পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : গুলশানের রেস্টুরেন্টে উগ্রবাদী দুষ্কৃতকারী কর্তৃক বিদেশী নাগরিকদের জিম্মি ঘটনা ‘অন্ধ হিংস্রতা ও বিকৃত রুচির পশুপ্রবৃত্তি’ হিসেবে অভিহিত করে এদের নির্মূলে আবারো সরকারকে দলমতনির্বিশেষ ‘সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন খালেদা জিয়া।
গতকাল শনিবার দুপুরে এক বিবৃতিতে এই আহ্বান জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন। নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই বিবৃতি পড়ে শুনান দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
খালেদা জিয়া তার বিবৃতিতে বলেন, গুলশান রেস্টুরেন্টের ঘটনা উগ্রবাদী দুষ্কৃতকারীদের কর্তৃক বিদেশী নাগরিকসহ ২০ জনের মতো মানুষকে জিম্মি করে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যদেরকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণের ফলে সৃষ্ট প্রাণবিনাশী ঘটনা অন্ধ হিংস্রতা ও বিকৃত রুচির পশুপ্রবৃত্তি।
আমি আবারো সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছিÑ এই নিষ্ঠুর বিবেকবর্জিত গণতন্ত্র ও সভ্যতা বিরোধী উগ্রবাদী শক্তিকে নির্মূল করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের সমন্বিত প্রচেষ্টাকে কাজে লাগাই। সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টায় এখন এই উগ্রবাদী শক্তিকে দমন করতে না পারলে এরা দীর্ঘতম যুদ্ধ চালিয়ে দেশের জনগণের শান্তি, সুস্থিতি, নিরাপত্তা বজায় রাখা কঠিন করে তুলবে।
একই সঙ্গে জিম্মি ঘটনা মোকাবিলায় দেশের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে ধন্যবাদ জানান বিএনপি চেয়ারপার্সন।
দেশের নিরাপত্তা বাহিনীসহ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যেসমস্ত সদস্যরা অটুট মনোবল ও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই রক্তাক্ত জিম্মি ঘটনাকে মোকাবিলা করেছেন, সেজন্য আমি দেশবাসী ও আমার দলের পক্ষ থেকে তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
শুক্রবার রাতের ঘটনায় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার যেসব সদস্য নিহত হয়েছেন, তাদের বিদেহী রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের আশু সুস্থতা কামনা করেন খালেদা জিয়া।
ঢাকার গুলশানে এক ক্যাফেতে অস্ত্রধারীদের হামলায় জিম্মি পরিস্থিতি সৃষ্টির ১২ ঘণ্টা পর শনিবার সকালে কমান্ডো অভিযানের মধ্য দিয়ে সঙ্কটের রক্তাক্ত অবসান ঘটেছে।
দুষ্কৃতকারীদের শাস্তির দাবি করে বিবৃতিতে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই সহিংস ঘটনায় জড়িত প্রকৃত দুষ্কৃতকারীদের শাস্তি দ্রুত সময়ের মধ্যে কার্যকর হবে এবং এদের নেটওয়ার্ক খুঁজে বের করে তাদের নির্মূল করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো সক্ষম হবে।
গুলশানে সংশ্লিষ্ট এলাকাবাসী ও কূটনীতিক পাড়ার নিরাপত্তা নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান খালেদা জিয়া।
গত ১০ জুন থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী জঙ্গিদমনে ‘সাঁড়াশি অভিযান’-এর সমালোচনা করে তিনি বিবৃতিতে বলেন, কিছুদিন আগে জঙ্গি দমনের নামে সরকারি অভিযানে যে ভয়াবহ রূপ জনগণ দেখলো, তাতে আমরা তখনই বলেছিলামÑ সরকারের এই নৃশংস ক্র্যাকডাউন বিএনপির বিরুদ্ধে ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ধ্বংস করার জন্য। এই অভিযান ও বেআইনি বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের পরও জঙ্গিদের বিবেকবর্জিত অপতৎপরতা থামাতে পারেনি সরকার।
ঝিনাইদহে শ্যামানন্দ দাস নামে একজন সেবায়েতকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে খালেদা জিয়া বলেন, শুক্রবার হিন্দু পুরোহিত শ্যামানন্দ দাসকে কুপিয়ে হত্যা এবং রাতে গুলশানের লোমহর্ষক মানুষ জিম্মির ঘটনায় প্রমাণিত হলো সরকারের সপ্তাহব্যাপী ক্র্যাকডাউনের উদ্দেশ ছিলো বিএনপির দমন, জঙ্গিবাদ দমন নয়।
গণমাধ্যম ও সংবাদ কর্মীদের ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নানা নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা জারি রেখে গণতান্ত্রিক শক্তির বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে গিয়ে দেশে অমানবিক সভ্যতা বিধ্বংসী শক্তির উত্থান ঘটেছে। দেশে বিদ্যমান বহুমাত্রিক স্বৈরতান্ত্রিকতার কারণেই আনাচে-কানাচে উগ্রবাদ বাসা বেঁধেছে।
গুলশানে জিম্মি ঘটনার নিন্দা জানিয়ে তিনি বলেন, অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ফলে সৃষ্ট অগণতান্ত্রিক সংস্কৃতি মিলে মিশে দেশে এমন এক রাজনৈতিক ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে যা পৈশাচিক স্বৈরতন্ত্রে অধঃপতিত হয়েছে। গতরাতে গুলশানে দুষ্কৃতকারীদের নির্মম রক্তাক্ত অভ্যূত্থান দেশে বিরাজমান দুঃশাসনের বর্হিপ্রকাশ।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে দলের যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবীর খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
আজ বিকেলে স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা ডেকেছেন খালেদা জিয়া
স্টাফ রিপোর্টার
আজ রোববার বিকেলে ৩.৩০টায় গুলশানের নিজ কার্যালয়ে দলের স্থায়ী কমিটির জরুরি সভা ডেকেছেন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। চেয়ারপার্সনের প্রেসউইং সূত্র এ তথ্য জানান।
গুলশানের জঙ্গি হামলাসহ দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে সভায় জরুরি আলোচনা হবার কথা রয়েছে। এর আগে বিবৃতিতে জঙ্গি হামলা ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং বিশেষকরে বিদেশি নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ হামলাকারীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।