পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তিন দফা আলোচনা ব্যর্থ হওয়ায় খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের শ্রমিকরা আজ রোববার দুপুর থেকে ফের আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করবে। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীতে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে পাটকলের শ্রমিক-নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
তৃতীয় দফায় অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে শ্রম প্রতিমন্ত্রীসহ পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ জুট মিল করপোরেশনের (বিজেএমসি) চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে শ্রমিক নেতারা জানান, মজুরি কমিশন বাস্তবায়নের ব্যাপারে শ্রম প্রতিমন্ত্রী আরও এক মাস সময় চেয়েছেন। কিন্তু ওই এক মাস পর আসলেই মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন হবে কী না তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউই। শুধু শুধু সময়ক্ষেপণ করার জন্য এক মাসের কথা বলা হচ্ছে।
বৈঠকে উপস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ সংগ্রাম পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও খুলনার ক্রিসেন্ট জুট মিলের সাবেক সিবিএ সভাপতি মুরাদ হোসেন বলেন, আলোচনা ব্যর্থ হয়েছে। এক মাসের সময় চাওয়া হয়েছে। কিন্তু শ্রমিকদের পক্ষে ওই সময় দেওয়া সম্ভব নয়। শ্রমিকদের দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, তাই তারা ফের আমরণ অনশন কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন।
তীব্র শীতে শ্রমিকেরা অনশন কর্মসূচি পালন করবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, শ্রমিকদের এখন মাত্র একটিই চাওয়া, আর তা হলো মজুরি কমিশন বাস্তবায়ন। তাদের সেই দাবি পূরণ না হলে তারা কর্মসূচিতে অংশ নিতে বাধ্য।
এর আগে গত ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে নিজ নিজ মিল গেটের সামনে অনশন কর্মসূচি শুরু করেছিলেন শ্রমিকরা। তীব্র শীতের মধ্যে টানা চারদিন ওই কর্মসূচি পালন করেন তারা। কর্মসূচি চলাকালে এক শ্রমিকের মৃত্যুসহ দুই শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন।
গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী এবং খুলনা-৩ আসনের সাংসদ মন্নুজান সুফিয়ানের আশ্বাসে তিন দিনের জন্য আমরণ অনশন কর্মসূচি স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকেরা। রাত ১টার দিক থেকে একে একে খুলনার বিভিন্ন পাটকলের শ্রমিকেরা ঘরে ফিরে যান।
ওই রাতে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শ্রম প্রতিমন্ত্রী। এ সময় তিনি ১৫ ডিসেম্বর শ্রমিকদের মজুরি কমিশন বাস্তবায়নে বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় সভা এবং বিকেলে বাংলাদেশ পাটকল করপোরেশনের (বিজেএমসি) সভাকক্ষে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভা করার কথা জানান। ওই সভা থেকে ভালো ফল আসতে পারে জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী শ্রমিক নেতাদের অনশন তুলে নিয়ে ঘরে ফিরে যেতে বলেন। ওই আশ্বাসে প্রথম দফায় ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত অনশন স্থগিত করেছিলেন শ্রমিকেরা। ওই সিদ্ধান্ত নিয়ে রাতভর শ্রমিকদের সঙ্গে শ্রমিক নেতাদের দফায় দফায় আলোচনা চলে। এ সময় নেতারা চাইলেও শ্রমিকেরা অনশন ভঙ্গ করতে নারাজ ছিলেন। তবে রাতেই তারা বাড়িতে ফিরে যান।
শ্রমিকেরা বাড়িতে ফিরলেও অনশনস্থলের প্যান্ডেল সেভাবেই থেকে যায়। গত কয়েক দিনে তা সরানো হয়নি। ১৫ ডিসেম্বর ঢাকায় বৈঠক ব্যর্থ হয়। পরে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চাওয়া হয় শ্রমিকনেতাদের কাছে। ওই দিন শ্রম প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকেও ভালো কোনো ফল হয়নি। তবে প্রতিমন্ত্রী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় চান। কিন্তু সর্বশেষ বৈঠকও ব্যর্থ হয়।
কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা অনশন ভঙ্গ করার জন্য নেতাদেরই দোষারোপ করছেন। শ্রমিকেরা বলছেন, ওই সময় প্রতিমন্ত্রীর আশ্বাসে অনশন কর্মসূচি স্থগিত করা না হলে এত দিনে তাদের দাবি সরকার মেনে নিতে বাধ্য হতো।
প্লাটিনাম জুট মিলের শ্রমিক তোফাজ্জেল হোসেন বলেন, নেতারা যা চাইবেন শ্রমিকেরা তা করতে প্রস্তুত আছেন। শ্রমিকদের আলোচনায় ঘুরেফিরে আসছে মজুরি কমিশনের বিষয়টি। সর্বশেষ আলোচনা ব্যর্থ হওয়ার ব্যাপারটিতে শ্রমিকেরা এখন অনেকটা ক্ষিপ্ত। আবারও তারা আন্দোলনে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত আছেন।
প্লাটিনাম জুট মিলের সিবিএ সভাপতি শাহানা শারমিন বলেন, রোববার দুপুর থেকে আবারও আমরণ অনশন শুরু করবেন শ্রমিকেরা। কর্মসূচি পালন করতে শ্রমিকেরা প্রস্তুত আছেন। ওই কর্মসূচি সফল করতে বাংলাদেশ পাটকল শ্রমিক লীগের নেতাদের আহ্বান জানানো হয়েছে।
এর আগে গত ২৩ নভেম্বর থেকে ১১ দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিকেরা। বিক্ষোভ মিছিল, শ্রমিক ধর্মঘট, গেটসভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে ১০ ডিসেম্বর দুপুর থেকে আমরণ অনশনে বসেন তারা। ওই কর্মসূচি খুলনা অঞ্চলে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ৯টি পাটকলের মধ্যে ৮টি পাটকলের শ্রমিকেরা অংশ নেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।