Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

টাকা না দিলে গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ -বিটিআরসি চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০২০, ৭:৫৬ পিএম

তিন মাসের মধ্যে গ্রামীণফোন ২ হাজার কোটি টাকা না দিলে অপারেটরটির বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেবে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা (বিটিআরসি)। সংস্থাটির চেয়ারম্যান মোঃ জহুরুল হক বলেন, সরঞ্জাম ও প্যাকেজের অনুমোদনে নিষেধাজ্ঞা তুলে নিতে সুপ্রিম কোর্ট গ্রামীণফোনকে দুই হাজার কোটি টাকা জমা দিতে বলেছেন। তারা এটা না দিলে আইন অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) বিটিআরসি ভবনে টেলিকম রিপোটার্স নেটওয়ার্ক বাংলাদেশের (টিআরএনবি) সদস্যদের সঙ্গে নতুন বছরের শুভেচ্ছা বিনিময়কালে তিনি এসব কথা বলেন।

মোঃ জহুরুল হক বলেন, গ্রামীণফোনের বিরুদ্ধে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থার প্রয়োগ করতে শুরু করেছিলাম, তখনই তারা আদালতে গেছে। আদালতের আদেশ আমরাও মানবো। আদালতের আদেশ তারা না মানলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। তিনি বলেন, যেই পাওনা টাকা আমরা চাইলাম, তখন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মতো যা হয়, যার কাছে টাকা চাওয়া হয়, সে বলে, তুমি টাকা পাবা না। আর যে চায়, সে বলে, আমার ন্যায্য টাকা।

নতুন পদক্ষেপ কি প্রশাসক বসানো হতে পারে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আরও বলেন, আইনে যেসব ব্যবস্থা নেওয়ার সুযোগ আছে, সেগুলোই নেওয়া হবে। এর বাইরে বিটিআরসি যাবে না। এ সময় টেলিকম অপারেটরদের কোয়ালিটি অব সার্ভিস নিয়েও কথা বলেন চেয়ারম্যান মো. জহুরুল হক।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিটিআরসির মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহফুজুল করিম মজুমদার বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্যটা এখন মোবাইল অপারেটরের মধ্যে সীমাবদ্ধ আছে, এটাকে আরও প্রসারিত করবো। আমাদের ইকো-সিস্টেমের মধ্যে যারা আমাদের সার্ভিস প্রোভাইডার আছে, প্রত্যেকের জন্য কোয়ালিটি অব সার্ভিস-এর টেস্ট হবে। মোবাইল টাওয়ারে স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর রেডিয়েশন পাওয়া যায়নি বলেও জানান তিনি।

গ্রামীণফোনের কাছে বিটিআরসি ১২ হাজার ৫৮০ কোটি টাকা পাওনা দাবি করছে। রবি আজিয়াটার কাছে দাবি করা হচ্ছে ৮৬৭ কোটি টাকা। গ্রামীণফোনের ওপর নিরীক্ষা করা হয় ১৯৯৭ থেকে ২০১১ পর্যন্ত। আর রবির ওপর নিরীক্ষা করা হয় ১৯৯৭ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত। বিটিআরসি বলছে, রাজস্ব ভাগাভাগি, করসহ বিভিন্ন খাতে এ টাকা ফাঁকি দিয়েছে অপারেটর দুটি। অবশ্য শুরু থেকেই গ্রামীণফোন ও রবি নিরীক্ষার দাবির বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করে আসছে। তারা চায়, সালিসের মাধ্যমে পাওনার বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হোক। যদিও বিটিআরসি বলে আসছে, তাদের আইনে সালিসের সুযোগ নেই। পাওনা আদায়ে ব্যান্ডউইথ কমিয়ে দেওয়া, প্যাকেজ ও সরঞ্জাম আমদানির অনুমোদন বন্ধ করার পরও সাড়া না পেয়ে বিটিআরসি অপারেটর দুটিকে লাইসেন্স বাতিলের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। এ নিয়ে আদালতে যায় গ্রামীণফোন ও রবি।

গ্রামীণফোনের আবেদনের পর হাইকোর্ট বিটিআরসির পদক্ষেপের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিলেন। পরে গত ২৪ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ বলেছেন, গ্রামীণফোনকে তিন মাসের মধ্যে দুই হাজার কোটি পরিশোধ করতে হবে। নইলে হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা বাতিল হবে। এরই মধ্যে গ্রামীণফোনের বেশির ভাগ শেয়ারের মালিক টেলিনর এশিয়া বিষয়টি নিয়ে সালিস চেয়ে নোটিশ পাঠিয়েছে, যাকে ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার প্রেসিডেন্টকে উকিল নোটিশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে টেলিনর বলেছে, তারা উকিল নোটিশ নয়, আমন্ত্রণ পাঠিয়েছে।

অনুষ্ঠানে বিটিআরসির কমিশনার (তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা) মো. আমিনুল হাসান, মহাপরিচালক (তরঙ্গ ব্যবস্থাপনা) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রামীণফোন


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ