Inqilab Logo

শুক্রবার ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১, ০৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতি অকাল বর্ষণে সঙ্কটে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ জানুয়ারি, ২০২০, ১২:০২ এএম

পৌষের দু’দফার অকাল বর্ষণে কৃষি নির্ভর দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতিতে মারাত্মক বিপর্যয় সৃষ্টি হতে যাচ্ছে। ফসল আমন ছাড়াও গোল আলু ও রবি ফসলে বিপর্যয় ডেকে এনেছে এ বর্ষণ। গত ২৭ ডিসেম্বর দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ১১-১৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরে গতকাল সকালের পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় আরো প্রায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতে জনজীবনে বিপর্যয়ের পাশাপাশি কৃষি ব্যবস্থায় চরম সঙ্কট সৃষ্টি করেছে।
মাঠে থাকা উঠতি আমন ছাড়াও গোল আলু ও গমসহ বিভিন্ন রবি ফসলের ক্ষতি কৃষকদের আরেক দফা সর্বশান্ত করতে উদ্যত। গত মে মাসে ঘূর্ণিঝড় ফণি ও নভেম্বরে বুলবুলের আঘাতে আমন ফসলের ক্ষতির পরে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দু’দফার বর্ষণ কৃষি অর্থনীতিতে সঙ্কটের মাত্রা যথেষ্ট বৃদ্ধি করল।

পাকা আমন ধান কর্তন এবং কৃষকের উঠানে থাকা কাটা ধানের ব্যাপক ক্ষতি করছে এ বর্ষণ। এমনকি যেসব কৃষক ধান সিদ্ধ করে ফেলেছে তাও নষ্ট হবার জোগার রোদের অভাবে। গত তিনদিন দক্ষিণাঞ্চলে সূর্যের দেখা মেলেনি। এবার দক্ষিণাঞ্চলে ৭ লক্ষাধিক হেক্টর জমিতে প্রায় ১৬ লাখ টন আমন চাল পাবার কথা। কিন্তু দু’দফার ঘূর্ণিঝড়ের পরে এ অকাল বর্ষণ আমনে চরম বিপর্যয় সৃষ্টি করল।

পাশাপাশি মাঠে থাকা গোল আলুরও ব্যাপক ক্ষতি করেছে এ বৃষ্টিপাত। দক্ষিণাঞ্চলে এবার প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমিতে লক্ষাধিক টন গোল আলু উৎপাদনের কথা। প্রথম দফার বৃষ্টিপাতে তেমন ক্ষতি না হলেও গত দু’দিনের মাঝারি থেকে ভারী বর্র্ষণে বেশিরভাগ এলাকার আলুর জমিতে পানি জমেছে। ফলে জমির আলু সম্পূর্র্ণ বিনষ্ট হবার আশঙ্কা করছেন কৃষিবিদরা। অপরদিকে এ বৃষ্টিপাত শাক-সবজিসহ অনেক রবি ফসলেরও ক্ষতি বৃদ্ধি করেছে যথেষ্ট।
তবে বৃষ্টির আগে মৃদু শৈত্য প্রবাহে বোরো বীজতলা ‘কোল্ড ইনজুরি’ ও গোল আলুর জমি ‘লেট বøাইট’ রোগে আক্রান্ত হবার যে আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছিল, তা কিছুটা কেটে গেলেও এবার দক্ষিণাঞ্চলের কৃষি ব্যবস্থায় যথেষ্ট সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে কয়েক দফার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে। এ বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে আমনের মত গমের জন্যও আরো বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। তবে আজ থেকে বৃষ্টিপাতের প্রবনতা হ্রাস পেয়ে আরেক দফা শৈত্য প্রবাহের আশঙ্কা রয়েছে দক্ষিণাঞ্চলে। ফলে গোল আলু ও বোরো বীজতলার জন্য পুনরায় ঝুঁকি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক জানিয়েছেন, ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান সংগ্রহসহ কৃষকদের প্রয়োজনীয় সব পরামর্শ প্রদানের জন্য মাঠ কর্মীদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তার মতে, বৃষ্টি কমে যাবার সাথে সিদ্ধ ধান দ্রুততম সময়ের মধ্যে শুকানো এবং কর্তনকৃত আমন ধানও রোদে শুকাবার পরই তা মারাই করতে হবে। এছাড়া যেসব গোল আলুর জমিতে পানি জমেছে তা দ্রুত নিষ্কাশনের চেষ্টা করারও পরামর্শ দিয়েছেন এ কৃষিবিদ। তবে এ অকাল বর্ষণে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতির হিসেব পেতে আরো কয়েকদিন সময় লাগবে বলে জানান তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কৃষি

২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩
৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ