Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

গুলশানে হামলা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত -বিভিন্ন ইসলামী নেতৃবৃন্দ

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় শুক্রবার রাতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় বিদেশী নাগরিকসহ পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন বিভিন্ন ইসলামী দল ও সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। গতকাল পৃথক পৃথক বিবৃতিতে তারা বলেন, এরূপ হামলা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত। দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার দেশী-বিদেশী সব চক্রান্ত শক্তভাবে রুখতে হবে। জঙ্গি ও নির্দেশদাতাদের চিহ্নিত করতে গোয়েন্দা কার্যক্রম শক্তিশালী করতে হবে। গ্রেফতারকৃত জঙ্গিদের জামিন অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। কালক্ষেপণ না করে দলমত নির্বিশেষে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এর সমাধান বের করা দরকার। পীর সাহেব চরমোনাই
রাজধানীর গুলশানে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত ও আহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই। পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, গুলশানের এ হামলা ইসলাম ও মুসলমানের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র। যে কোনো মূল্যে এ ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে দেশ ও জাতিকে বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। সন্ত্রাসীদের নিন্দনীয় ভয়াবহ সহিংসতায় আমরা স্তম্ভিত। দেশের মানুষ আতঙ্কে ভুগছে। তাই দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সাথে নিয়ে পরিস্থিতি মোকাবেলার ব্যবস্থা করতে হবে।
পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, দেশের নাগরিক ও বিদেশী কূটনীতিক ও নাগরিকদের জীবন এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানের প্রশংসা করে বলা হয়, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আল্লাহর রহমতে বিচক্ষণতা, বুদ্ধিমত্তা, সাহস ও দৃঢ়তার সাথে শ্বাসরুদ্ধকর পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছে। জিম্মিদের মুক্ত করতে গিয়ে যেসব পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন আমরা তাদের রূহের মাগফিরাত কামনা এবং তাদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। একই সাথে আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করছি। তিনি এই বর্বরোচিত সন্ত্রাসী হামলার সাথে জড়িত এবং নির্দেশদাতাদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান।
আওয়ামী ওলামা লীগ
গুলশানের হলি আর্টিসান রেস্তোরাঁয় শুক্রবার রাতে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় বিদেশী নাগরিকসহ পুলিশ কর্মকর্তা নিহতের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগ নেতৃবৃন্দ। বিবৃতিতে ওলামা লীগের কার্যনির্বাহী সভাপতি হাফেজ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক মাওলানা কাজী, মাওলানা আবুল হাসান শেখ শরীয়তপুরী ও মুফতি মাসুম বিল্লাহ নাফেয়ী বলেন, সন্ত্রাসীদের পরিচয় সন্ত্রাসীই। তারা বলেন, ইসলামের সাথে এর কোনো সম্পর্ক নেই। শান্তির ধর্ম ইসলাম কোনো উগ্রতা ও সহিংসতাকে সমর্থন করে না। নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করার দেশী-বিদেশী চক্রান্ত শক্তভাবে রুখতে হবে। তারা বলেন, গুলশানের রেস্তোরাঁয় হামলা করে দেশী-বিদেশী নাগরিকদের জিম্মি করে যারা এই নারকীয় হত্যাকা- চালিয়েছে তারা ইসলাম, দেশ ও মানবতার চিরশত্রু। এই শত্রুদের বিরুদ্ধে আলেম-ওলামাসহ দেশের সর্বস্তরের নাগরিকদের রুখে দাঁড়াতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, সন্ত্রাসী জঙ্গিদের ব্যাপারে গোয়েন্দা নজরদারি সঠিক মাত্রায় হচ্ছে না। গোয়েন্দা কার্যক্রম আরো শক্তিশালী করে জঙ্গিদের এবং নির্দেশদাতাদের অবস্থান নিশ্চিত করতে হবে। জঙ্গিদের গ্রেফতারের পর তারা যেন কোনোভাবেই জামিন না পায় তার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কারণ যেসব জঙ্গি ছাড়া পেয়েছে তারা আবারো জঙ্গিবাদে সম্পৃক্ত হয়েছে। এই বর্বর হামলা ও হতাহতের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে নেতৃবৃন্দ নিহতদের রূহের মাগফিরাত ও পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। সঙ্কট নিরসনের ব্যাপারে যথার্থ ভূমিকা রাখার জন্য পুলিশসহ তিন বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জমিয়তে উলামেয়ে ইসলাম
গুলশানের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলা প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও অখ-তার ওপর এক মস্তবড় আঘাত। এ হামলায় দেশবাসী আতঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। এ মুহূর্তে অপরিহার্য হয়ে পড়েছে জাতীয় ঐক্যের। সময় দ্রুত গড়িয়ে যাচ্ছে তাই কালক্ষেপণ না করে দলমত নির্বিশেষে সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে এর সমাধান বের করা দরকার। গতকাল জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সভাপতি শায়খ আব্দুল মোমেন, নির্বাহী সভাপতি মুফতি মোহাম্মাদ ওয়াক্কাস, সহ-সভাপতি মাওলানা মোস্তফা আজাদ, মাওলানা জহীরুল হক ভূঁইয়া, মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর জমিয়তের সভাপতি শায়খুল হাদীস মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী ও যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহা উদ্দীন জাকারিয়া এক যুক্ত বিবৃতিতে এসব কথা বলেন। নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে এই ভয়াবহ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে বলেন, কোনো ঘটনার পরপরই কারো দায় স্বীকার কিংবা কাউকে দায়ী করা সবই উদ্দেশ্যমূলক ও রহস্যজনকও হতে পারে। তারা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে আরো বলেন, শান্তির ধর্ম ইসলামে এসব অশান্ত কার্যক্রমের কোনো স্থান থাকতে পারে না।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গুলশানে হামলা ইসলামের বিরুদ্ধে গভীর চক্রান্ত -বিভিন্ন ইসলামী নেতৃবৃন্দ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ