পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তালুকদার হারুন : কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ শাখা দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। এখানে অবাধে ঘুষের লেনদেন হয়ে থাকে। প্রতিদিনই এ শাখায় তিন থেকে চার লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ লেনদেন হয়ে থাকে। এখানে এসে ঘুষ না দিয়ে কেউ পার পান না। অধিদফতরের মহাপরিচালক থেকে পিয়নও জানেন এ শাখায় ঘুষ ছাড়া কোনো সঙ্গনিরোধ সার্টিফিকেট মিলে না। এটি ওপেন সিক্রেট। বছরের পর বছর এভাবেই চলছে এ শাখা। সরকার পরিবর্তন হয়েছে, বদল হয়েছেন মন্ত্রী, সচিব, ডিজি। কিন্তু বন্ধ হয়নি এ শাখার ঘুষ-দুর্নীতি। এভাবেই চলছে খামারবাড়ির কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের সঙ্গনিরোধ শাখা।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, এ শাখায় কর্মরত একটি ছোট সিন্ডিকেট সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে থাকেন। তিনজনের সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন বর্তমান মহাপরিচালক মোঃ হামিদুর রহমানের ডান হাত বলে পরিচিত উপ-পরিচালক (আমদানি)। আর রয়েছেন এ শাখার পরিচালক। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশী ঘুষ লেনদেন করে থাকেন এ শাখার উচ্চমান সহকারী মোঃ নাসির উদ্দিন। তিনি দীর্ঘদিন যাবত এ শাখায় কর্মরত আছেন। জানা গেছে, টাকা না দিলে নাসির উদ্দিন ব্যবসায়ীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে থাকেন। গালিগালাজ করতেও ছাড়েন না। তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। তিনি দম্ভ করে বলে বেড়ান, তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষমতা কারো নেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিনি কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে লিঁয়াজো করে চলেন। প্রতি মাসে তাদেরকে মোটা অংকের টাকা ঘুষ দিয়ে ম্যানেজ করে চলেন। বর্তমানে অধিদফতরের প্রশাসন বিভাগে কর্মরত ড. জিএম ফারুক ডন, অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (এডিডি) কিছু দিন আগে তিনি উদ্ভিদ সঙ্গনিরোধ শাখায় কর্মরত ছিলেন। সেসময় নাসির উদ্দিনের সাথে তার সখ্যতা গড়ে উঠে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, কিছুদিন আগে মোঃ নাসির উদ্দিনের বদলি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে অতিরিক্ত উপ-পরিচালক জিএম ফারুক ডন এর মাধ্যমে তদবির করে তিনি এই বদলি ঠেকান। তাছাড়া উদ্ভিদ সংরক্ষণ উইং-এর পরিচালক মোঃ নাসির উদ্দিন আশ্বাস দেন, যতদিন তিনি পরিচালক হিসেবে আছেন, ততদিন কেউ তাকে বদলি করতে পারবেন না। কারণ মহাপরিচালক ও পরিচালক (প্রশাসন) তার বন্ধু। তবে শর্ত হচ্ছে আইপির (ইমপোর্ট পারমিশন) বিনিময়ে তাকে টাকা প্রদান করতে হবে। এইসঙ্গে বিষয়টি গোপন রাখতে হবে। জানা গেছে, বদলি ঠেতাতে নাসির উদ্দিন অফিসে লেনদেন করেন না। তিনি লেনদেন করেন ‘বিকাশ’ এবং ‘ব্যাংকের মাধ্যমে। মোঃ নাসির উদ্দিনের রয়েছে একাধিক ব্যাংক একাউন্ট। যে কোন ব্যবসায়ীকে বিভিন্ন ধরনের আইপির জন্য মোটা অংকের টাকা দাবি করেন পরিচালক ও অন্য কর্মকর্তাদের কথা বলে। আইপিতে আপত্তি দেয়া হবে বলে ব্যবসায়ীকে হুমকি দেন। ফলে ব্যবসায়ীরা বাধ্য হয়ে তাকে টাকা দিয়ে যান। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন সময়ে পাট বীজের যে বরাদ্দ দেয়া হয়, তিনি মোটা টাকার বিনিময়ে অনেক ব্যবসায়ীকে দ্বিগুণ বরাদ্দ দিয়ে থাকেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মোঃ নাসির উদ্দিন বিভিন্ন নামে ভুয়া ট্রেড লাইসেন্স করে পাট বীজ নেন এবং পরে তা অন্য ব্যবসায়ীদের কাছে হস্তান্তর করেন টাকার বিনিময়ে। এমনও তথ্য পাওয়া যায় নিজে পরিচালক ও উপ-পরিচালকের স্বাক্ষর নকল করে আইপি দিয়েছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে।
সূত্র জানায়, বিভিন্ন কোম্পানী মোঃ নাসির উদ্দিনের কাছে আইপি পাওয়ার জন্য জমা দিলে আবেদন থেকে শুরু করে সব কাজ করে দেন তিনি। শুধু তাই নয়, কোম্পানী ট্রেজারি চালানের টাকা তার কাছে দিতে বলেন। মোঃ নাসির উদ্দিন ওইসব ট্রেজারি চালানের টাকা জমা না দিয়ে পূর্বে জমাকৃত ট্রেজারি চালানের টাকা তার কাছে দিতে বলেন। তিনি ট্রেজারি চালানের টাকা জমা না দিয়ে পূর্বে জমাকৃত ট্রেজারি চালানের কপি আবেদনের সাথে জমা দিয়ে দেন। বিষয়টি কেউ খতিয়ে না দেখায় তিনি পার পেয়ে যাচ্ছেন। এভাবে নাসির উদ্দিন বিত্ত-বৈভবের অবৈধ মালিক হয়েছেন। তার চলাফেরা দেখে বোঝার উপায় নেই যে তিনি একজন সাধারণ স্টাফ। সাভারে রাজকীয় ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করেন। বর্তমানে তিনি কয়েক কোটি টাকার মালিক। এলাকায় চলেন জমিদারি স্টাইলে। অথচ তিনি একজন সাধারণ কেরানী। প্রতিদিন তার আয় প্রায় এক লাখ টাকা।
এসব দুর্নীতি ও অনিয়মের বিষয়ে মোঃ নাসির উদ্দিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা করা হলে তিনি সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি আরো বলেন, তার শক্ররা ঈর্ষান্বিত হয়ে তার বিরুদ্ধে এসব অভিযোগ করেছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।