পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
জমিয়াতুল মোদার্রেছীনসহ বিভিন্ন মহলের শোক
স্টাফ রিপোর্টার
প্রখ্যাত ইসলামি চিন্তাবিদ, তাফসীরগ্রন্থ মা’আরিফুল কুরআনের অনুবাদক, বহুগ্রন্থ প্রণেতা, বিদগ্ধ সাহিত্যিক, বরেণ্য আলেমেদ্বীন, রাবেতা আল-আলম আল ইসলামির নির্বাহী পরিষদের সদস্য, ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ-এর সাবেক বোর্ড সদস্য, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি ও মাসিক মদিনার সম্পাদক মাওলানা মুহিউদ্দীন খান (৮০) গতকাল শনিবার ইফতারের পূর্ব মুহুর্তে ঢাকার ল্যাব-এইড হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তিনি দীর্ঘ দিন কিডনী ও নিউমোনিয়া রোগে ভুগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, ৩ ছেলে ও ২ মেয়েসহ বহু আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। আজ রোববার বাদ যোহর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে মরহুমের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। জানাজা শেষে মরহুমের লাশ তার গ্রামের বাড়ি গফরগাঁও থানার পাঁচবাগ ইউনিয়নের আনসার নগর গ্রামে তার প্রতিষ্ঠিত আনসার নগর দারুল কুরআন মাদরাসা ময়দানে নেয়া হবে। আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় মরহুমের দ্বিতীয় জানাজা শেষে মাদরাসা সংলগ্ন পারিবারিক কবরাস্থানে তার পিতা আনসার উদ্দীন খানের কবরের পাশে তাঁর লাশ দাফন করা হবে। মরহুমের দ্বিতীয় ছেলে আহম্মদ এতথ্য জানান। মরহুমের ইন্তেকালের খবর ছড়িয়ে পড়লে রাজধানীসহ সারাদেশে ইসলামী অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাতে তারাবিহ নামাজের সময় বিভিন্ন মসজিদ মাদরাসায় মরহুমের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়। ইফতারের পর পর মরহুমের লাশ এক নজর দেখার জন্য বিভিন্ন স্থান থেকে আলেম ওলামা ও তার ভক্তবৃন্দ ল্যাব এইড হাসপাতালে ছুটে যান। রাতে তার লাশ শীততাপ এ্যাম্বুলেন্সে করে ১৬৪ নং ডি আইটি প্লট গেন্ডারিয়াস্থ তার বাসায় নেয়া হয়েছে।
মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের ইন্তেকালে বিভিন্ন ইসলামী রাজনৈতিক দলের নেতা, পীর মাশায়েখ ও ওলামায়ে কেরামগণ পৃথক পৃথক বিবৃতিতে গভীর শোক প্রকাশ করে তার রুহের মাগফেরাত কামনা করেছেন। বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের ইন্তেকালে মুসলিম উম্মাহর যে শূণ্যতা সৃষ্টি হয়েছে তা’ পুরণ হবার নয়। মরহুম মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ছিলেন, ইসলাম-মুসলমান, দেশ ও মাটির অতন্দ্রহ্রহরী।
মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের ইন্তেকালে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনসহ বিভিন্ন মহল গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বাণীতে বাংলাদেশ জমিয়াতুল মোদার্রেছীনের সভাপতি আলহাজ এ এম এম বাহাউদ্দিীন, সিনিয়র সহ-সভাপতি আলহাজ মাওলানা কবি রুহুল আমীন খান ও মহাসচিব আলহাজ অধ্যক্ষ মাওলানা শাব্বীর আহমদ মোমতাজী বলেন, প্রখ্যাত আলেমেদ্বীন মাওলানা মুহিউদ্দীন খানের ইন্তেকালের সংবাদে আমরা দারুণভাবে শোকাবিভূত ও মর্মাহত হয়েছি। তিনি ছিলেন সর্বজন প্রিয় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এক অনন্য সিলামী চিন্তাবিদ। ইসলামি সাহিত্য ও সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে তাঁর অবদান অবিস্মরণীয়। তিনি সুদিনে-দুর্দিনে ইসলামী উম্মাহের রাহবারের ভূমিকা পালন করেছেন। তাঁর কৃতি ও স্মৃতি চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। তাঁর শূণ্যস্থান অপূরণীয়। জাতি কোন দিন তাঁকে ভুলবে না। নেতৃবৃন্দ মহান আল্লাহ পাকের দরবারে মরহুমের মাগফেরাত ও জান্নাতুল ফেরদৌসের উচ্চ মাকাম লাভের ফরিয়াদ এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানান। হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর আমীর ও জামিয়া আহলিয়া দারুল উলুম হাটহাজারীর মহাপরিচালক শায়খুল ইসলাম আল্লামা শাহ আহমদ শফী, মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী এক শোক বাণীতে বলেন, মাওলানা মুহিউদ্দীন খান ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত আলেম, এদেশের তাওহিদী জনতার অভিভাবক ও মুরুব্বী এবং মনীষীদের একজন। তিঁনি নাস্তিক মুরতাদ এবং ইসলাম ও মুসলিমবিদ্বেষী আগ্রাসী শক্তির বিরুদ্ধে সাহসী সিপাহসালার। তাঁর বলিষ্ট লেখা ও কন্ঠের সাহসী হুন্কারে জনসাধারণের মাঝে দ্বীনি জযবা ও প্রেরণার সৃষ্টি হতো। তিঁনি মুসলিম উম্মাহর যে কোনো সংকটকালীন সময়ে কান্ডারীর ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি ছিলেন সত্যিকারে নায়েবে রাসুল।
এছাড়া শোক প্রকাশ ও তাঁর রুহের মাগফেরাত কামনা করে যেসব নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে দিয়েছেন তারা হচ্ছেন, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মোহাম্মদ রেজাউল করীম পীর ছাহেব চরমোনাই, মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুছ আহমাদ, মহানগর সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মাওলানা এ টি এম হেমায়েত উদ্দিন, গুলশান সেন্ট্রাল মসজিদের খতীব মাওলানা মাহমুদুল হাসান, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর প্রিন্সিপাল হাবিবুর রহমান ও মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হক, ইসলামী ঐক্যজোটের (২০ দলীয়) চেয়ারম্যান মাওলানা এডভোকে আব্দুর রকীব ও মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুল করীম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের কার্যকরী সভাপতি মুফতী ওয়াক্কাস ও কেন্দ্রীয় মহাসচিব আল্লামা নূর হোসেন কাশেমী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী ও মহাসচিব মুফতী ফয়জুল্লাহ, খেলাফতে ইসলামী বাংলাদেশ এর আমীর মাওলানা আবুল হাসনাত আমিনী ও মহাসচিব মাওলানা ফজলুর রহমান, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন কেন্দ্রীয় যুগ্ন মহাসচিব এবং ঢাকা মহানগর আমীর মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী ও সাধারণ সম্পাদক হাফেজ মাওলানা আবু তাহের , বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর মকবুল আহমাদ, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী , নায়েবে আমীর অধ্যক্ষ মুহাম্মদ শওকাত হোসেন, সেক্রেটারী জেনারেল ড. মাওলানা মুহাম্মদ এনামুল হক আজাদ, জয়েন্ট সেক্রেটারী মোস্তফা তারেকুল হাসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হুসাইন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম ঢাকা মহানগরীর সভাপতি মাওলানা মনজুরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির চেয়ারম্যান এম এ রশিদ প্রধান, বাতিল প্রতিরোধ পরিষদের সভাপতি হাজী জালাল উদ্দিন বকুল, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের, ইসলামী আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আমীর মাওলানা ইমতিয়াজ আলম ও সেক্রেটারী এ বি এম জাকারিয়া, বাংলাদেশ মসজিদ মিশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যক্ষ মাওলানা যাইনুল আবেদীন ও জেনারেল সেক্রেটারী ড. মাওলানা খলিলুর রহমান আল-মাদানী, ছাত্র জমিয়ত বাংলাদেশ-এর সাবেক সভাপতি মুফতী শেখ মুজিবুর রহমান, মাওলানা গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, মুফতী জাকির হোসাইন খান, সাবেক সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুল মালিক চৌধুরী, মুফতী তোফায়েল গাজালী, ফেরদৌস মাহমুদ, মুফতী আমিনুল ইসলাম কাসেমী, মুফতী দেওয়ানুল বারী সিরাজী ও ওয়ালী উল্লাহ।
খালেদার জিয়ার শোক
মাওলানা মহিউদ্দিন খানের ইন্তেকালে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
একব শোকবাণীতে তিনি বলেন, মাওলানা মহিউদ্দিন খান ছিলেন একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, প্রখ্যাত আলেম এবং একজন নিবেদিতপ্রাণ রাজনীতিবিদ। তিনি সত্য, ন্যায় ও ইনসাফের পথে মানুষকে আহ্বান করতেন। একজন সাংবাদিক হিসেবে তিনি মত প্রকাশের স্বাধীনতায় দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন।
শোকবাণীতে খালেদা জিয়া মরহুম মাওলানা মহিউদ্দিন খানের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোকাহত পরিবারবর্গ, নিকটজন, গুণগ্রাাহী ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।