পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
শর্ত ভঙ্গ করায় বাতিল হচ্ছে আগের তিনটি লাইসেন্স
ফারুক হোসাইন : ন্যাশনওয়াইড টেলিকমিউনিকেশন ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক (এনটিটিএন) লাইসেন্স পাচ্ছে না বাংলাফোন লিমিটেড। ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি), পাবলিক সুইচ টেলিফোন নেটওয়ার্ক (পিএসটিএন), ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার (আইএসপি) অপারেটর এবং ন্যাশনওয়াইড আইএসপির পারমিটের শর্ত কয়েকদফা ভঙ্গ করায় প্রতিষ্ঠানটিকে লাইসেন্স প্রদান না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন ভঙ্গ, লাইসেন্স ও পারমিট শর্ত ভঙ্গ করায় প্রতিষ্ঠানটির বিদ্যমান তিনটি লাইসেন্সও (আইআইজি, পিএসটিএন, আইএসপি) বাতিলের সুপারিশ করেছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি। লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি ইতোমধ্যে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও বিটিআরসি এবং ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ থেকে জানা যায়। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাফোনকে এনটিটিএন লাইসেন্স প্রদানের বিষয়টি নাকচ করে দেয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি হাইকোর্টে রীট করে। রীটের প্রেক্ষিতে হাইকোর্ট লাইসেন্সের আবেদনের বিষয়টি পুনঃ বিবেচনার নির্দেশনা দেয়। আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিটিআরসি সার্বিক বিষয় বিবেচনা করে বাংলাফোনকে লাইসেন্স প্রদান না করতে মতামত দেয়। কমিশনের ওই মতামতের পর গত ১২ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ বাংলাফোনের আবেদনটি আবারও নাকচ করে দেয়। এর ফলে পূর্বের ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এনটিটিএন লাইসেন্স পাচ্ছে না বাংলাফোন লিমিটেড।
এর আগে এনটিটিএন লাইসেন্সের জন্য পাঁচটি প্রতিষ্ঠান আবেদন করে। এর মধ্যে বাংলাফোনসহ তিনটি প্রতিষ্ঠানের আবেদন না মঞ্জুর করে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। এনটিটিএন লাইসেন্স উন্মুক্ত লাইসেন্সিং পদ্ধতিতে প্রদান করা হলেও টেলিযোগাযোগ সেক্টরের প্রয়োজনীয়তা বিবেচনায় কতটি লাইসেন্স ইস্যু করা হবে তা নির্ধারণসহ প্রয়োজনীয়সংখ্যক এনটিটিএন লাইসেন্স ইস্যুও ক্ষেত্রে আইনগতভাবে একক এখতিয়ার সরকারের। বাংলাফোন এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে এনটিটিএন লাইসেন্স সংক্রান্ত রীট মামলা করে। হাইকোর্ট ২০১৪ সালের ২২ এপ্রিল বাংলাফোনের এনটিটিএন লাইসেন্সের আবেদনটি পুনঃ বিবেচনার নির্দেশনা প্রদান করে রায় দেয়। কমিশন ওই আদেশের প্রেক্ষিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে জানায়, টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(৩) বিধান অনুযায়ী কমিশন হতে কোন প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল হলে পরবর্তী ৫ বছর উক্ত প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অযোগ্য বিবেচিত হবে। যেহেতু বাংলাফোনের অনুকূলে ইস্যু করা আইআইজি, পিএসটিএন ও আইএসপি লাইসেন্স এবং পারমিট-এর শর্ত ভঙ্গ করায় উক্ত কোম্পানির বিরুদ্ধে লাইসেন্স বাতিলসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। তাই সার্বিক বিবেচনায় বাংলাফোনকে নতুন করে এনটিটিএন লাইসেন্স ইস্যুর যৌক্তিকতা নেই। কমিশনের ওই প্রতিবেদনের প্রেক্ষিত্রে গত ১২ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের পক্ষ থেকে বাংলাফোনের অনুকূলে এনটিটিএন লাইসেন্স না দেয়ার সিদ্ধান্ত পুনরায় জানিয়ে দেয়া হয়।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, কমিশন হতে বাংলাফোনকে পিএসটিএন লাইসেন্স প্রদানের পর টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে কমিশনের অনুমতি ছাড়াই তাদের কোম্পানির শেয়ার হস্তান্তর করে। বিষয়টি ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগকে জানানোর পর মন্ত্রণালয় পরবর্তীতে কমিশন ২০১৪ সালের ১৬ নভেম্বর অনুমোদন ছাড়া শেয়ার হস্তান্তরের জন্য বাংলাফোনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে। এরই প্রেক্ষিতে কমিশন বাংলাফোনকে পিএসটিএন এবং ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্স কেন বাতিল করা হবে না তা জানতে চেয়ে দুটি কারণ দর্শানো নোটিশ ইস্যু করে। সেই সাথে ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্সের অধীনে ইস্যুকরা পারমিট বাতিলের বিষয়ে ২০১৫ সালের ১৫ জানুয়ারি ১৫ দিনের সময় দিয়ে কারণ দর্শানো নোটিশ প্রদান করে। বাংলাফোন পিএসটিএন এবং ন্যাশনওয়াইড এইএসপি লাইসেন্স সংশ্লিষ্ট নোটিশের জবাব সময়মত জমা দিলেও পারমিট সংশ্লিষ্ট নোটিশের জবাব নির্ধারিত সময়ের দেড় মাস পরে জমা দেয়। যা কমিশনের নীতিমালার লঙ্ঘন। কমিশনকে দেয়া নোটিশের জবাবও সন্তোষজনক হয়নি। এছাড়া গত বছরের ২২ এপ্রিল পারমিটের মেয়াদ পূর্ণ হওয়ায় তার কার্যকারিতাও শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাফোনের পিএসটিএন এবং ন্যাশনওয়াইড আইএসপি লাইসেন্স বাতিলের প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণ করে কমিশন তা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে। লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টি এখন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
একইভাবে বাংলাফোনের আইআইজি লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গতবছর ২৮ ডিসেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করেছে কমিশন। প্রতিষ্ঠানটির আইআইজি লাইসেন্স বাতিলের বিষয়টিও মন্ত্রণালয়ে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। কমিশন সূত্রে জানা যায়, আইআইজি লাইসেন্স পাওয়ার পর নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে অপারেশনাল কার্যক্রম শুরুর বিধান থাকা সত্ত্বেও বাংলাফোন লিমিটেড তাদের কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি। এছাড়া ঢাকার বাইরে পপ স্থাপনের জন্য কমিশনের সিদ্ধান্ত এবং অনুমোদন গ্রহণের বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাফোন কমিশনের কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই দেশের ৩৭টি জেলা এবং ২৪৪টি উপজেলায় পপ স্থাপন করেছে। নীতিমালা ভঙ্গ করে এই পপ স্থাপনের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে গতবছরের ৯৯ অক্টোবর লাইসেন্স বাতিলের শোকজ নোটিশ পাঠানো হয় এবং জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় পরবর্তীতে লাইসেন্স বাতিলের প্রতিবেদন গত বছরের ২৮ ডিসেম্বর ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে পাঠানো হয়।
এছাড়া কমিশন হতে বাংলাফোনকে পারমিটের অধীনে শুরু থেকে অর্জিত গ্রস রেভিনিউ-এর ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের অর্থ কমিশনকে পরিশোধের নির্দেশনা দেয়া হয় এবং ২০১৪ সালের ৭ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির রেভিনিউ সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য প্রদানের জন্য বলা হয়। রেভিনিউ এর বিষয়ে তথ্য চেয়ে বাংলাফোনকে কয়েকদফা চিঠি দিলেও বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও প্রতিষ্ঠানটি কমিশনকে কোন তথ্য দেয়নি। পরবর্তীতে সেপ্টেম্বর মাসে আংশিক তথ্য কমিশনে জমা দেয়া হয়। পরিপূর্ণ তথ্য না দেয়ায় বাংলাফোনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি নোটিশের কোন জবাব প্রদান করেনি। তাছাড়া পারমিটের নির্ধারিত গ্রস রেভিনিউ ৫ দশমিক ৫ শতাংশ হারে সুনির্দিষ্টভাবে হিসাব করে কমিশনে যথাযথভাবে জমা দেয়া থেকে বিরত রয়েছে। এখনো কমিশনের পাওনা বকেয়া রাজস্ব জমা প্রদান করেনি। এক্ষেত্রে বাংলাফোন লিমিটেড পারমিটের বিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন করেছে বলেও কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।