Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আমাদের একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে

মেট্রোরেল প্রকল্প ও বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট কাজের উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশের সময় : ২৭ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৫৩ পিএম, ২৬ জুন, ২০১৬

তালুকদার হারুন : দেশের যোগাযোগ খাতের উন্নয়নে রীতিমতো বিপ্লব ঘটিয়েছে সরকার। নানা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও সরকার ধারাবাহিকভাবে উন্নয়ন কর্মকা-ে সফলতার স্বাক্ষর রেখে চলেছে। যার ফলে দেশের যোগাযোগ অবকাঠামো খাতে ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প থেকে শুরু করে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ককে চার লেনে উন্নীত করা, কর্ণফুলী নদীতে টানেল নির্মাণ প্রকল্প হাতে নেয়া, বিমানবন্দর থেকে কুতুবখালী পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করা, ফেনীতে ফ্লাইওভার নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ, গাজীপুর থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রকল্প গ্রহণ, মেট্রোরেলের কাজ শুরু করাসহ অনেকগুলো উন্নয়ন কাজ এযাবৎকালে সরকারের বড় সাফল্য।
এই সফলতার পথ মারিয়ে গতকাল রোববার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উত্তরা থেকে ২০ কিলোমিটার পথ ৩৮ মিনিটে পেরিয়ে যাত্রীদের মতিঝিলে পৌঁছে দেয়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে মেট্রোরেল কর্মযজ্ঞের উদ্বোধন করেছেন। একইসঙ্গে তিনি গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) নির্মাণ কাজেরও উদ্বোধন করেন। বর্তমান সরকারের দেশজুড়ে যোগাযোগ খাতের এমন উন্নয়নের সুফল ইতিমধ্যে পেতে শুরু করেছেন সাধারণ মানুষ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঢাকায় বহু মানুষের বাস। কিন্তু সেই তুলনায় সড়কের অভাব আছে। আধুনিক যোগাযোগব্যবস্থার মাধ্যমে অনেক মানুষের যাতায়াত সহজ করার জন্য কাজ করতে হবে। তাঁর সরকার নগরবাসীর যাতায়াত সহজ করতে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েছে এবং নিচ্ছে। ঢাকা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা কীভাবে আরও উন্নত, কীভাবে আরও সহজ করা যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, গাজীপুর থেকে শাহজালাল বিমানবন্দর পর্যন্ত বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) রুট চালু হলে টঙ্গী ও উত্তরার সঙ্গে ঢাকা মহানগরীর যাতায়াত সহজতর হবে। এর মধ্য দিয়ে দ্রুত ও সাশ্রয়ীভাবে যাত্রী পারাপারের পাশাপাশি আরামদায়ক সেবা নিশ্চিত করা যাবে এবং রাজধানী ঢাকাকে যানজটমুক্ত করাও অনেকাংশে সহজ হবে বলেও প্রত্যাশা করছে সরকার। আমাদের সরকার সবসময় মনে করে, উন্নয়ন টেকসই হওয়া উচিৎ, বলেন শেখ হাসিনা
ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন প্রকল্পের উদ্বোধন বিষয়ে ‘ঈদের আগেই সুখবর’ পাওয়া যাবে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কও চার লেন করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়ক, সেতু, নৌপথ, রেলপথ ও আকাশপথ- প্রতিটি ক্ষেত্রেই ব্যাপক উন্নয়নের কর্মসূচি আমরা হাতে নিয়েছি। ভৌগলিক অবস্থানে বাংলাদেশ হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে সেতুবন্ধন রচনার জায়গা। এদিক থেকে বাংলাদেশের গুরুত্ব অপরিসীম প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার গুরুত্ব তুলে ধরে বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপালের (বিবিআইএন) মধ্যে মোটর ভেহিকেল চুক্তি স্বাক্ষর এবং বাংলাদেশ, চীন, ভারত ও মিয়ানমানের (বিসিআইএম) মধ্যে অর্থনৈতিক করিডোরের চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে তুলে ধরেন।
শেখ হাসিনা বলেন, রাজধানীর যানজট পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ঢাকা ম্যাস র‌্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০ দশমিক ১০ কিলোমিটার এলিভেটেড মেট্রোরেল নির্মাণের কাজ শুরু হতে যাচ্ছে। উত্তরা ৩য় পর্ব থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ২০১৯ সালে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত ২০২০ সালে মেট্রোরেল চলবে। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত যোগাযোগমন্ত্রীকে অনুরোধ করেন যেন, ২০১৯ সালেই প্রকল্পটি আগারগাঁও নয়, ফার্মগেট পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ লাইনে মহানগরীর ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে স্টেশন থাকবে। এতে প্রতিঘণ্টায় উভয় দিকে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে এবং উত্তরা থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত মাত্র ৩৮ মিনিটেই পৌঁছাতে পারবে। আজ থেকে এমআরটি লাইন-৬-এর নির্মাণ কাজ শুরু হচ্ছে।
অনুষ্ঠনে আরো বক্তৃতা করেনÑ বাংলাদেশে জাপানের রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সচিব এমএএন সিদ্দিক অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, কূটনৈতিক মিশনের সদস্যগণ, সরকারি, সামরিক ও বেসামরিক পর্যায়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতবৃন্দ, উন্নয়ন সহযোগী দেশের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুষ্ঠানে সুইচ চেপে মেট্রোরেল এবং মাস র‌্যাপিড ট্রানজিট প্রজেক্টের ফলকউন্মোচন করেন। পরে এক বিশেষ মোনাজাতেও তিনি অংশগ্রহণ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সমস্ত দেশজুড়েই সড়ক, মহাসড়ক, সেতু, ফ্লাইওভার, পাতাল সড়ক, মেট্রো রেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, রেল, নৌ-সহ যোগাযোগ অবকাঠামো নির্মাণে ব্যাপক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছি।
ঢাকা শহরের পূর্ব-পশ্চিম অংশের সংযোগসহ একটি সমন্বিত গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে স্ট্রাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান হাল-নাগাদ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর সুপারিশ অনুযায়ী এয়ারপোর্ট-খিলক্ষেত-বারিধারা-বাড্ডা-রামপুরা-মৌচাক হয়ে কমলাপুর এবং খিলক্ষেত-পূর্বাচল কাঞ্চন ব্রিজ পর্যন্ত ২৮ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-১ এবং গাবতলী-টেকনিক্যাল-মিরপুর-১, ১০ ও ১৪-বনানী-গুলশান-২ হয়ে ভাটারা পর্যন্ত ১৩ কিলোমিটার এমআরটি লাইন-৫ এর সম্ভাব্যতা সমীক্ষা চলমান রয়েছে। এমআরটি লাইন-১ এ ৯ কিলোমিটার এবং এমআরটি লাইন-৫ এ ৬ কিলোমিটার মোট ১৫ কিলোমিটার পাতাল রেল নির্মিত হবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন- এ দু’টি লাইনের কাজ শেষ হলে নগরীর বেশিরভাগ স্থানেই দ্রুত, সহজ ও আরামদায়ক পরিবেশে মানুষ যাতায়াত করতে পারবে। এতে দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা পূরণ হবে। অন্যদিকে যানজটের কারণে অপচয় হওয়া থেকে কর্মঘণ্টা সাশ্রয় হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, গাজীপুরসহ আশপাশের জেলার জনগণের ঢাকা মহানগরীতে যাতায়াত সহজ, পরিবেশবান্ধব, নিরাপদ ও দ্রুত করার জন্য গাজীপুর থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত বিআরটি লাইন স্থাপনের উদ্যোগ আমি গ্রহণ করি। এ প্রকল্পেরও নির্মাণ কাজ আজ শুরু হতে যাচ্ছে। প্রকল্পটি ডিসেম্বর ২০১৮ সালে সমাপ্ত হবে।
প্রধানমন্ত্রী আশাবাদ ব্যক্ত করেনÑ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বাসভিত্তিক দ্রুতগামী এ গণপরিবহন ব্যবস্থায় প্রতি ঘণ্টায় উভয়দিকে ২৫ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে ঢাকাস্থ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার বিআরটি লাইন-৩ নির্মাণের বিষয়টিও যাচাই করে দেখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, তার সরকারের সময়ে দেশে ৫ হাজার ছোট ও মাঝারি সেতু এবং ১৪টি বৃহৎ সেতু নির্মাণের পাশাপাশি ২১ হাজার কি.মি. নতুন সড়ক নির্মাণ করা হয়েছে।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা সকলেই জানি প্রায় ২৮ হাজার কোটি ঢাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে বৃহত্তম নির্মাণ প্রকল্প পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলেছে। এ সেতুর এক্সেস রোড হিসেবে ঢাকার যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া ঘাট এবং অপর পাড়ে ভাংগা পর্যন্ত মোট ৫৫ কিলোমিটার মহাসড়কের উভয় দিকে ধীর গতির যানবাহন চলাচলের জন্য পৃথক লেনসহ ৪ লেনে উন্নীতকরণের কাজ শুরু হয়েছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। নবীনগর-ডিইপিজেড-চন্দ্রা মহাসড়ক, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক এবং জয়দেবপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হয়েছে।
কর্ণফুলী টানেল সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণ ও নারায়ণগঞ্জের ৩য় শীতলক্ষ্যা সেতুর নির্মাণ কাজ বাস্তবায়নাধীন আছে। দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ জয়দেবপুর-টাঙ্গাইল-এলেঙ্গা মহাসড়ক ৪-লেনে উন্নীতকরণ, ৪-লেন বিশিষ্ট দ্বিতীয় কাঁচপুর, দ্বিতীয় মেঘনা ও দ্বিতীয় গোমতি সেতু, মধুমতি নদীর উপর কালনা সেতু নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান।
দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং ব্যবসা-বাণিজ্যেও উন্নয়নে সরকারের ব্যাপক পরিকল্পনার তথ্যও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরে বলেন, পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর ছাড়াও সেখানে বিশেষায়িত অর্থনৈতিক অঞ্চল, সেনাবাহিনীর ঘাঁটি, নৌ-ঘাঁটি স্থাপনও সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটার সঙ্গে রাজধানীর নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে পটুয়াখালী-কুয়াকাটা মহাসড়কে শেখ কামাল সেতু, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল সেতু জনগণের যাতায়াতের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে। বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কের পায়রা নদীর উপর পায়রা সেতু (লেবুখালি) নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
প্রতিবেশী দেশগুলোর সাথে সহযোগিতা ও জনসাধারণের মধ্যে যোগাযোগ সহজ করাসহ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ হিসেবে বাংলাদেশ, ভুটান, ইন্ডিয়া, নেপাল (বিবিআইএন) মোটর ভেহিকেল এগ্রিমেন্ট এবং বাংলাদেশ, চীন, ইন্ডিয়া, মায়ানমার (বিসিআইএন) অর্থনৈতিক করিডোর প্রতিষ্ঠায় তাঁর সরকারের উদ্যোগের কথাও জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবহন সেক্টরে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা প্রবর্তন এবং জনসাধারণকে সেবা প্রদানে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যানবাহনের কর ও ফি আদায়ে অন-লাইন ব্যাংকিং পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এছাড়া, মোটরযান ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল পদ্ধতির আওতায় আনায়নের উদ্দেশে রেট্রো-রিফ্লেক্টিভ নাম্বারপ্লেট, রেডিও ফ্রিক্যুয়েন্সি আইডেনটিফিকেশন (আরএফআইডি) ট্যাগ ও মোটরযানের ডিজিটাল রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট প্রবর্তন করা হয়েছে। ইলেক্ট্রনিক চিপযুক্ত ডিজিটাল স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স চালু করা হয়েছে। সরকার প্রতিশ্রুতি ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণে প্রতিটি পদক্ষেপ এক একটি মাইলফলক।
তিনি বলেন, মহাসড়কের দুর্ঘটনা সংগঠনের স্থানগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোকে আমরা সাইন্টিফিক্যালি তৈরি করে দিয়েছি। কারণ মানুষের জীবনের নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টাতে আমরা সব সময়ই সচেতন।
সড়ক পথ, নৌ, রেল এবং আকাশ পথ-প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাঁর সরকার উন্নয়নের ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাচ্ছি নতুন একটা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্টও করে দিতে। ‘বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থানে বাংলাদেশ হবে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে একটি সেতুবন্ধন রচনার জায়গা। সেদিক থেকে বাংলাদেশের গুরুত্ব অপরিসীম।
দেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতি অর্জনের মাধ্যমে দেশকে সামনে এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার একের পর এক সফল পদক্ষেপ গ্রহণ করে যাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব ধরনের উন্নয়নের পূর্বশর্ত হল টেকসই, নিরাপদ এবং আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা। আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হচ্ছে সমন্বিত আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলা।
শেখ হাসিনা বলেন, সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে আমাদের মূল লক্ষ্য দেশের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা। রাজধানীর যানজট হ্রাসে আমরা নির্মাণ করেছি ফ্লাইওভার ও রেলওয়ে ওভারপাস। ঢাকা মহানগরীতে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার জন্য কয়েকটি সড়ক ও সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, চালু করা হয়েছে কমিউটার ট্রেন, বাস্তবায়নাধীন রয়েছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। ঢাকা মহানগরীর চারিদিকে বৃত্তাকার সড়ক, রেল ও নৌপথ নির্মাণের উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছে। এ সময় সরকারের গৃহীত হাতির ঝিল উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ বিএনপি-জামায়াত সরকারের বন্ধ করে দেয়ার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।
এদিন উদ্বোধন হওয়া জনবান্ধব ও পরিবেশবান্ধব ২টি গুরুত্বপূর্ণ মেগা প্রকল্পের নির্মাণ কাজ নির্ধারিত সময়ে গুণগতমান নিশ্চিত করেই কাজ সম্পন্ন করার জন্যও তিনি সংশ্লিষ্টদের আদেশ দেন। এক্ষেত্রে কোন ব্যতিক্রম গ্রহণযোগ্য হবে না বলেও প্রধানমন্ত্রী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, মেট্রোরেলের মোট ছয়টি রুট থাকবে। এর মধ্যে উত্তরা থেকে শাপলা চত্বরের (রুট-৬) কাজ আগে শেষ হবে। বাকিগুলো পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে। ২০১৯ সালের মধ্যে রুট-৬-এর উত্তরা থেকে আগারগাঁও এবং ২০২০ সালে শাপলা চত্বর পর্যন্ত মেট্রোরেল নির্মাণকাজ শেষ হবে। প্রতি ঘণ্টায় মেট্রোরেল দু’পাশে ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করবে। মন্ত্রণালয় মনে করে, রুট-৬-এর কাজ শেষ হলে ঢাকার যানজট কমবে, নগরবাসীর যাতায়াত সহজ হয়ে যাবে। ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে এই মেট্রোরেলের নির্মাণকাজে ২২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: আমাদের একটি স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ