পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কেউ দাঁড়িয়েছিলেন ছেলের মুক্তির দাবিতে, কেউ শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে হাজির হন স্বামীকে ফিরে পেতে। এভাবেই স্বজনরা মানববন্ধন করে বিএসএফের হাতে পাঁচ জেলে অপহরণের প্রতিবাদ জানায়। তাদের অভিযোগ, বিএসএফ অবৈধভাবে বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে পদ্মা নদী হতে তাদের ধরে নিয়ে গেছে। এরপর ভারতীয় পুলিশের হাতে অনুপ্রবেশের মিথ্যা অভিযোগে তাদের তুলে ধরা হয়।
অপহরণের শিকার রাজন আলীর মা ফাইমা বেগম, শাহিন আলীর স্ত্রী মানববন্ধন চলাকালে কান্নায় ভেঙে পড়েন। স্বামীর কথা জানতে চাইলে শাহিনের স্ত্রী বীথি বলেন, পরিবারের একমাত্র আয়-রোজগার করতেন শাহিন। প্রতিদিনের মতো সে বাড়ির পাশেই পদ্মা নদীতে মাছ ধরছিলেন। এ সময় স্পিড বোটে করে কয়েকজন বিএসএফ সদস্য বাংলাদেশের সীমানায় ঢুকে ধরে নিয়ে যায়।
আড়াই বছরের শিশুকে কোলে নিয়ে মানববন্ধনে হাজির ছিলেন কাবিল হোসেনের স্ত্রী সমিরা খাতুন। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমার স্বামী সংসার চালাতে ঋণ করে রেখেছে। মাছ ধরার পর তা বিক্রি করে সেই ঋণের টাকার কিস্তি পরিশোধ করি।
শুধু রাজশাহী নয়, এমন আর্তনাদ উত্তর-পশ্চিম সীমান্ত জুড়ে। বাংলাদেশের সীমানায় অবৈধভাবে হুটহাট ঢুকে পড়ছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী। যখন তখন ধরে নিয়ে যাচ্ছে ক্ষেতে কর্মরত বাংলাদেশি কৃষক, গবাদি পশু চড়ানো রাখাল, আর নদীতে মাছ ধরা জেলেদের। গুলি করে মারছে, আহতদের ওপর চালাচ্ছে নির্যাতন। এরপর অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের মিথ্যা মামলা দিয়ে কারাগারে মাসের পর মাস আটকে রাখা হচ্ছে। আর বাংলাদেশি স্বজনরা উৎকন্ঠা নিয়ে প্রহর গুনছে।
ঘটনার পরপর বাংলাদেশের বডার গার্ড (বিজিবি)-এর পক্ষ থেকে পতাকা বৈঠকে বসার আহ্বান জানিয়ে বিষয়গুলো নিষ্পত্তির চেষ্টা করা হলেও বিএসএফ এর পক্ষে থেকে আন্তরিক সাড়া মেলে না। পতাকা বৈঠকের সময় নিয়ে চলে টালবাহানা। আবার বৈঠক হলেও বিজিবিকে ফিরতে হচ্ছে শূন্য হাতে। বিজিবির কোম্পানি পর্যায় থেকে ব্যাটালিয়ন পর্যন্ত বৈঠকে দুঃখ প্রকাশ, বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি না হওয়ার আশ্বাস দিলেও তা মানা হচ্ছে না।
বর্তমানে পদ্মায় জেলেরা মাছ ধরতে ভয় পাচ্ছে। কৃষক সীমান্তবর্তী জমিতে চাষবাদ করতে যাচ্ছে ভয়ে ভয়ে। সারাক্ষণ আতঙ্ক তাড়া করছে তাদের। সীমান্তের এক দেড় কিলোমিটার ভিতরে এসে নদীর চরকে তাদের অংশ বলে দাবি করছে। কোথাও কোথাও ছাপড়া তুলে ক্যাম্প বানাতেও দেখা যায়। বিজিবির কড়া প্রতিবাদের মুখে মাঝে মাঝে তারা সরিয়েও নেয়।
গত ৩১ জানুয়ারি পাঁচ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার পর প্রত্যাশা ছিল পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে তাদের ফেরত দেয়া হবে। পতাকা বৈঠকে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করলেও জেলেদের ফেরত না দিয়ে ভারতীয় পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। ফলে বিষয়টা এখন আদালতের।
এদিকে স্বজনরা বুঝে উঠতে পারছেন না এখন তারা কী করবেন। যেখানে পেটের ভাত জুটে না তারা কিভাবে ভারতে গিয়ে স্বজনদের আইনি সহায়তা দিয়ে ফিরিয়ে আনবে। এখন পর্যন্ত তাদের পাশে দাঁড়ায়নি কোনো আইনি বা মানবাধিকার সংগঠন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ভয়ে জেলেরা নদীতে মাছ ধরতে নামছে না। আর মাছ না ধরা মানেই অনাহার অর্ধহার। মৎসজীবী সমিতির নেতা আবু তাহের বলেন, বিএসএফ পদ্মা নদীর বাংলাদেশের সীমানায় যখন তখন ঢুকে গিয়ে আমাদের জেলেদের হেনস্তা করছে। ধরে নিয়ে যাচ্ছে। একারণে আতঙ্কে জেলেরা পদ্মায় নামতে পারছে না। মাছ ধরা বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চাই।
হরিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বজলে রেজভী আল হাসান মঞ্জিল বলেন, মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকে। এর অবসান হওয়া দরকার। বিষয়টি নিয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে সমাধান হতে হবে। বিএসএফ এর কর্মকান্ডে সাধারণ মানুষ ছাড়াও বিজিবির সদস্যরাও বিরক্ত।
বিজিবির রাজশাহী-১ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্নেল জিয়া উদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিএসএফ এর কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে আমরা সতর্ক রয়েছি এবং সম্মানজনকভাবেই নিষ্পত্তির প্রচেষ্টা চালাই। বিএসএফ এর অনুপ্রবেশের বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে জানানো হয়েছে। এ নিয়ে বিজিবি এবং বিএসএফ এর মধ্যে উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।