পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ত্রুটির কারণে প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানই ইভিএম মেশিন বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।
তিনি বলেন, আমেরিকাতে একসময়ে মেশিনে ভোট নিতে চাচ্ছিল। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে গতবছর আমেরিকার সবচেয়ে বড় যে কোম্পানি যারা এই মেশিন (ইভিএম) তৈরি করে এবং যারা বিগত বছরগুলোতে ভোটের জন্য এসব মেশিন প্রমোট করেছে গতবছর তারা নিজেরাই ত্রুটির বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে অফিসিয়ালি ডিক্লার্ড করেছে যে, আমরা এই মেশিন আর বিক্রি করবো না, এই মেশিনের ওপরে কারো আস্থা নাই। গতকাল (রোববার) বিকেলে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট কারচুপির নানা দিক তুলে ধরতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আগামী ৩০ জানুয়ারি ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি নির্বাচনে কেএম নুরুল হুদা কমিশনের নেতৃত্বে ইভিএম ব্যবহারের যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তা ভবিষ্যতে সরকার পরিবর্তনের যেকোনো নির্বাচনে ‘প্রযুক্তির মাধ্যমে ভোটাধিকার হত্যার এক নিঃশব্দ প্রকল্প বাস্তবায়নের দুরভিসন্ধি মাত্র। বিএনপি বাংলাদেশের নির্বাচনী ব্যবস্থায় এই মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্তকে এক মহাষড়যন্ত্র মনে করে। জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার দায়িত্ববোধ থেকে বিএনপি নির্বাচন কমিশনের ইভিএম ব্যবহারের এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ ও বাতিলের দাবি জানাচ্ছে। আমরা আশা করি, একটি সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন জনগণের অধিকারহানীর ইভিএম মেশিন ব্যবহারের সিদ্ধান্ত অবিলম্বে বাতিল করে প্রচলিত ব্যবস্থায় ব্যালটের মাধ্যমে ভোটের ব্যবস্থা করে জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘেœ করবেন।
ইভিএমে ভোট হলে কী করবেন প্রশ্ন করা হলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা পুরো ব্যবস্থাটা বাতিল করার জন্য বলেছি। আমরা দেখবো, এতে নির্বাচন কিভাবে রি-অ্যাক্ট করছে। সেটা দেখার পরে তারপরে আমরা বাকী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
নির্বাচন কমিশনের একজন সদস্য বলেছেন যে, ইভিএম নিয়ে আপনারা যেটা বলেছেন যে, এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারনা। প্রয়োজনে আপনারা বিশেষজ্ঞ নিয়ে ইভিএম পরীক্ষা করতে পারেন যে মেশিনগুলো ঠিক আছে কিনা-এরকম প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমরা ইভিএমে ভোট চাই না। এটাতে ভোট কারচুপির বহু সুযোগ রয়েছে তা আমরা বলেছি। সেই মেশিন যেটাই হোক। এরপর কমিশনে ওই সদস্যের বক্তব্য ধোপে টিকে না। আমাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত যে, আমরা ইভিএম চাচ্ছি না। মেশিন তো পরের কথা। আপনি রিমোট কন্ট্রোলে ভোট কারচুপি করতে পারেন। আমেরিকান নির্বাচনে সেটা প্রমাণিত হয়েছে।
ইভিএমে ভোট কেনো বিরোধিতা করছে তার কারণ তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রোগ্রামিংয়ে ভ্রান্তি, যান্ত্রিক ত্রুটি, বিদ্বেষাত্মক টেম্পারিং বা কারসাজি, কস্পিউটারভিত্তিক ভোট প্রদান যন্ত্রের অন্তর্নিহিত দুর্বলতা, উন্নত প্রযুক্তির মাধ্যমে ইভিএম নিয়ন্ত্রণের সুযোগ ও সম্ভাবনা এবং নির্বাচন পরিচালনার সাথে সম্পৃক্তদের বিশেষ দলের পক্ষে নির্বাচনী ফলাফল পাইয়ে দেয়ার সুযোগ ইত্যাদি সহ নানা নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কারণে নির্বাচন সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষই নির্বাচনে ইভিএমের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে। নির্বাচনে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ এবং স্টেকহোল্ডারদের বিরোধিতা সত্তে¡ও সব কয়টি আসনে ইভিএম ব্যবহারে একতরফা সিদ্ধান্ত আসন্ন সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে নিঃশব্দ ডিজিটাল কারচুপির এক মহা ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, বর্তমান ফ্যাসিবাদ সরকারের অধীরে যখন দেশের সমগ্র রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান একটি দলীয় সেবাদাস প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে, সে পরিপ্রেক্ষিতে ইভিএমে ভোট গ্রহনের সিদ্ধান্ত জনগণের ভোট প্রদানের সমস্ত অধিকার আওয়ামী দলবাজ নির্বাচন কমিশন ও সেবাদাস রাষ্ট্রীয় বংশবদদের হাতে সমর্পণের শামীল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির ভোটার ও প্রার্থীবিহীন নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যরাতের ভোট ডাকাতির নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এদেশের মানুষসহ সমগ্র বিশ্ব অবলোকন করেছে। যেখানে নির্বাচন কমিশন,সরকার, রাষ্ট্রযন্ত্র ও আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ উলঙ্গভাবে একপক্ষ হয়ে এদেশের জনগণ, বিএনপিসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলকে প্রতিপক্ষ হিসেবে দাঁড় করিয়ে সমস্ত নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তছনছ করে দিয়েছে। বাস্তবিক অর্থে নির্বাচন কমিশন, সরকার ও আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী অপকর্মের মাধ্যমে রাষ্ট্রের প্রধান মালিক জনগণকে পরাজিত করেছে।
সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুন্নের অপতৎপরতা চলছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, চক্রান্ত বাস্তবায়নে আমাদের দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তিকেও ব্যবহার করার ঘৃণ্য অপতৎপরতা চলছে। যার অংশ হিসেবে ইভিএম প্রকল্পে সেনা সদস্য নিয়োগের প্রচার চালিয়ে বর্তমান ফ্যাসিস্ট সরকার ও বংশবদ নির্বাচন কমিশন এক গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি রক্ষায় সদা নিয়োজিত বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষের শেষ ভরসারস্থল দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে সকল বির্তকের বাইরে রাখা সকল নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের দায়িত্ব ও কর্তব্য। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে যেকোনো ধরনের বির্তকিত কাজের বাইরে রাখার উদাত্ত আহবান জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে এসময় উপস্থিত ছিলেন- স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।#
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।