পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
চলতি বছর ঋণ আদায়ের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিবে বলে জানিয়েছেন জনতা ব্যাংকের সিইও এ্যান্ড ম্যানেজিং ডিরেক্টর মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রæয়ারি) নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। এদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে দেশে দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে জনতা ব্যাংক ‘মুজিব বর্ষ স্মারক ঋণ’ কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে।
জনতা ব্যাংকের এমডি বলেন, জনতা ব্যাংকের বিভিন্ন সূচকে অর্জন ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। ব্যাংকের আমানত, ঋণ ও অগ্রিম, আমদানি ও রেমিট্যান্স বাড়ছে। কমে আসছে লোকসানি শাখাও। এ ছাড়া অনলাইন সুবিধার আওতায় এসেছে ব্যাংকের সব শাখা। আশা প্রকাশ করে বলেন, ক্রিসেন্ট ও এ্যাননটেক্স গ্রæপের ঘটনার চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ব্যবসার সব ক্ষেত্রে সফলতা অর্জনের মাধ্যমে ভালো অবস্থানে যাবে জনতা ব্যাংক।
মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ব্যাংক হিসেবে মুনাফার বিষয়টি সম্পৃক্ত থাকলেও জনতা ব্যাংক সমগ্র দেশের কল্যাণে দায়বদ্ধ। প্রতিনিয়ত সরকারের বিভিন্ন সেবা মূলক কাজ করছে জনতা ব্যাংক। তিনি বলেন, বেসরকারি পদ্মা ব্যাংকে বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের ব্যাংক খাতকে সুরক্ষারই দিয়েছে জনতা ব্যাংক। এছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমদানি, রপ্তানি, ফরেন রেমিট্যান্স, এসএমই খাতে ঋণসহ সরকারের বিভিন্ন সেবামূলক কাজে সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি। ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, জনতা ব্যাংক সর্বপ্রথম সরকার ঘোষিত ঋণের সুদহার ৯ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। এতে সামগ্রিক মুনাফা অর্জনে কিছুটা প্রভাব পড়লেও আমরা তা কাটিয়ে উঠতে সক্ষম হচ্ছি। তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৮ সালে ব্যাংকের পরিচালন মুনাফা ৯৬৪ কোটি টাকা অর্জিত হয়েছে এবং ২০১৯ সালে ১২০০ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করেছে। ব্যাংকের সব শাখায় অনলাইন ব্যাংকিং চালু রয়েছে উল্লেখ করে মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, ব্যাংকিং লেনদেন ও সেবা অধিকতর নিরাপদ ও সাইবার হুমকি মোকাবেলায় অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা উন্নীতকরণসহ সমসাময়িক প্রযুক্তির ওপর জোর দিয়েছে জনতা ব্যাংক। সব ক্ষেত্রে করপোরেট সুশাসন, সততা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা হয়েছে। মানসম্মত সেবা প্রদান এবং অনিয়ম ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের কথাও জানান তিনি।
মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, বর্তমানে জনতা ব্যাংকের আমানত দাঁড়িয়েছে প্রায় ৭০ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকের বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ২০ হাজার কোটি টাকা, আমাদানি ২০ হাজার কোটি টাকা ও রফতানি ১০ হাজার কোটি ছাড়িয়েছে। ২০১৯ সাল শেষে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে রেমিটেন্স এসেছে ৭ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। চলতি বছর শেষে জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে ১০ হাজার কোটি টাকা রেমিট্যান্স আসবে বলে জানান ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক।
তিনি বলেন, ব্যাংকের ব্যাবসায়িক সব সূচকে আমাদের অর্জন ইতিবাচক হলেও বৃহৎ দুটি গ্রæপভুক্ত ঋণখেলাপি হয়ে পড়ায় আমরা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছি। এ দুটি গ্রæপের কারণেই ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে উল্লেখ করে মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ বলেন, অর্থঋণ আদালতে মামলা, ঋণ আদায় এবং নিয়মিতকরণের লক্ষ্যে সমন্বিত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। এ বছরই আমরা শক্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করছি।
এদিকে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে দেশে দারিদ্র বিমোচন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে জনতা ব্যাংক ‘মুজিব বর্ষ স্মারক ঋণ’ কর্মসূচি চালু করতে যাচ্ছে। এই ঋণদান কার্যক্রম সম্পর্কে জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, দেশের দারিদ্র্য বিমোচন, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরির লক্ষ্যে জনতা ব্যাংক মুজিববর্ষ স্মারক ঋণ নামে একটি বিশেষ ঋণদান কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে। আগামী ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর শততম জন্ম দিনে এই ঋণদান কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে। এই ঋণদান কার্যক্রমের আওতায় শিক্ষিত দরিদ্র বেকার যুবক-যুবতীদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তুলনামূলক সহজ শর্তে ঋণদান করা হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্ম শত বার্ষিকী উপলক্ষে এউ বিশেষ ঋণদান কার্যক্রম চালু করা হলেও আগামীতেও এই ঋণদান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু ক্ষুধা ও দারিদ্র্য মুক্ত বাংলাদেশের গঠনের স্বপ্ন দেখতেন। তার সেই অর্থনৈতিক দর্শনকে সামনে রেখে জনতা ব্যাংক লিমিটেড এই বিশেষ ঋণদান কার্যক্রম চালু করতে যাচ্ছে। ২১ থেকে ৩৫ বছর বয়সী ন্যূনতম এসএসসি পাশ যে কোনো তরুন-তরুণী বিনা জামানতে এই ঋণ গ্রহণ করতে পারবেন। উদ্বোধনী দিবসে অন্তত একশ‘ জন তরুন-তরুণীর হাতে ঋণের অনুমোদন পত্র তুলে দেয়া হবে। দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে থাকা জনতা ব্যাংকের শাখা থেকে এই ঋণ বিতরণ করা হবে। মুজিববর্ষ স্মারক ঋণের সর্বোচ্চ সিলিং হবে ২ লাখ টাকা। ঋণ গ্রহণের পর ৫ বছরে ৬০ কিস্তিতে তা পরিশোধ করা যাবে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশত বার্ষিকী উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল স্থাপন, বঙ্গবন্ধু কর্ণারসহ বেশ কিছু বিশেষ উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান জনতা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুছ ছালাম আজাদ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।