পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
যানজটবিহীন ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক
বিশেষ সংবাদদাতা : ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে এবার চিরচেনা যানজটের দৃশ্য নেই। চারলেনে উন্নীত হওয়ার পর সড়কের তুলনায় গাড়ির সংখ্যাই বরং কম। এবারের ঈদযাত্রায় যানজট ছাড়াই লাখ লাখ মানুষ বাড়ি ফিরতে পারছেন। ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য এ এক নতুন অভিজ্ঞতা।
গত শুক্রবার থেকেই ঈদের ছুটি শুরু হয়ে গেছে। ওই দিন থেকেই ঢাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন জেলার মানুষ গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে যাত্রা শুরু করলেও গতকাল রোববার থেকে ফাঁকা হতে শুরু করেছে ঢাকা। এবারও ঈদে লাখ লাখ মানুষ ঈদ করতে গ্রামের বাড়িতে যাবে। এসব যাত্রীর বেশিরভাগই সড়কপথের যাত্রী। যাত্রাপথে তাদের প্রধান বিড়ম্বনা ছিল যানজট। এবার সেই বিড়ম্বনা নেই। বিশেষ করে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হওয়ার পর যানজট নামের ভোগান্তি বিদায় নিয়েছে। ঈদ এলেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা ও গোমতি সেতুতে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়ে ৫০ থেকে ৭০ কিলোমিটার যানজট হতো। এবার তা নেই। হাইওয়ে পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, চারলেনে উন্নীত হওয়ার পর এই দুটি সেতুকে কেন্দ্র করে যানবাহনের ভিড় থাকলেও যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে না। সে কারণে আগের মতো ভোগান্তি নেই। ওই কর্মকর্তা জানান, যানজটে যাতে কোনো যানবাহন আটকা না পড়ে সেজন্য বিভিন্ন পয়েন্টে স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করা হয়েছে। তাদের সহযোগিতা এবং পুলিশের ঐকান্তিক চেষ্টায় এবার ঈদযাত্রা একেবারেই অন্যরকম। ঢাকা থেকে গত শনিবার ফেনী গেছেন মতিঝিলের ট্রাভেল ব্যবসায়ী আবুল হাশেম। তিনি বলেন, গত বছর ঢাকা থেকে ফেনী আসতে সাড়ে ৭ ঘণ্টা সময় লেগেছিল। এবার এসেছি মাত্র সোয়া চার ঘণ্টায়। তিনি বলেন, আসার সময় মহাসড়কে কোনো যানজট ছিল না। বরং সড়কে গাড়ির সংখ্যাই অপেক্ষাকৃত কম বলে মনে হয়েছে আমার কাছে। সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল মালিক সমিতির সভাপতি মো. আবুল কালাম বলেন, এবার ঈদের ছুটি অনেক বেশি। এ কারণে যাত্রীরা আগেভাগেই চলে গেছেন অথবা পালা করে যাচ্ছেন। সে কারণে যাত্রীদের চাপ কম। যাত্রীদের চাপ কম হওয়াতে প্রতিবছর ফিটনেসবিহীন গাড়ি যেভাবে রাস্তায় নামতো এবার তা হয়নি। চার লেন চালু হওয়ার পর এবার মহাসড়কও প্রশস্ত হয়েছে, তেমনি গাড়ি ও যাত্রীর চাপও কমেছে। সব মিলে খুব সুন্দর পরিবেশে মানুষ ঘরে ফিরতে পারছে।
মহাখালী থেকে ময়মনসিংহ রুটে বাস চালান এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত ২ জুলাইয়ের পর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহসড়কে কোনো যানজট নেই। ঈদ মৌসুমে আগে জয়দেবপুর ও চন্দ্রা মোড়ে কয়েক কিলোমিটার যানজটের সৃষ্টি হতো। চারলেন চালু হওয়ার পর এখন পুরো চিত্রই বদলে গেছে। আব্দুল হালিম নামে এক বাস চালক বলেন, এখন যাত্রীরা যেমন অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌঁছতে পারছে, একই সাথে আমাদের পরিশ্রমও অনেকাংশে কমেছে।
গত ২ জুলাই শনিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা-চট্টগ্রাম ও জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ চারলেন মহাসড়ক উদ্বোধন করেন। এ দুটি মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হওয়ার মধ্য দিয়ে দেশের সড়ক যোগাযোগ নেটওয়ার্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কটি দেশের অর্থনীতির লাইফ-লাইন বলে পরিচিত। দাউদকান্দি থেকে চট্টগ্রামের সিটি গেট পর্যন্ত ১৯০ কিলোমিটার মহাসড়ক চারলেনে উন্নীত হওয়ায় এ মহাসড়ক দিয়ে এখন মাত্র সাড়ে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম ভ্রমণ করা সম্ভব হয়েছে। এতে করে কমবে পরিবহন ব্যয়, যানজট ও সড়ক দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চারলেন মহাসড়কের ফেনীতে একটি ফ্লাইওভার নির্মিত হবে, যা বাস্তবায়ন করবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। এ ফ্লাইওভারটি আলাদা প্যাকেজে বাস্তবায়িত হবে। এ ছাড়া সৌন্দর্যবর্ধন কাজও ভিন্ন প্যাকেজে বাস্তবায়ন করা হবে।
ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম চারলেন মহাসড়কে ২৪২টি কালভার্ট, ২৩টি সেতু, ১৪টি বাইপাস, দুটি আন্ডারপাস, ৩৪টি স্টিল ফুটওভার ব্রিজ ও ৬১টি বাস-বে নির্মাণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কে জয়দেবপুর থেকে ময়মনসিংহ পর্যন্ত ৮৭ কিলোমিটার চারলেনে উন্নীত হয়েছে। এ মহাসড়কে ১৫৫টি কালভার্ট, পাঁচটি নতুন সেতু, একটি ফ্লাইওভার (মাওনা ফ্লাইওভার), একটি রেলওভার পাস, চারটি স্টিল ফুটওভার ব্রিজ ও ১০টি স্থানে বাস-বে নির্মাণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।