পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া বলেছেন, এই বিডিআর (বিজিবি) এখন বিডিআর নাই একসময় এরা বাঘ ছিলো, এখন বেড়াল। তাদের হাতে বন্দুক আছে কিন্তু হুকুমও হয় না, নিজেরাও বোধ হয় ভুলেও গেছে। শত্রুরা আমাদের সীমান্তের ভেতরে ঢুকে মানুষ মেরে যায়, তাদের গুলি মারতে পারে না কেন?
তিনি বলেন, আমরা দেশ স্বাধীন করেছি কারো হাতে তুলে দেয়ার জন্য নয়। দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক সময় নষ্ট হয়েছে, এই অত্যাচার আর সহ্য করা যায় না। আসুন মামলা-গুম-খুনের ভয় করে লাভ নেই, সকলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাস্তায় যেতে বললে এখনো রাস্তায় যাওয়ার মতো সাহস ও ক্ষমতা রাখি ইনশাল্লাহ।
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে নিয়ে এই ইফতার মাহফিল হয়। এতে মুক্তিযোদ্ধা দলের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।
ভারতের পণ্য পরিবহনে সরকারের নির্ধারিত ট্রানজিট ফি দেশের জন্য ‘অসন্মানজনক’ বলে মন্তব্য করে খালেদা জিয়া বলেন, ট্রানজিটের জন্য ফি ধরা হয়েছে ১৯৫ টাকা, ২০০ টাকাও না। এটা ছি. ছি.। এই টাকাটা না নেওয়াই উচিৎ। এটা নেয়ার কোনো দাম নাই। এটা দয়া করা নয়। সে জন্য মান-সন্মান নিয়ে থাকতে মুক্তিযোদ্ধাদের সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান খালেদা জিয়া। তিনি বলেন, আজকে দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নেই। স্বাধীনতার জন্য দেশের মুক্তিযোদ্ধারা যুদ্ধ করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, মা-বোনসহ অনেকে রক্ত দিয়েছেন, সন্মান হারিয়েছেন, আজকে দেশের এই অবস্থা দেখার জন্য নয়। এখনো আমরা যারা দেখছি, তারা তো বসে থাকতে পারি না। দেশটাকে রক্ষার জন্য আমাদের সকলকে সাহস করে কথা বলতে হবে।
সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী আরো বলেন, আমরা পানির ন্যায্য হিস্যা পাচ্ছি না। এ নিয়ে কেউ কথা বলছে না, কেউ প্রতিবাদ করছে না। আমরা কারো দয়া চাচ্ছি না। আমরা আমাদের প্রাপ্য ন্যায্য হিৎসা চাচ্ছি, যত টুকু প্রাপ্য সেটা চাচ্ছি।
দেশের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র নেই, নির্বাচিত সরকার নেই্। এটা পুলিশী রাষ্ট্র হয়ে গেছে। আজকে পুলিশ দেশের ভেতরে একের পর এক নিজের আত্মীয়-স্বজনকে মারছে। তারা সাঁড়াশি অভিযানের নামে ১৬ হাজারের মতো মানুষকে জেলে ঢুকিয়েছে। এর মধ্যে বিএনপিরই আছে ৪ হাজারে মতো, সাধারণ মানুষ তো আছে। পুলিশ ও র্যাবকে দিয়ে আজকে দেশের মানুষ হত্যা করা হচ্ছে।
পাশে বসা সাবেক সেনা কর্মকর্তা কর্নেল অলি, মেজর হাফিজ-আইনউদ্দিন মে. জেনারেল ইবরাহিমকে উদ্দেশ্য করে খালেদা জিয়া বলেন, আপনারা আর্মির লোক। বিডিআর হত্যাকা-ের ঘটনা আপনারা জানেন না। কেউ কেনো কথা বলেন না। জোরে কথা বলেন। হাসিনা ক্ষমতায় আসার একমাসের মধ্যে ২৫ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনা ঘটেছে। ৫৭ জন ভালো ভালো অফিসারকে শেষ করে দেয়া হয়েছে। বাকীগুলোকে অবসর পাঠিয়েছে। এর তদন্ত ঠিক মতো হয়নি, কোনো বিচার হয়নি। এর সঙ্গে কারা জড়িত আমরা জানি। সাহস থাকে এগুলো বলা উচিৎ। যদি সাহস করে এগুলো যখন বলবেন, এসব ঘটনার প্রতিবাদ হবে।
তিনি বলেন, এই বিডিআর এখন বিডিআর নাই। একসময় এরা বাঘ ছিলো, এখন বিড়াল। তাদের হাতে বন্দুক আছে কিন্তু হুকুমও হয় না, নিজেরাও বোধ হয় ভুলেও গেছে। দেশের মানুষের ওপর গুলি চালাতে বললে গুলিটা ফট করে চালিয়েও দেবে। কিন্তু যদি বলেন, আমাদের শত্রু, সীমান্তের ভেতরে ঢুকে মানুষ মেরে যায়, তুমি কেন তাদের গুলি মারতে পারো না?
মিয়ানমারের মতো দেশ হেলিকপ্টার নিয়ে আমাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করে কোনো গুলি মারতে পারো না? এই বাঘ বিড়াল হয়েছে। আজকে সরকার সারা দেশের মানুষকে বিড়াল বানিয়ে রাখতে চায়।
বেগম খালেদা জিয়া বলেন, আজকে সকলকে টাইগারের ভূমিকায় আসতে হবে, লায়নের ভূমিকায় আসতে হবে, তাহলে শুধুমাত্র দেশটাকে রক্ষা করা যাবে। আমি সবসময় আপনাদের সাথে আছি, থাকবো। রাস্তায় যেতে বললে এখনো রাস্তায় যাওয়ার মতো সাহস ও ক্ষমতা রাখি ইনশাল্লাহ। আসুন দেশের অনেক ক্ষতি হয়েছে, অনেক সময় নষ্ট হয়েছে, আর এদের এই অত্যাচার সহ্য করা যায় না। মামলা-গুম-খুনের ভয় করে লাভ নেই, সকলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
দেশের চলমান নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি চেয়ারপার্সন বলেন, দেশ আর দেশ নেই। দেশে কোনো আইনের শাসন নেই, গণতন্ত্র নেই, মানবাধিকার, মৌলিক অধিকার ও সুশাসন কোনো কিছুই নেই্। আর নির্বাচন, নির্বাচনের নামে সেটা নির্বাসন হয়ে গেছে। কাজেই নির্বাচন ফিরিয়ে আনার জন্য আজকে দরকার নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। তাহলে নির্বাচন ফিরে আসবে, দেশের মানুষ ভোট দেয়ার সুযোগ পাবে, গণতন্ত্র ফিরে আসবে।
অনুষ্ঠান কর্নেল অলি আহমেদ ও ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও বক্তব্য রাখেন। পরে দলের বীর মুক্তিযোদ্ধা অলি আহমেদ, হাফিজউদ্দিন আহমেদ, আইন উদ্দীন, সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণস্বাস্থ্য সংস্থার ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি সৈয়দ ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খানকে নিয়ে একই টেবিলে বসে ইফতার করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন।
এছাড়া ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাহবুবউল্লাহ, লে. কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন, লে. কর্নেল (অব.) মোদাচ্ছের।
ইফতারে এলডিপির ড. রেদোয়ান আহমেদ, বিএনপির শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কবির রিজভী, খায়রুল কবির খোকন, মশিউর রহমান, হাবিবুর রহমান হাবিব, শাহ আবু জাফর, আতাউর রহমান ঢালী, আজিজুল হক লেবু কাজীসহ বিভিন্ন পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধারা অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।