পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের (এবিটি) সন্দেহভাজন দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। গত রোববার রাতে রাজধানীর ফরিদাবাদ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে ডিবির দাবি।
ডিবির ভাষ্যমতে, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন মাওলানা মো. নাইম ওরফে সাইফুল ইসলাম ওরফে সাদ (৩০) ও সোহায়েল আহম্মেদ ওরফে সোভেল (২৮)। তারা কামরাঙ্গীরচর ও ফরিদাবাদ এলাকায় আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন। তাদের পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল সোমবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। সেখানে ডিবির যুগ্ম কমিশনার আবদুল বাতেন বলেন, ১৩ জুন কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে এবিটির দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে নাইম ও সোহেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা এবিটির ঢাকা অঞ্চলের দাওয়াতি শাখার নেতা। তারা দু’জনই মাদ্রাসার শিক্ষক। নাইম ফরিদাবাদ মাদ্রাসার শিক্ষক। আর আল আরাফা মাদরাসার শিক্ষক হচ্ছে সোহেল।
বিশেষ অভিযানের পর পুলিশ জঙ্গিদের চক্র ভাঙতে পেরেছে কি না সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে আবদুল বাতেন বলেন, চক্র তো হাঁড়ি না যে ভেঙে ফেলা যাবে। অনেক তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। অনেক আসামি শনাক্ত হয়েছে। কিন্তু সবাই গ্রেপ্তার হয়নি। এ পর্যন্ত জঙ্গি ইস্যুতে ৪৪টি মামলা হয়েছে। মামলার সূত্র ধরে অনেক জঙ্গিকে গ্রেপ্তার করা হলেও যারা মামলার বাইরে তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
তিনি বলেন, গত ১৩ জুন রাজধানীর কামরাঙ্গীর চর থেকে মোজাহিদুল ইসলাম ও আরিফুল ইসলাম সোলাইয়মান নামে এবিটির আরো দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। তাদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী এদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা ঢাকা অঞ্চলের এবিটির দাওয়াতি শাখার দায়িত্বশীল পর্যায়ের নেতা।
প্রমাণ ছাড়া বিভিন্ন জঙ্গিদের ধরা হয়। পরে আদালত থেকে তারা জামিনে বেরিয়ে যায়। পুলিশ কেন তাদের অভিযোগ প্রমাণ করতে পারে না?- সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আদালতে প্রমাণ হয়নি এমন কোনো তথ্য আমার কাছে নেই। আমরা যথেষ্ট প্রমাণাদি নিয়ে আসামি গ্রেপ্তার করি। তবে জামিন দেয়া আদালতের বিষয়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের মিডিয়া শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ব্লগার ও লেখক খুনের অভিযোগ রয়েছে। এর আগে তাদের ধরিয়ে দেয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করেছে ডিএমপি। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ডিবি দক্ষিণ বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাশরুকুর রহমান খালেদ।
এদিকে গ্রেপ্তারকৃতদের এবিটি’র দুই সদস্যের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। গতকাল সোমবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শফিফুল ইসলাম আসামিদের হাজির করে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় ১০ দিন রিমান্ডে নেয়ার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনসারী এ রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তাঁরা হলেন নাঈম ওরফে সাইফুল ওরফে সাদ ও সোহেল আহম্মেদ।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, গত ১৩ জুন রাজধানীর কামরাঙ্গীরচর থানার ব্যাটারিঘাট আল-মক্কা জামে মসজিদের গলির মধ্যে আসামি আরিফুল ইসলাম সোলাইমানী ওরফে আরাফাত ও সৈয়দ মোহাম্মদ মোজাহিদুল ইসলাম সাফিরা সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেন। তাঁরা রাজনীতিবিদ, ব্লগার, লেখক ও প্রকাশকদের হত্যার জন্য একত্র হয়ে ষড়যন্ত্র করেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ওই দিনই তাঁদের গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ।
পরবর্তী সময়ে ১৪ জুন তাঁদের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেয়া হলে তাঁরা মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তাঁদের সঙ্গে কারা কারা জড়িত আছেন, তা জানান। তার ভিত্তিতে পুরান ঢাকার ফরিদাবাদ ও কামরাঙ্গীরচর এলাকা থেকে নাঈম ও সোহায়েলকে আটক করা হয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ২৬ মে আনসারুল্লাহ বাংলা টিমকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে সরকার। এর আগে ২০০৯ সালে হিযবুত তাহরির এবং ২০০৫ সালে জেএমবিসহ চারটি সংগঠন নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।