পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তাহরিকে খতমে নবুয়ত বাংলাদেশের আমির আল্লামা ড. এনায়েতুল্লাহ আব্বাসী বলেছেন, দ্বীন ইসলামের দাওয়াতে আল্লাহ তায়ালা যুগে যুগে নবী ও রাসূলগণকে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। নবুয়তের ধারাবাহিকতায় সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসূল হিসাবে আখেরী নবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এর আগমন ঘটে আজ থেকে প্রায় দেড় হাজার বছর আগে। ওনার আগমনের মাধ্যমে আজ থেকে দেড় হাজার বছর আগে আল্লাহ তায়ালা নবুয়ত ও রিসালাতের দরজা বন্ধ করে দিয়েছেন।
পীর সাহেব বলেন, হযরত মুহাম্মাদ (সা.) পরে আজ পর্যন্ত পৃথিবীতে অবশ্যই কোন প্রকারই নবী কিংবা রাসূল আসে নাই, এখনো নাই এবং কিয়ামত পর্যন্ত আসবে না। এ আকিদা বা বিশ্বাসকেই বলা হয় আকিদায়ে খতমে নবুয়ত। এই আকিদায়ে খতমে নবুয়ত হল ইসলামী আকিদার মূল ভিত্তি। এই আকিদা অস্বীকারের দ্বারা গোটা কোরআনকেই অস্বীকার করা হয়। তাই এই আকিদা ‘খতমে নবুয়ত’ যে বা যারাই বিশ্বাস করবে না, নিঃসন্দেহে তারা কাফের ও অমুসলিম। তাদেরকে যারা কাফের বলবে না, তারাও কাফের ও অমুসলিম। যেহেতু কুখ্যাত কাফের কাদিয়ানী সম্প্রদায় আকিদা খতমে নবুয়তকে বিশ্বাস করে না, তাই তারা কাফের ও অমুসলিম। তাদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবি আদায় করা সকল মুসলমানদের ঈমানী ও নৈতিক দায়িত্ব।
আর সে দাবিপূরণ করা সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব বলেও তিনি উল্লেখ করেন। গতকাল শুক্রবার নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে কুখ্যাত কাফের কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণার দাবিতে আন্তর্জাতিক খতমে নবুয়ত ইসলামী মহাসম্মেলনে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন শায়খুল ইসলাম, আল্লামা ক্বারী হাফেজ তৈয়্যব সিদ্দিকী আল-কোরাইশী (ইউ.পি ভারত)।
সভাপতির বক্তব্যে পীর সাহেব জৌনপুরী আরো বলেন, ইসলামের সোনালী যুগে আর্থাৎ প্রায় দেড় হাজার বছর আগে দ্বীনের পক্ষে কাফের ও মুশরেকদের পরিচালিত সম্মিলিত যুদ্ধে ১০ বছরে ইসলামের পক্ষে ও বিপক্ষে মোট নিহত হয়েছিল মাত্র ১০১৮ জন। অথচ হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রা.) যামানায় ইয়ামানে কুখ্যাত মুসায়লামাতুল কাজ্জাব যখন মিথ্যা নবুয়ত দাবি করেছিল তখন এই ভন্ড নবী মুসায়লামাকে নির্মুল করতে ২৪০০ সাহাবী শাহাদাত বরণ করেছেন। যার মধ্যে ৭০০ সাহাবী কোরআনে হাফেজ ছিলেন। ভন্ড মুসায়লামা ও তার অনুসারীদের ধ্বংসের মাধ্যমে হযরত আবু বকর (রা.) কর্তৃক সে সময় উম্মাতকে আকিদায়ে খতমে নবুয়ত বিরোধী চক্রান্ত থেকে রক্ষা করেছিলেন। যুগে যুগে খতমে নবুয়তের আকিদার বিপক্ষে মিথ্যা নবুয়ত দাবিদারদের উদ্ভব দেখা দিলে, সে যুগের মুসলমানগণ তাদের ব্যাপারে এক মুহূর্তের জন্যেও আপোষ করনেনি। সকল চক্রান্তসহ তাদেরকেও নির্মূল করেছেন ।
জৌনপুরী পীর সাহেব বলেন, ইসলামের মূল ভিত্তি আকিদায়ে খতমে নবুয়তের বিপক্ষে সবচেয়ে জঘন্য চক্রান্ত করেছে কুখ্যাত ইংরেজ বেনীয়ারা। কাদিয়ানের কুখ্যাত কাফের কাজ্জাব মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর বিরুদ্ধে সমসাময়িক আলেম ওলামাদের মেহনত ও প্রচার প্রচারণার কারণে ইংরেজদের মদদ পুষ্ট হয়েও মির্জা গোলাম কাদিয়ানীর সকল চক্রান্ত নস্যাৎ হয়ে যায়। কাদিয়ানের কাজ্জাব মির্জা গোলাম শয়তান কাদিয়ানী কুখ্যাত কাফের সে লানত প্রাপ্ত হয়ে জাহান্নামের কুকুরে পরিনত হয়েছে। কাদিয়ানীরা যেহেতু তার অনুসারী সেহেতু তারাও অমুসলিম ও কাফের। কাদিয়ানীরা ইসরাইল ও ব্রিটেনের মদদে খতমে নবুয়তের বিরুদ্ধে চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। সরকার, বিরোধী দল, মিডিয়াসহ বিভিন্ন স্থানে ঘাপটি মেরে বসে আছে। কাদিয়ানীরা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করে যাচ্ছে। ইত্মেধ্যে তারা কুফরি মতবাদ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিতে আর.এফ.এল, প্রাণ পাবলিক স্কুল নামে ফ্রী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছে। মানুষকে ধোকা দিয়ে কাফের ও অমুসলিম বানাতে সারা দেশে প্রায় ৮৪ টি সেন্টার তৈরি করেছে। অতঃপর ১৪ কোটি মুসলমানদের প্রাণের দাবি অনতিবিলম্বে বাংলাদেশে কাদিয়ানীদেরকে রাষ্ট্রীয়ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে।
উক্ত আন্তর্জাতিক মহা সম্মেলনে পীর সাহেব জৌনপুরী ৪ দফা দাবি তুলে ধরেন । দাবিগুলো হল : ১. রাষ্ট্রীয়ভাবে কাদিয়ানীদেরকে অমুসলিম ঘোষণা করতে হবে। ২. কাদিয়ানী সম্প্রদায় ইসলাম ও মুসলমানদের কোন পরিভাষা যেমন আহমদি ও মুসলিম এরকম শব্দ ব্যবহার করতে পারবেনা । সে জন্য সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। ৩. কাদিয়ানীরা তাদের উপাসনালয়কে মসজিদ বলতে ও লিখতে পারবে না । কারণ তারা অমুসলিম আর অমুসলিমদের উপাসনালয় মসজিদ হতে পারে না। ৪. কাদিয়ানীদের ব্যবসার আয় ইসলাম ও মুসলমানদের বিপক্ষে খরচ হয় বিধায় তাদের পণ্য যেমন- প্রাণ, সিজান, আরএফএলসহ সকল পণ্যকে নিষিদ্ধ ও বাজেয়াপ্ত কিংবা রাষ্ট্রয়াত্ব করতে হবে।
উক্ত মহা সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন- আল্লামা সুমামা আহমাদ সিদ্দিকী (নাদওয়াতুল উলামা লাক্ষনৌ) ভারত, আল্লামা সাইয়্যেদ এমদাদুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ক্বারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, আল্লামা সাইয়্যেদ এহসান উল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ড. সৈয়দ হাসান আল-আজহারী, আল্লামা পীর মুফতি গিয়াস উদ্দিন আত্ব-তাহেরী, আল্লামা মুফতি ড. হুজ্জাতুল্লাহ নকশেবন্দী, আল্লামা সাইয়্যেদ নেয়ামাতুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা ড. শাহ আতাউল্লাহ বোখারী, আল্লামা সাইয়্যেদ ওবায়দুল্লাহ আব্বাসী জৌনপুরী, আল্লামা মুফতি আলাউদ্দিন জিহাদী, আল্লামা সাইয়্যেদ নেসার আহমাদ, আল্লামা পীরজাদা নাঈমুর রহমান, আল্লামা মুফতি জহিরুল ইসলাম ফরিদী, আল্লামা মুফতি আব্দুর রাজ্জাক ওসমানী, আল্লামা আবু বকর সিদ্দিক কাশেমী, আল্লামা শা নাদিমুর রশিদ আল-কাদরী, আল্লাম মোশারফ হোসেন হেলালী, আল্লামা তাজুল ইসলাম চাঁদপুরী, আল্লামা হাসানুর রহমান হুসাইন নকশেবন্দী, আল্লামা মুফতি নেসার আহমাদ আল-কাদরী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।