Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সৌন্দর্যে ভরা দুর্গাসাগর

নাছিম উল আলম | প্রকাশের সময় : ১৭ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

দুর্গাসাগর দীঘি। বরিশাল মহানগর থেকে দূরত্ব ১২ কিলোমিটার। চারদিকে বনবিহার। ভেতর দিয়ে সরু পথ। মাঝখানে পানি আর পানি। তারমধ্যে দ্বীপ। সবুজ গাছপালায় পাখির কিচিরমিচির। দীঘির পশ্চিম ও উত্তর তীরে বিরাট সানবাঁধানো ঘাটলা।
পুকুর এলাকার প্রবেশ দ্বারে রয়েছে ছাতার মতো বটবৃক্ষ। যার চতুর্দিকে গোলাকৃতি বাঁধানো। রয়েছে মিনি পার্ক। যেখানে বিচরণ করে হরিণ বানর। নয়নাভিরাম এই দুর্গাসাগর যেকোন ভ্রমন পিপাসুর মন কেড়ে নেবে সহজেই। অঘোষিত পর্যটন কেন্দ্র দুর্গাসাগরের সৌন্দর্য অবলোকন করতে প্রতিদিন বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য লোক আসেন এখানে।

এখানে ঘুরলে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মিলবে দেহ ও মনে প্রশান্তি। দীঘির চারপাশের গাছপালার ভেতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে কখন, কোথায় মন যে হারিয়ে যাবে তা বুঝে ওঠাই কঠিন। উপরি হিসেবে থাকছে দীঘির পানিতে পা ভেজানোর আনন্দ। সব মিলিয়ে ক্লান্তিহীন, শীতল আবহে যেনো মন জুড়িয়ে যায় এখানটায়। তবে এক অজানা কারনে গত কয়েক বছর ধরে এ দীঘিতে পাখির আগমন কমে গেছে।
এদিকে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পর্যটকদের কাছে দীঘিটিকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে কাজ করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দীঘির পানিতে ডানা ঝাপটে ভাসতে দেখা যাবে রাজা হাঁস ও পেচি হাঁস।

তবে ভাগ্য ভালো হলে ডাহুক ও পানকৌড়ির দেখাও মিলতে পারে দীঘির পাড়ে। যদিও দীঘি কেন্দ্রীক পাখির আনাগোনা বাড়ানো জন্য স¤প্রতি কৃত্রিমভাবে গাছে গাছে বসানো হয়েছে পাখির বাসা। কিন্তু হরহামেশা বিলুপ্ত প্রায় নানা পাখির ডাক শোনার পাশাপাশি দেখাও মেলে এখানে।
জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে দীঘি পুনঃখনন করে বর্তমান রূপ দেয়া হয়েছে। এর মাঝের কৃত্রিম দ্বীপটিও সে সময়ে তৈরি করা হয়। দীঘি খনন করতে গিয়ে উদ্ধার হয়েছে বিশালাকৃতির কষ্টি মূর্তি। যা বর্তমানে বরিশাল যাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, বর্তমানে জেলা প্রশাসনের নির্ধারিত নামমাত্র প্রবেশমূল্যের বিনিময়ে দীঘিতে প্রবেশের অনুমোদন মেলে। তবে দুর্গাসাগর দীঘি ঘিরে সাবেক পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন কিছু উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করেছিলেন। ইতোমধ্যে সে প্রকল্প মন্ত্রণালয় ও পরিকল্পনা কমিশনের অনুমোদন শেষে অবকাঠামো নির্মাণ শুরুর পর্যায়ে রয়েছে।

আগামী বছরের জুনের মধ্যে প্রায় ১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে দুর্গাসাগরে বিশ্রামাগার, রেস্টুরেন্ট, পিকনিক স্পট নির্মাণ ছাড়াও পুরনো ঘাটলাগুলো সংস্কার ও পুনঃনির্মাণ করা হবে। সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব একটি বিনোদন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে উঠবে দুর্গাসাগর দীঘি। প্রাথমিকভাবে দীঘির পূর্ব ও দক্ষিণ পাড়ে এসব উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এজন্য জেলা প্রশাসন থেকে প্রয়োজনীয় জমিও পর্যটন করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ইতোমধ্যে।

দুর্গাসাগর থেকে ১৫ কিলোমিটার পশ্চিমে রয়েছে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক-এর পৈত্রিক নিবাস। তার প্রতিষ্ঠিত কলেজ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এখানে রয়েছে শের এ বাংলা জাদুঘর। যেখানে শের এ বাংলা ও তার বংশের অনেক দুস্প্রাপ্য সামগ্রী সংরক্ষিত রয়েছে। আছে দক্ষিণাঞ্চলের আরো বেশ কিছু প্রতœতত্ত¡ নিদর্শনও। দুর্গাসাগর দেখে শের এ বাংলা জাদুঘরও ঘুরে দেখতে ভোলেন না অনেক পর্যটক।
কিভাবে যাবেন : বরিশাল মহানগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল থেকে বানরীপাড়া-ছারছিনা-নেছারাবাদগামি বাস বা থ্রি-হুইলারে করে মাত্র বিশ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাওয়া যায় দুর্গাসাগর দীঘির পশ্চিম পাড়ের প্রধান ফটকে। সেখানে টিকিট সংগ্রহ করেই ভেতরে প্রবেশ করে ঘুরে বেড়ানো যাবে পুরো দুর্গাসাগর এলাকা। দীঘির ঘাটলায় গোসলও করা যায়। তবে এক্ষেত্রে শিশু, নারী ও সাঁতার না জানা যে কাউকে দীঘির পানিতে নামতে বারণ করা হয়।

 



 

Show all comments
  • ** হতদরিদ্র দীনমজুর কহে ** ১৭ জানুয়ারি, ২০২০, ৮:৫০ এএম says : 0
    চলরে মন ঘুরে আসি,দুর্গাসাগর অপরুপ সৌন্দর্যের লীলাভুমি।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দুর্গাসাগর

১৭ জানুয়ারি, ২০২০
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ