পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
অপরূপ সৌন্দর্য্যরে লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকটা। একই সৈকত থেকে সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দেখার মতো জায়গা দ্বিতীয়টি আর এদেশে নেই। অনিন্দ্য সুন্দর সমুদ্র সৈকত ছাড়াও যেখানে আছে বেড়ানোর মতো আরও নানান আকর্ষণ। তাইতো শীত, গ্রীষ্ম, বর্ষাসহ সকল ঋতুতেই মৌসুমী পাখির কলরবে মুখোরিত থাকে সমুদ্রতট। এখানে নেই কৃত্রিমতার কোন ছাপ।
রয়েছে আন্ধার মানিক নদী মোহনা, সুন্দর বনের পূর্বাংশ টেংরাগিরির ফাতরার বন, ফকির হাট, পায়রা নদীর মোহনা, লাল দিয়ার চর, কচিখালী, কটকা, সুন্দর বন, রাবনাবাদ চ্যানেল, পায়রা বন্দর। এছাড়া রাবনাবাদ চ্যানেলের ওপারে চর মৌডুবী। যেখানে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা সবুজ অরণ্য ও বন্য প্রাণী।
এছাড়া আরও রয়েছে সোনার চর, চর কুকরি, চর মুকরী, সমুদ্রের মাঝে জেগে ওঠা চর বিজয়, ক্রাবল্যান্ড। এসব স্পটে অতিথি পাখির কিঁচিরমিচির কোলাহল আর লাল কাঁকড়ার ছুটোছুটি। ঘুরতে আসলে আরো দেখতে পারবেন আদিবাসী রাখাইন, রাখাইনদের শ্রীমঙ্গল বৌদ্ধ বিহার, কুয়াকাটার কুয়া, এশিয়ার অন্যতম বৌদ্ধ ভাস্কর্য ও রাখাইনদের তাঁত পল্লী। রাখাইনদের কৃষ্টি কালচার ও জীবনযাত্রা সম্পর্কেও জানতে পারবেন পর্যটকরা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরুপ লীলাভূমি উপভোগ করতে দেরি না করে এখনই চলে আসুন কুয়াকাটায়।
সকালে কোথায় যাবেন : খুব সকালে হোটেলের রুম থেকে বের হয়ে কুয়াকাটার জিরো পয়েন্ট। বীচ থেকে বেরিয়ে পড়বেন চর গঙ্গামতি। চর গঙ্গামতির বীচে দাঁড়িয়ে দেখতে পারবেন সমুদ্রের বুক চিরে টকটকে লাল সূর্য উদিত হওয়ায় দৃশ্য। আরও দেখবেন লাল কাকড়া অবাধ ছোটাছুটি সাথে রয়েছে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। সেখানে সকালের নাস্তা সেরে মিশ্রী পাড়ায় গিয়ে দেখবেন এশিয়ার অন্যতম বৌদ্ধ বিহার। আছে আদিবাসী রাখাইনদের কৃষ্টিকালচার। সেখান থেকে ফিরে হোটেল কক্ষে এসে দুপুর খাবার খেয়ে কিছুটা বিশ্রাম।
দুপুরে কোথায় যাবেন : হোটেল থেকে বের হয়ে ফের কুয়াকাটা জিরো পয়েন্ট। সেখান থেকে প্রায় পাঁচশ গজ দূরে গিয়ে দেখতে পারবেন কুয়াকাটার ঐতিহ্য কুয়া, সীমা বৌদ্ধ বিহার, প্রতœতাত্বিক নিদর্শণ প্রায় ৩শ’ বছরের পুরোনে নৌকা। সেখান থেকে লেবুর চর। লেবুর চরে দেখতে পারবেন বিশাল এলাকা নিয়ে ম্যানগ্রোভ বনাঞ্চল। রয়েছে শুটকি পল্লী ও জেলেদের জীবন জীবিকার দৃশ্য। সেখান থেকে ফিরে সন্ধ্যায় সৈকতের বীচ।
সন্ধ্যায় কি করবেন : বীচের দাঁড়িয়ে দেখবেন সূর্য অস্তের বিরল দৃশ্য। পরে বীচে পাতা সারিবদ্ধ বেঞ্চিতে বসে দেখবেন সাগরের ঢেউ আর শো শো গর্জন। রাতে বীচের সাথেই রয়েছে মাছ ফ্রাইয়ের দোকান। সেখানে বসে খেতে পারবেন কাকড়াসহ দেশী বিদেশী বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ফ্রাই। এছাড়া ফাতরার বন, চর বিজয়, পায়রা বন্দরসহ একটু দূরের দর্শনীয় স্থানে যেতে চাইলে হাতে সময় বাড়িয়ে নিতে হবে আরও দুই একদিন।
কোথায় থাকবেন : কুয়াকাটায় অবোকাঠামোগত উন্নয়ন হয়েছে। ফাইভ স্টার ও থ্রি স্টার মানের হোটেলসহ শতাধিক আবাসিক হোটেল গড়ে উঠেছে এখানে। পর্যটকদের থাকার জন্য এখন রুমের কোন সঙ্কট নেই। খাবার হোটেলসহ পর্যটক বান্ধব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও বেড়েছে। পরিবর্তন হয়েছে মানুষের জীবন যাত্রার।
কিভাবে যাবেন কুয়াকাটা : দেশের যে কোন স্থান থেকে সড়ক পথে সহজেই কুয়াকাটায় আসতে পারবেন পর্যটকরা। খুলনা যশোর, বেনাপোল, রাজশাহী, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, দিনাজপুর, লালমনিরহাট, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের যে কোন জায়গা থেকে বাস-কোচে কুয়াকাটার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। শাকুরা পরিবহন, কনক পরিবহন, তুহিন পরিবহন, সৌদিয়া, কুয়াকাটা এক্সপ্রেস, ঈগল পরিবহনসহ প্রায় অর্ধ শতাধিক এসি নন এসি বাস-কোচ প্রতিদিন আসে কুয়াকাটায়।
এছাড়া ঢাকা থেকে বিলাস বহুল লঞ্চ যোগেও কুয়াকাটা আসতে পারবেন। ঢাকা থেকে বরিশাল, পটুয়াখালী, আমতলী অথবা কলাপাড়া হয়ে কুয়াকাটা এখন সহজ রুট। অ্যাডভেনচার ভ্রমণে উৎসাহীদের জন্য লঞ্চ ভ্রমণ আলাদা রোমাঞ্চ বয়ে আনবে। বিলাস বহুল এই লঞ্চ ভ্রমণের পাশাপাশি পদ্মা মেঘনা বড় বড় নদী এবং পাশে থাকা সৌন্দর্য পর্যটকদের বাড়তি বিনোদন দিবে। পদ্মা-লেবু খালী ব্রিজের কাজ সম্পন্ন হলে সড়ক যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থা আরো উন্নত হবে।
ঢাকার সদরঘাট থেকে পটুয়াখালী যায় এমভি পারাবত, এমভি সৈকত, এমভি সুন্দরবন প্রভৃতি লঞ্চ। ভাড়া প্রথম শ্রেণির একক কেবিন ৮০০ থেকে এক হাজার টাকা, ডাবল কেবিন এক হাজার ৮০০ থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।