পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
প্রচন্ড শীত আর হিমেল বাতাসে ঘরে বসেই দিন কাটাতে যখন হিমশিম খাচ্ছে খুলনাঞ্চলের মানুষ। আর তখন শীত উপেক্ষা করে জীবনবাজি রেখে ১১ দফা দাবি আদায়ে রাস্তায় দিন রাত যাপন করছে এ অঞ্চলের পাটকল শ্রমিকরা। পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ, বকেয়া মজুরি ও বেতন পরিশোধসহ ১১ দফা বাস্তবায়নের দাবিতে খুলনায় রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকদের আমরণ অনশন কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে।
কাঁথা বালিশ নিয়ে আমরণ গণঅনশনে বসেছে খুলনার রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকরা। প্রথম দফা আমরণ গণঅনশনের ১৫ দিন পর গত রোববার দুপুর ২টা থেকে দলে দলে নিজ নিজ প্যান্ডেলে অবস্থান নেন শ্রমিকরা। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার খালিশপুরের দৌলতপুর জুট মিল ও দিঘলিয়ার স্টার জুট মিলের শ্রমিকরা বিআইডিসি রোডের প্লাটিনাম গেটের পূর্ব পাশে ও প্লাটিনাম জুট মিল শ্রমিকরা মিলের পশ্চিম গেটে প্যান্ডেল করে এ অনশন পালন করছেন।
এছাড়া ক্রিসেন্ট গেট ও খালিশপুর জুট মিল গেটেও অনুরূপ প্যান্ডেল করে অনশন করছেন স্ব স্ব মিল শ্রমিকরা। সেই সঙ্গে আটরা শিল্পাঞ্চলের আলিম ও ইস্টার্ন জুট মিলের শ্রমিকরাও তাদের মিলগেটে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন। মিলের উৎপাদন বন্ধ রেখে খালিশপুর বিআইডিসিরোড, আটরা ও রাজঘাট এলাকার খুলনা-যশোর মহাসড়কে শ্রমিকরা এ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
পাটকল শ্রমিকদের এ অনশন কর্মসূচি কেন্দ্র করে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকেও নেয়া হয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিভিন্ন পদক্ষেপ। পুলিশের পক্ষ থেকেই খালিশপুর বিআইডিসি রোডের প্রবেশদ্বার কিছুটা বন্ধ রাখা হয়েছে। ওই রোডে যাতে ভারী কোন যানবাহন না ঢুকতে পারে সেজন্য কাশিপুর মোড় ও কদমতলা মোড়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে। শুধু রিকশা, ইজিবাইক, সাইকেল, মোটরসাইকেল ছাড়া ভারী কোন যানবাহন ওই সড়কে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, প্লাটিনাম জুট মিল শ্রমিকরা মিলের প্রধান ফটক, কলোনীর ফটকের পাশে এবং মিলের সামনের বিআইডিসি সড়কে অনশনে অংশ নিয়েছে। পাশেই দিঘলিয়ার স্টার জুট মিলের প্যান্ডেলে ওই মিলের শ্রমিকরা অবস্থান নিয়েছে। একই প্যান্ডেলের শেষ সীমানায় দৌলতপুর জুট মিলের অদূরে অবস্থান নিয়েছে দৌলতপুর জুট মিল শ্রমিকরা। আর ক্রিসেন্ট জুট মিল শ্রমিকরা অবস্থান নিয়েছে মিলগেটের সামনের সড়কে। একই সড়কে নিজ মিলগেটের সামনে অবস্থান নিয়েছে খালিশপুর জুট মিল শ্রমিকরা। খালিশপুরের পাঁচটি পাটকলের শ্রমিকরা উৎপাদন বন্ধ রেখে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অবস্থান নেন অনশন স্থলে।
শ্রমিকরা বলেন, এবার দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত উঠবো না। আলীম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি মো. সাইফুল ইসলাম লিটু বলেন, রোববার দুপুর থেকে অনশনে আছি। প্রয়োজনে মৃত্যু হলেও অনশন ভাঙবো না। আক্ষেপ করে তিনি বলেন, শ্রমিকরা মজুরি না পাওয়ায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তারা তাদের সন্তানদের লেখাপড়ার খরচ, ঘর ভাড়া দিতে পারছেন না। এ অবস্থায় বাধ্য হয়েই আন্দোলনে নেমেছেন। সব সেক্টরে মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হলেও পাটকল শ্রমিকদের বেলায় অনিহা করা হচ্ছে। মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন, পাটখাতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও পিপিপি বাতিলসহ ১১ দফা দাবিতে আমরা আন্দোলনে নেমেছি।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের দাবিতে খালিশপুরের ক্রিসেন্ট, প্লাটিনাম, স্টার, খালিশপুর ও দৌলতপুর জুট মিল শ্রমিকরা অনশনে অংশ নিয়েছে। এছাড়া আটরা শিল্পাঞ্চলে ইস্টার্ণ ও আলীম জুট মিল শ্রমিকরা অংশ নিয়েছে। আর যশোরের জে জে আই জুট মিলের ননসিবিএ নেতাদের নেতৃত্বে আংশিক শ্রমিকরা অনশনে অংশ নিয়েছে। সব মিলিয়ে খুলনাঞ্চলের ৮টি পাটকলের শ্রমিকরা অনশন কর্মসূচি পালন করছেন।
রাজশাহী ব্যুরো জানায়, কাঁথা-বালিশ সঙ্গে নিয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন রাজশাহীর পাটকল শ্রমিকরা। সারা দেশের পাটকল শ্রমিকদের সাথে একাত্ম প্রকাশ করে গত রোববার রাতভর মিলের মূল ফটকে অবস্থান গ্রহণ করেন শ্রমিকরা। পরে গতকাল সোমবার সকাল থেকে আবার একই দাবি নিয়ে বিক্ষোভে অংশ নেন। রাজশাহী পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি জিল্লুর রহমান জানান, তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাদের পক্ষে আর ঘরে ফেরা সম্ভব নয়।
রাজশাহী পাটকলের মূল ফটকের সামনে কাঁথা-বালিশ নিয়ে অনশন কর্মসূচি পালন করছেন পাটকল শ্রমিকরা। তবে শীতের কারণে পাটকল শ্রমিকদের অনেকেই ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলেও জানান এই শ্রমিক নেতা। দ্বিতীয় দিনে পাটকল শ্রমিকদের সাথে সংহতি প্রকাশ করছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী সদর আসনের সংসদ সদস্য ফজলে হোসেন বাদশা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।