Inqilab Logo

সোমবার, ০১ জুলাই ২০২৪, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ২৪ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে ক্লাউডটেল

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

ফারুক হোসাইন : রাষ্ট্রায়ত্ত মোবাইল ফোন অপারেটর টেলিটকের প্রিফিক্স (০১৫১৫) অবৈধভাবে ব্যবহার করে ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রটোকল) কল টার্মিনেশন করেছে ইন্টারকানেকশন এক্সচেঞ্জ (আইসিএক্স) অপারেটর ক্লাউডটেল। অবৈধ ভিওআইপি ও জালিয়াতির মাধ্যমে কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। কেবল এক মাসেই এক কোটি ২৭ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। রাজস্ব ফাঁকির এই ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটিকে ১১ কোটি ৬৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। ফাঁকি দেয়া রাজস্ব ফেরত দিতে ১৫ দিন এবং জরিমানার অর্থ পরিশোধ করতে ৩০ দিনের সময় দেয়া হয়েছে প্রতিষ্ঠানটিকে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজস্ব ফেরত ও জরিমানার অর্থ পরিশোধ না করলে পিডিআর (পাবলিক ডিমান্ডস রিকভারি অ্যাক্টে) মামলা করতে লিগ্যাল ও লাইসেন্সিং বিভাগকে নির্দেশনা দিয়েছে কমিশন।
কমিশন সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল ক্লাউডটেলকে আইসিএক্স অপারেটর হিসেবে লাইসেন্স প্রদান করে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা। এর পর থেকেই অবৈধ কল টার্মিনেশনে যুক্ত হয়ে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। বিশেষ করে টেলিটকের নাম্বার ব্যবহার করে বিভিন্ন অপারেটরে অবৈধ কল টার্মিনেশন করে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে আসছিল। ২০১৪ সালের ৬ জানুয়ারি গ্রামীণফোনের অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিটিআরসি’র কর্মকর্তাদের একটি প্রতিনিধি দল ক্লাউডটেল প্রতিষ্ঠানটির অপারেশনাল কার্যক্রম পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনের সময় ক্লাউডটেলের সিস্টেম ডাটা ও ‘র’ সিডিআর বিশ্লেষণ ও পরীক্ষা করে বিপুল পরিমাণ ০১৫১৫ সিরিজ হতে কল পরিচালনার বিষয়টি দেখতে পান। তাদের তথ্য থেকে দেখা যায়, ২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসেই কেবল গ্রামীণফোনে ১০ লাখ মিনিট কল টার্মিনেশন করা হয়। একইভাবে রবি, এয়ারটেল, সিটিসেল এবং বাংলালিংকেও কল টার্মিনেশন করা হয়। ওই মাসে বিভিন্ন অপারেটরের মোট ৫ কোটি ৫৭ লাখ ৪২ হাজার ৫৫৪ মিনিট কলে অসামঞ্জস্য পায় বিটিআরসির ওই প্রতিনিধি দল। আর এতে সরকারের এক কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার ৪৪৯ টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়া হয়েছে বলে কমিশনের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
এই বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকির বিষয়টি গত ২৮ ডিসেম্বর কমিশনের এক সভায় আলোচনা করা হয় এবং ক্লাউডটেলের বিরুদ্ধে প্রতারণা করার মামলা, ফোজদারি মামলা ও প্রশাসনিক জরিমানা আরোপসহ কেন অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে ১৫ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করা হয়। একই সাথে কমিশনের অনুমোদন ছাড়া আইসিএক্স লাইসেন্সের বাইরে অন্য লাইসেন্সের সেবা প্রদান করায় গত ২০ মার্চ প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে বনানী থানায় একটি ফৌজদারি মামলা করা হয়। যদিও গত ২৯ এপ্রিল প্রতিষ্ঠানটির নোটিশের জবাবে ক্লাউডটেল কোন ধরনের কল টার্মিনেশনে জড়িত নয় বলে দাবি করা হয়। তবে কমিশনের কাছে তাদের নোটিশের জবাব গ্রহণযোগ্য হয়নি। এজন্য গত ২২ জুন কমিশনের এক সভায় প্রতিষ্ঠানটির ফাঁকি দেয়া এক কোটি ২৭ লাখ ৬৫ হাজার টাকা ১৫ দিনের মধ্যে ফেরত দিতে এবং রাজস্ব ফাঁকি ও কল টার্মিনেশনের জন্য ১১ কোটি ৬৬ লাখ ৬৮ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। রাজস্ব ফাঁকি ও জরিমানার অর্থ আগামী ৩০ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে চিঠি দেয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে অর্থ পরিশোধ করতে না পারলে পাবলিক ডিমান্ড রিকভারি (পিডিআর) অ্যাক্টে মামলা করা হবে বলে বিটিআরসির ওই সভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে ক্লাউডটেল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ