Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জেল হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্র প্রমাণ হলেও বিচার না হওয়ায় আমি স্তম্ভিত : প্রধান বিচারপতি

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

গাজীপুর জেলা সংবাদদাতা  
প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু এবং তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা, জেল হত্যা, শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীসহ অনেক মামলার চূড়ান্ত রায় আমি দিতে পেরেছি। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলা আইনে যেগুলো ত্রুটি ছিল, আমি সেগুলো সংশোধন করতে পেরেছি। জেল হত্যা মামলায় দুঃখজনক হলেও সত্যি, আমি একাই ডিসেনটিং রায় দিয়েছিলাম। সেখানে ষড়যন্ত্র প্রমাণিত হলো, কিন্তু ষড়যন্ত্রের জন্য তাদের শাস্তি হলো না, এতে আমি স্তম্ভিত।
তিনি গতকাল দুপুরে গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-২ পরিদর্শন করে এসব কথা বলেন। এ সময় তার সঙ্গে কারা-মহাপরিদর্শক ব্র্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখারুজ্জামান, গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম আলম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ, হাই সিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার মো. মিজানুর রহমান, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার পার্ট-১ এর সিনিয়র জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা, কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এর সিনিয়র জেল সুপার প্রশান্ত কুমার বনিকসহ কারাগারের অন্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে সকাল ৯টায় কারাগারে এসে পৌঁছলে প্রধান বিচারপতি ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা এবং তাকে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়। পরে তাকে কারা কনফারেন্স কক্ষে নিয়ে কারাগারের উপর নির্মিত দুটি প্রমাণ্য চিত্র দেখানো হয়।
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘একজন বিচারককে অনেক কিছু বিবেচনা করে বিচার করতে হয়। বিশেষ করে বন্দিদের অবস্থা। তাই কারাগারের অভিজ্ঞতা নিতে পারলে বিচার করতে সুবিধা হয়। আমি চেয়ে ছিলাম গোপনে একজন মহিলা কর্মকর্তাকে মাদক মামলায় জেলে পাঠিয়ে সেখানকার বাস্তব অবস্থা জানতে। কিন্তু নানা কারণে তা সম্ভব হয়নি’। যাবজ্জীবন সাজার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বর্তমান ব্যবস্থায় যাবজ্জীবন কারাদ-ের মেয়াদ ৩০ বছর। রেয়াত সুবিধাসহ ২০ বছর সাজা ভোগ করতে হয়। কিন্তু আমি মনে করি, ‘যাবজ্জীবন মানে রেস্ট অফ লাইফ’ হওয়া উচিত।
সুরেন্দ্র কুমার সিনহা বলেন, অনেকে জেলে এসে আত্মহত্যা করেন। এটি ভয়ঙ্কর। আমাদের বিচারকদের ভুলসহ নানা কারণে অনেকে জেলে আসে। আমাদের বুঝতে হবে কেউ অপরাধী হয়ে জন্মায় না। তাই কারাগারগুলোকে সংশোধনাগারে পরিণত করতে হবে। ভারতের রাজস্থানে উন্মুক্ত কারাগারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ওই কারাগারের বন্দিরা সব কিছুই করতে পারেন। বাড়িতে গিয়ে সংসার করে আবার ফিরে আসতে পারেন। কারাগারে থেকে তারা ভালো আয়ও করতে পারেন। প্রশিক্ষণ দিয়ে স্বাবলম্বী করে তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।
প্রধান বিচারপতি কারা লাইব্রেরি, কারাবন্দি পুনর্বাসন স্কুল, পাওয়ার লুম সেকশন, কারা বেকারি, প্রশিক্ষণ কক্ষ, আসবাবপত্র তৈরি স্কুল, কারা ডিজিটাল প্রিন্টিং প্রেস, গার্মেন্ট প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, দর্জি প্রশিক্ষণ, সূচি শিক্ষা, হস্তশিল্প, রন্ধনশালা এবং ২০০ শয্যাবিশিষ্ট কারা হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। সবশেষে তিনি কারাগারের কপোতাক্ষ সেলে গিয়ে বন্দিদের মামলা ও বিভিন্ন সমস্যার কথা শুনেন এবং তা নিরসনের জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: জেল হত্যা মামলায় ষড়যন্ত্র প্রমাণ হলেও বিচার না হওয়ায় আমি স্তম্ভিত : প্রধান বিচারপতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ