Inqilab Logo

মঙ্গলবার ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৬ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বেড়েছে রেমিট্যান্স প্রবাহ

৫৮ শতাংশ এসেছে মধ্যপ্রাচ্যে থেকে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০১ এএম

 রেমিট্যান্সে নগদ প্রণোদনা, নানা উদ্যোগ ও ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ায় ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে দেশে অর্থ পাঠানোর পরিমাণ বাড়িয়েছে প্রবাসী বাংলাদেশিরা। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সউদী আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকেও রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ছে। চলতি (২০১৯-২০) অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর) মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ৫৪৪ কোটি ডলার।

বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ৮৫ টাকা) যার পরিমাণ প্রায় ৪৬ হাজার কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরে প্রথম ছয় মাসে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স এসেছে ৯৪০ কোটি ৩৪ লাখ ডলার। এর মধ্যে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে থাকা প্রবাীসরা পাঠিয়েছেন ৫৪৪ কোটি ৭৯ লাখ ডলার। যা আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ৫৮ শতাংশ। আর বিশ্বের অন্য দেশগুলো থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ৩৯৫ কোটি ৫৫ লাখ ডলার।

প্রবাসী আয় পাঠানোর শীর্ষে থাকা ১০ দেশের মধ্যে পাঁচটি হলো মধ্যপ্রাচ্যের দেশ। এর মধ্যে গত ছয় মাসে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে সউদী আরব থেকে। চলতি অর্থবছরে দেশটি থেকে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৯৫ কোটি ৪২ লাখ ডলার। যা আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ২১ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষ ১০ দেশের মধ্যে অন্য দেশগুলো হচ্ছে- আরব আমিরাত, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।

দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ১৩৩ কোটি ৮৭ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসেছে ১১০ কোটি ১৬ লাখ ডলার, কুয়েত থেকে ৭৪ কোটি ৪৬ লাখ ডলার, যুক্তরাজ্য থেকে ৭৩ কোটি ৫৮ লাখ ডলার, মালয়েশিয়া থেকে ৬৪ কোটি ৩১ লাখ ডলার, ওমান থেকে ৬২ কোটি ৭১ লাখ ডলার, কাতার থেকে ৫৬ কোটি ডলার, ইতালি থেকে ৪১ কোটি ৭২ লাখ ডলার এবং সিঙ্গাপুর থেকে এসেছে ২৩ কোটি ২৪ লাখ ডলার।

এদিকে রেমিট্যান্সের প্রণোদনার অর্থ যেন সহজে প্রবাসীরা পায়, সেজন্য বিভিন্ন শর্ত শিথিল করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। স¤প্রতি এক সার্কুলারে দেড় লাখ টাকার রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা পাওয়ার ক্ষেত্রে কোন প্রকার কাগজপত্র লাগবে না।

আগে ১৫০০ মার্কিন ডলার বা সমমূল্যের অন্যান্য বৈদেশিক মুদ্রা পাঠালে বিনা প্রশ্নে প্রণোদনার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রবাসীদের বুঝার সুবিধার্থে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পাশাপাশি দেড় লাখ টাকার ওপরে রেমিট্যান্সের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিলের সময়সীমাও বাড়ানো হয়েছে। এদিকে দেড় লাখ টাকা বা দেড় হাজার ডলারের বেশি রেমিট্যান্সে প্রেরণকারীকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দাখিল করতে হয়। আগে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রেমিট্যান্স কাগজপত্রাদি দাখিলের সময়সীমা ছিল। এটি বাড়িয়ে ১৫ কার্যদিবস করা হয়েছে।

দেড় লাখ টাকার বেশি রেমিট্যান্সের নগদ প্রণোদনা পাওয়ার জন্য রেমিট্যান্স প্রদানকারী ব্যাংকের শাখায় পাসপোর্টের কপি এবং বিদেশি নিয়োগদাতার দেয়া নিয়োগপত্রের কপি জমা দিতে হয়। রেমিট্যান্স প্রেরণকারী ব্যক্তি ব্যবসায় নিয়োজিত হলে ব্যবসার লাইসেন্স দিতে হয়। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ২০১৮-১৯ অর্থবছরে দেশে রেমিট্যান্স আহরণে রেকর্ড হয়। ওই সময়ে প্রবাসীরা ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। যা অর্থবছর হিসাবে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণ। তারও আগে বিগত চার অর্থবছরের মধ্যে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছিল। সে সময় রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৫৩১ কোটি ৬৯ লাখ মার্কিন ডলার। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে আসে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ১১ লাখ মার্কিন ডলার, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে প্রবাসীদের রেমিট্যান্স পাঠানোর পরিমাণ ছিল এক হাজার ২৭৬ কোটি ৯৪ লাখ মার্কিন ডলার। আর ২০১৭-১৮ অর্থবছরের রেমিট্যান্স আসে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ডলার।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: রেমিট্যান্স প্রবাহ

১৬ জানুয়ারি, ২০২০

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ