পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : দেশে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গত ৬ মাসে ৭৯ জন নিহত হয়েছেন। চলতি বছরের জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত এসব ঘটনা ঘটে। এর মধ্যে সর্বাধিক নিহত হয়েছে গভীর রাতে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে। আইন ও শালিস কেন্দ্র (আসক) এ তথ্য জানায়। দেশের জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতে ৬ মাস অনুসন্ধানের পর এ তথ্য তুলে ধরে মানবাধিকার সংগঠনটি। ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ নামের বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- নিয়ে তীব্র বিতর্ক চলছে। দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী, মানবাধিকার সংগঠনগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের প্রতিবাদ করছেন। জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা, প্রভাবশালী দেশ ও সংস্থাগুলো বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের প্রতিবাদ করছেন, নিন্দা জানাচ্ছেন। তারপরও বন্ধ হচ্ছে না ক্রসফায়ার-বন্দুকযুদ্ধ।
আসক বিবৃতিতে জানায়, তাদের দেয়া এ সব তথ্য মূলত বিভিন্ন প্রিন্ট মিডিয়ায় প্রকাশিত খবর থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের দেয়া তথ্য মতে, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে নিহত ৭৯ জনের মধ্যে র্যাবের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে ২৪ জন, পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৩০ জন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সাথে বন্দুকযুদ্ধে ৭ জন এবং বর্ডারগার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাথে বন্দুকযুদ্ধে ১ জন নিহত হয়। ছাড়া পুলিশের নির্যাতনে ৫ জন, গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) নির্যাতনে ১ জন, পুলিশের গুলিতে ৫ জন, বিজিবির গুলিতে ১ জন নিহত হয়। থানা হেফাজতে অসুস্থ হয়ে ৪ জন এবং রহস্যজনকভাবে আরো ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবগুলো ঘটনার পর প্রায় অভিন্ন বক্তব্য দিয়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। আসকের জাফরিন সাত্তার স্বাক্ষরিত বিবৃতিতে বলা হয় এই সময়ে পরিবার ও প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি অনুযায়ী- পুলিশ পরিচয়ে সাদা পোশাকে ৫০ জনকে বাড়ি থেকে আটক করার ঘটনা ঘটেছে। পরবর্তীতে ৬ জনের লাশ পাওয়া গেছে। ২ জন ফেরত এসেছে, ৪ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। অন্যান্যদের ব্যাপারে গ্রেফতারের কথা অস্বীকার করা হয়।
আইন ও সালিশ কেন্দ্র প্রকাশিত এ রিপোর্টে যেসব দৈনিক পত্রিকা থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সেগুলোর নাম যেমন দেয়া হয়েছে; তেমনি জেলাওয়ারী বন্দুকযুদ্ধের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বন্দুকযুদ্ধের তারিখ, নিহত ব্যাক্তির নাম এবং কত তারিখে কোন পত্রিকায় সে রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে সে সম্পর্কে বিস্তারিত বিবরণ তুলে ধরা হয়েছে। একই সঙ্গে নারী ধর্ষণ, শিশু হত্যা, হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ওপর সহিংসতার চিত্র, সাংবাদিক নির্যাতন, রাজনৈতিক সংঘাত, যৌতুককে কেন্দ্র করে নির্যাতন, গৃহপরিচালিকা নির্যাতন, যৌন হয়রানী, সালিশ ও ফতোয়ার মাধ্যমে নারী নির্যাতন, সীমান্ত সংঘাত, বিএসএফের গুলিতে নিহত, কারা হেফাজতে মৃত্যু, গণপিটুনি, এসিড নিক্ষেপ ইত্যাদির ঘটনা প্রকাশিত পত্রিকার নাম, তারিখ ও ঘটনাস্থলের ঠিকানা তুলে ধরা হয়েছে।
আসক জানায়, এ সময়ের মধ্যে দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত ৬ ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে ৬৯৩টি। এতে ১৪২ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ৯ হাজার ৮৫ জন। রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে রাজনৈতিক সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে ১১৮টি। এতে নিহত হয় ১২ জন এবং আহত হন এক হাজার ২শ’ ৫ জন। আইন-শৃঙ্খলা অবনতির কারণে গত ৬ মাসে শিশু নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। ভয়ঙ্কর ও পৈচাষিকভাবে নির্যাতন করে শিশু নির্যাতন করা হয়। এ সময়ে দেশের বিভিন্নস্থানে ৫৯১ জন শিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছে। নির্যাতনের শিকার হয়ে মারা গেছে ২৩৫ জন। আর ১৫ জন শিশু আত্মহত্যা করেছে। জানুয়ারী থেকে জুন পর্যন্ত ৩শ’ ৬ জন নারী ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে ২০ জনকে।
মানবাধিকার সংগঠনটি জানায়, এ সময়ের মধ্যে হিন্দু সম্প্রদায়ের ৫ জন হত্যার শিকার হয়েছেন। পঞ্চগড়, গোপালগঞ্জ, টাঙ্গাইল, ঝিনাইদহ ও পাবনায় হিন্দু ধর্মাবলম্বী মঠের অধ্যক্ষ, সাধু, দর্জি, পুরোহিত ও সেবায়েত খুন হয়। হিন্দুদের ৬৬টি বাড়িঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ৪৯টি মন্দিরে হামলা এবং মূর্তি ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। তাছাড়া ১০০টি হিন্দু পরিবার গ্রাম ছাড়া হয়েছে। গত ৬ মাসে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে ১২ জন নিহত হয়েছে। এসময়ে ৭৪ জন সাংবাদিক বিভিন্ন সময়ে হয়রানির শিকার হয়েছে। কারা হেফাজতে ৪২ জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। গণপিটুনীতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে ৩১টি। এসিড সন্ত্রাসের শিকার হয়েছেন ১৭ জন নারী। যৌন হয়রানীর ফলে ৩ জন নারী আত্মহত্যা করেছেন বলেও জানানো হয়। তাছাড়া পারিবারিক নির্যাতনের শিকার হন ২০৯ জন নারী। এর মধ্যে হত্যা করা হয়েছে ১৪০ জনকে, নির্যাতন পরবর্তীতে আত্মহত্যা করেন ২৭ জন। এছাড়া গত ৬ মাসে ৩৬ জন গৃহপরিচারিকা নির্যাতনের শিকার হয়েছে বলে জানায় আসক। এ সময়ে দেশের ৭টি বিভাগের বিভিন্নস্থানে ১৩ বার ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।