Inqilab Logo

শুক্রবার, ১০ মে ২০২৪, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১, ০১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

উচ্চআদালতে আদেশের পরও দায়িত্ব পেলেন না কেসিসি মেয়র

প্রকাশের সময় : ৩০ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

পরপর চার মেয়র পেল মন্ত্রীর মর্যাদা
আশরাফুল ইসলাম নূর, খুলনা থেকে : খুলনা সিটি কর্পোরেশনের (খুসিক) মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনির সাময়িক বরখাস্তের স্থগিত আদেশ তিন সপ্তাহেও পৌঁছালো না খুলনায়। রিট আবেদনের শুনানির পর গত ৭ জুন হাইকোর্ট বরখাস্তের আদেশ স্থগিত করেছিল। গত ২১ দিনের ১৮ কার্যদিবসে হাইকোর্টের আদেশ না পৌঁছানোর কারণ জানেন না; খুসিকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, সংশ্লিষ্ট আইনজীবী এমনকি স্বয়ং মেয়র মনিরুজ্জামান মনি নিজেও। অপরদিকে, গতকাল বুধবার রংপুর সিটি কর্পোরেশনের (রসিক) মেয়র সরফুদ্দীন আহম্মেদ ঝন্টুকে প্রতিমন্ত্রীর পদমর্যাদা দিয়েছে সরকার। এরআগে গত ২১ জুন ঢাকা উত্তর সিটির (ডিএনসিসি) মেয়র আনিসুল হক ও দক্ষিণ সিটির (ডিএসসিসি) মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকনকে মন্ত্রীর পদমর্যাদা এবং নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে উপ-মন্ত্রীর মর্যাদা দেয়া হয়। স্ব স্ব পদে অধিষ্ঠিত থাকাকালে তারা সংশ্লিষ্ট পদমর্যাদা, বেতন-ভাতা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক সুবিধা পাবেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৬ নভেম্বর সকালে নগরীর পাওয়ার হাউজ মোড়ে বিএনপি’র কর্মসূচি চলাকালে পুলিশের ওপর হামলা ও নাশকতার অভিযোগে খুলনা সদর থানায় ৪৫ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ২৫০ জনের নামে মামলা করেছিল পুলিশ। গত বছরের ৩০ এপ্রিল মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ৫২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২২ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট গৃহীত হওয়ার পর পলাতক ১৬ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়। আবার গেল বছরের ২ নভেম্বর স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। এরপর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন। গেল বছরের ৩ নভেম্বর থেকে প্যানেল মেয়র মোঃ আনিসুর রহমান বিশ্বাষ ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। চলতি বছরের ২৩ মার্চ খুলনা সাময়িক বরখাস্তকৃত সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। নাশকতার একটি মামলায় তিনি খুলনা মহানগর দায়রা জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী জামিন নামঞ্জুর করে তাকে জেলহাজতে প্রেরণের নির্দেশ দেন। এর আগে পলাতক থাকায় গত ১৬ মার্চ মনিরুজ্জামান মনি ও দু’জন কাউন্সিলরসহ ৬ জনের অস্থাবর সম্পদ ক্রোকের নির্দেশ দেন মুখ্য মহানগর হাকিম এমএলবি মেছবাহ উদ্দিন আহমেদ। পরে গত ১৭ এপ্রিল জামিনে মুক্তিলাভ করেন সিটি মেয়র মনিরুজ্জামান মনি। গত ৬ জুন তিনি বরখাস্তের আদেশ কেন বেআইনী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। সরকারি আদেশ স্থগিত চেয়ে সিটি মেয়র মনিরুজ্জামানের করা এক আবেদনের শুনানি শেষে গত ৭ জুন বিচারপতি কামরুল ইসলাম সিদ্দিকী ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সাময়িক বরখাস্তের আদেশ ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেন।
মনির পক্ষের সিনিয়র আইনজীবী নিতাই রায় চৌধুরী জানান, রাজনৈতিকভাবে হয়রানির উদ্দেশ্যে মামলাগুলো করা হয়েছিল। জনগণের নির্বাচিত মেয়রকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় রাজনৈতিক কারণেই বরখাস্ত করেছিল। হাইকোর্টের আদেশের ফলে মনিরুজ্জামান মনির মেয়রের দায়িত্ব পালনে আর বাধা থাকার কথা নয়। কেন জানি না উচ্চ আদালতের আদেশটি এখনো কেসিসিতে পৌঁছায়নি।
কেসিসি’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা গোকুল কৃষ্ণ ঘোষ ভারপ্রাপ্ত মেয়রের সাথে বিদেশ সফরে রয়েছেন। তারপক্ষে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা (উপসচিব) মোঃ আরিফ নাজমুল হাসান বলেন, ‘এখনো পর্যন্ত মন্ত্রণালয় থেকে কিছুই জানানো হয়নি।’
সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের নির্দেশনাটি এখনো কেন সিটি কর্পোরেশন পৌঁছায়নি তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা আমার জানা নেই। দেখি আইনজীবীদের সাথে পরামর্শ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবো।’
উল্লেখ্য, ভারপ্রাপ্ত মেয়র মোঃ আনিসুর রহমান বিশ্বাস বিদেশ সফরে থাকায় বর্তমানে প্যানেল মেয়র-২ শেখ হাফিজুর রহমান ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করছেন। ২০১৩ সালের ১৫ জুন কেসিসি নির্বাচনে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তৎকালীন মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান মনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উচ্চআদালতে আদেশের পরও দায়িত্ব পেলেন না কেসিসি মেয়র
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ