Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঈদে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ

প্রকাশের সময় : ৪ জুলাই, ২০১৬, ১২:০০ এএম

নাছিম উল আলম : অমাবশ্যার ভরা কোটালে ভরা করে ফুঁসে ওঠা সাগরের জোয়ারের সাথে উত্তর বঙ্গোপসাগর থেকে ধেয়ে আসা গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালার বহন করে আনা বৃষ্টিপাতে ঈদে ঘরমুখি জনশ্রোতকে নিরাপদ গন্তব্যে পৌঁছে দেয়া দুরূহ হয়ে উঠছে।
গতকাল থেকে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চাঁদপুর হয়ে চট্টগ্রাম অঞ্চল থেকে দক্ষিণাঞ্চলমুখি মানুষের শ্রোতে আরো দীর্ঘতর হয়েছে। আজ থেকে নৌপথে মানুষের ভিড় আরো বাড়বে। কিন্তু দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে নৌপথে যাত্রী চলাচলে ঝুঁকি বাড়ছে। বরিশালসহ দক্ষিণের সবকটি নদী বন্দরে দুই নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ। ফলে অনধিক ৬৫ ফুট দৈর্ঘের সব যাত্রীবাহী নৌযানের চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিআইডব্লিউটিএ বরিশাল, ঢাকা ও চাঁদপুর নদী বন্দরগুলোতে বিশেষ নজরদারীসহ সতর্কতা অবলম্বন করলেও যাত্রী ভীড়ে নৌযানগুলোর ওভারলডিং বন্ধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে আবহাওয়া বিভাগ থেকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশাল ও খুলনা অঞ্চলসহ দেশের উপকূলীয় এলাকায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের আশংকার কথা জানিয়েছে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত বরিশালে আরো ৪০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত ছিল। সাগর মাঝারী মাত্রায় উত্তাল রয়েছে। আবহাওয়া বিভাগ থেকে দেশের উপকূলীয় এলাকাসহ সমুদ্র বন্দরসমূহের ওপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাবার সম্ভানার কথা জানিয়ে বরিশালের পায়রাসহ সবকটি সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
অপরদিকে পন্টুনের অভাবে বরিশাল বন্দরে নৌযানসমূহ ভেরা ও ছাড়া নিয়ে চরম বিড়ম্বনা অব্যাহত রয়েছে। দুর্ভোগ ও ঝুঁকি বাড়ছে যাত্রীদেরও। বরিশালের জেলা প্রশাসনের মৌখিক বাঁধার কারণে বরিশাল বন্দরে বিদ্যমান ৬টি পন্টুনের দক্ষিণ পাশে অতিরিক্ত ১টি পন্টুন স্থাপন করতে পারছে না বিআইডব্লিউটিএ। ফলে ইতোমধ্যে বিআইডব্লিউটিসি’র রকেটসহ বিশেষ স্টিমারসমূহ দক্ষিণের শীপ ঘাটে সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সেখানে ভয়াবহ ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের ওঠা-নামা করতে হচ্ছে।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশ উপকূলের অদূরে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি সামান্য উত্তরদিকে সরে গিয়ে বর্তমানে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমী বায়ুর অক্ষ ভারতের উত্তর প্রদেশ, পূর্ব মধ্যপ্রদেশ, উড়িষ্যা, লঘুচাপের কেন্দ্রস্থল এবং উত্তর-পূর্ব দিকে বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরের অন্যত্র মাঝারী থেকে প্রবল অবস্থায় রয়েছে।
লঘুচাপের প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় গভীর সঞ্চালণশীল মেঘমালা সৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। যা উপকূলসহ দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টি বয়ে নিয়ে আসছে। গতকাল সকালের পূর্ববতী ২৪ ঘণ্টায় বরিশালে ৪২ মিলিমিটার ও পটুয়াখালীতে ৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। গতকাল দিনভরই সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতসহ দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া অব্যাহত ছিল। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলেছে আবহাওয়া বিভাগ।
বর্তমান এ বৃষ্টিপাতকে আষাঢ়ের বর্ষা মৌসুমের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মনে করছে আবহাওয়া বিভাগ। এমনকি ভড়া বর্ষা মৌসুমেও এবার বৃষ্টিপাতের পরিমাণ দক্ষিণাঞ্চলসহ সারা দেশেই এখনো যথেষ্ট কম। এমনকি বর্ষার আষাঢ়ে এবার বরিশালে তাপমাত্রার পারদ প্রায় ৩৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। যা স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৪ ডিগ্রী সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশী ছিল। তবে গত দুদিনে বৃষ্টির কারণে তাপমাত্রা ৩১ ডিগ্রীর কমবেশী রয়েছে বরিশালে। ভড়া বর্ষায়ও গতমাসে বরিশাল অঞ্চলে স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৩০% কম বৃষ্টি হয়েছে বরিশালে। এসময় সারা দেশের গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে প্রায় ২৯% কম। গত ১৭ জুন বর্ষাকালকে মাথায় নিয়ে বাংলাদেশে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ু বিস্তার লাভ করলেও তা কম সক্রিয় ছিল। ফলে কাক্সিক্ষত বৃষ্টিপাত হয়নি। এমনকি এসময় বঙ্গোপসাগরে দু’টি মৌসুমী লঘুচাপ সৃষ্টি হলেও এর একটিও নি¤œচাপে পরিণত হয়নি।
কিন্তু বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় আসন্ন ঈদ উদুল ফিতরকে কেন্দ্র করে রাজধানী ঢাকা ছাড়াও চাঁদপুর থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলের যাত্রীদের বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ফেরা যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। ঢাকা থেকে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে কয়েক লাখ যাত্রী নৌপথে ঘরে পৌঁছবে ঈদের আগে। এর মধ্যে শুধুমাত্র বরিশাল বন্দরে ১৫টি বেসরকারী নৌযান যাত্রী পরিবহন করছে। গতকাল থেকে এসব নৌযানের অন্তত ১২টি প্রতিদিন ডবল ট্রিপে যাত্রী পরিবহন শুরু করেছে। ঘরমুখি বিপুলসংখ্যক যাত্রীর চাপে প্রতিটি নৌযানই ধারন ক্ষমতার দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে উত্তাল মেঘনা অতিক্রম করছে।
অপরদিকে যাত্রীবান্ধব সময়সূচী প্রবর্তন না করায় রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন বিআইডব্লিউটিসি’র নিয়মিত ও বিশেষ সার্ভিসের নিরাপদ স্টিমারগুলো চলছে ধারন ক্ষমতার অর্ধেকেরও কম যাত্রী নিয়ে। ৩০ জুন থেকে শুরু হওয়ায় সংস্থাটির বিশেষ সার্ভিসের সাথে নিয়মিত রকেট স্টিমারগুলোতে একদিনও পূর্ণ ধারন ক্ষমতার যাত্রী বহন করতে পারেনি।
বর্তমান দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া পরিস্থিতিতে মেঘনা এবং মুন্সিগঞ্জের ভাটিতে চাঁদপুরের কাছে পদ্মা-মেঘনার মোহনায় প্রবল শ্রোতসহ ঘূর্ণাবর্ত সৃষ্টি হয়েছে। চাঁদপুরের ভাটিতে উজান মেঘনাও প্রবল শ্রোতের সাথে যথেষ্ট উত্তাল রয়েছে। ফলে সব ধরনের নৌযানকে অত্যন্ত সতর্কতার সাথে পদ্মা-মেঘনার মোহনাসহ চাঁদপুর চ্যানেলের মুখ এবং উজান মোঘনা অতিক্রম করতে বলেছে বিআইডব্লিউটিএ।
এ ব্যাপারে গতকাল বিআইডব্লিউটিএ’র চেয়ারম্যান কমোডর মোজাম্মেল হকের সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান আমরা ঘরমুখি মানুষের ভ্রমণকে নিরাপদ করতে সম্ভব সব ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। সবগুলো নদী বন্দরের বিশেষ নজরদারী করা হচ্ছে। দুই নম্বর সতর্ক সংকেতের কারণে বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলে ছোট নৌযানগুরো চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। পাশাপাশি পন্টুনের অভাবে বরিশাল নদী বন্দরে যে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে, তাকে অনভিপ্রেত বলে বিষয়টি নিয়ে দের পরে জেলা প্রশাসনের সাথে কথা বলে তা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের কথা জানানন তিনি। প্রয়োজনে এব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করা হবে বলেও জানান চেয়ারম্যান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দক্ষিণাঞ্চলে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় ঈদে ভ্রমণ ঝুঁকিপূর্ণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->