Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

বিএসএমএমইউতে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই বলেই..

সংবাদ সম্মেলনে রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৮ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:২৯ এএম

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে আধুনিক চিকিৎসার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, বিএসএমএমইউ’র বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা কোনো কোনো ক্ষেত্রে আশানুরূপ উন্নতি হলেও কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্থিতিশীল রয়েছে। তাঁর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে, মুখের ঘা সেরে গেছে, দাঁতের ব্যথা ভাল হয়েছে, শারীরিক দুর্বলতার উন্নতি হয়েছে, আর্থারাইটিসের ব্যথা কমানোর জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা প্রদানে তাঁকে পরামর্শ দেয়া হয় কিন্তু দেশনেত্রী নাকি আর্থারাইটিসের চিকিৎসা নিতে সম্মতি জ্ঞাপন করেননি। ফলে আর্থারাইটিসের আশানুরুপ উন্নতি হচ্ছে না। বিএসএমএমইউ’র পরিচালকের এসকল বক্তব্য সম্পূর্ণ অসত্য, মনগড়া ও ফরমায়েশী বিবৃতি দাবি করে রিজভী বলেন, বিএসএমএমইউতে আধুনিক যন্ত্রপাতি নেই বলেই তো কাদের সাহেবরা বিদেশে চিকিৎসা নেন। শেখ হাসিনা কারাবন্দী থাকা অবস্থায় স্কয়ার কিংবা বিদেশে চিকিৎসা নিয়েছেন।
গতকাল (সোমবার) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়াকে বন্দী রেখে হত্যার আয়োজন চলছে অভিযোগ করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তাঁকে দেখে এসে তাঁর স্বজনরা কান্নাভেজা কন্ঠে জানিয়েছেন, দিন দিন দেশনেত্রীর অবস্থার আরও অবনতি হচ্ছে। সারাক্ষণ বমি করছেন। তাঁর গায়ে প্রচন্ড জ্বর। সারাক্ষণ তীব্র ব্যাথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। বাম হাত সম্পূর্ণ বেঁকে গেছে। পিজি হাসপাতালে নামকাওয়াস্তে যে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে, তাতে কোনো কাজ হচ্ছে না। তাঁর যে ভয়াবহ অবস্থা, দ্রæত উন্নত চিকিৎসার বন্দোবস্ত করতে হবে। তাঁর শরীর খুবই খারাপ। শারীরিক অবস্থার অবনতির কারণে বেগম খালেদা জিয়া কথা বলতে পারছেন না। সেখানে ভর্তির পর এখনও তাঁর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আসেনি, তিনি বিছানা থেকে উঠতে পারছেন না, কিছু খেতে পারছেন না, হাত পা নাড়াতে পারছেন না। তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারছেন না। সরকারপ্রধানের প্রতিহিংসার আগুনে দেশনেত্রী কারাবন্দি, আর এই কারাবন্দী অবস্থায় যথাযথ চিকিৎসার অভাবে তাঁর শারীরিক অসুস্থতা গভীর সংকটাপন্ন। অথচ বিএসএমএমইউ হাসপাতালের মেডিকেল বোর্ডও তাঁর অসুস্থতা যে দেশে নিরাময়যোগ্য নয় সেটি উল্লেখ করলেও আদালত তাঁকে জামিন দেয়নি। ন্যায়বিচারহীনতার এই বিপজ্জনক ছবি পৃথিবীতে বিরল।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে সরকারি চাপের মুখে গণমাধ্যমে সব সংবাদ প্রকাশিত না হলেও বিশ^ব্যাপী গণমাধ্যমে আসল ঘটনা প্রকাশিত হচ্ছে। স¤প্রতি সুইডেনের সংবাদ মাধ্যম নেত্র নিউজে প্রকাশিত অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কারাবন্দী বিএনপি নেত্রী ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া “পঙ্গু অবস্থায়” আছেন এবং দৈনন্দিন কাজের জন্য তিনি অপরের সাহায্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগকে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সম্পর্কে এই তথ্য দিয়েছে তাঁর চিকিৎসার জন্য গঠিত বিএসএমএমইউ হাসপাতালের একটি মেডিক্যাল বোর্ড। সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে বিএসএমএমইউ এর ভাইস চ্যান্সেলরের স্বাক্ষরিত একটি চিঠির সাথে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটি পাঠানো হয় ২০১৯ সালের ১১ ডিসেম্বর।
পরদিন ১২ ডিসেম্বর, আপিল বিভাগ খালেদা জিয়ার এই ভয়াবহ পঙ্গু অবস্থার প্রতিবেদন পাওয়া সত্বেও জামিনের আবেদন বাতিল করে দেয় সরকারের সর্বোচ্চ মহলের হস্তক্ষেপে।
নেত্র নিউজ খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য নিয়ে মেডিক্যাল বোর্ডের রিপোর্টটির একটি রিডাক্টেড কপিও (স্পর্শকাতর অংশ ঢেকে দেওয়া হয়েছে এমন) প্রকাশ করে। তিনি বেগম জিয়াকে মুক্তি দিয়ে উন্নত হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার সুযোগ প্রদান এবং বেঁচে থাকার সুযোগ দেয়ার আহবান জানান।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিএসএমএমইউ

৫ মার্চ, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ