে করে পরিবেশের উপর মানুষের বিরূপ কার্যক্রম বিষয়ে ব্যাপক গণসচেতনতা প্রয়োজন।
বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তণের খেসারত দিতে হবে সারা বিশ্বের মানুষকেই। মৎস্যকুলের উপর নেতিবাচক প্রভাব মানবসমাজের জন্য ভয়াবহ ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঝিনাইগাতীতে ছোট হয়ে আসছে মাছের আকার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ