পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : জটের কবলে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। বন্দরের জেটি এবং বহির্নোঙরে ৯০টি জাহাজ। ডকইয়ার্ডে ৩২ হাজার কন্টেইনারের স্তূপ জমেছে। আর চার দিন পর শুরু হচ্ছে টানা নয় দিনের সরকারি ছুটি। দীর্ঘ ছুটিতে চট্টগ্রাম বন্দরের জট আরও ভয়াবহ আকার ধারণ করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আমদানি-রফতানিসহ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে ছুটির দিনেও বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দর চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন ব্যবসায়ী ও আমদানিকারকেরা। বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনাল মালিকেরা ইতোমধ্যে ঈদের ছুটিতেও টার্মিনাল খোলা রাখার ঘোষণা দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। চট্টগ্রাম বন্দরে সাম্প্রতিককালে জাহাজ জট বেড়েছে। কন্টেইনার এবং জেনারেল কার্গোবাহী জাহাজ দিনের পর দিন অপেক্ষা করছে। বার্থিং না পাওয়ায় দীর্ঘদিন সাগরে ভাসছে বিদেশি মাদার ভেসেল। গতকাল (শনিবার) বন্দরের ভেতরে-বাইরে ৯০টি জাহাজ ছিল। জেটিতে পণ্য খালাসের অপেক্ষায় ছিল ২৪টি জাহাজ। ৬৬টি জাহাজ বহির্নোঙরে অপেক্ষমাণ ছিল। বন্দরে জাহাজের অবস্থানকাল বেড়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন জাহাজ জট হচ্ছে অন্যদিকে এসব জাহাজের লোকসানের পরিমাণও বাড়ছে। অবস্থানকাল বেড়ে যাওয়ায় একেকটি জাহাজের বিপরীতে লাখ লাখ টাকার বৈদেশিক মুদ্রা গচ্ছা দিতে হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে গত কয়েক বছর ধরে জাহাজের অবস্থানকাল অনেক কমে আসে। জাহাজজট বলতে যা বোঝায় তা ছিল না দীর্ঘদিন। তবে সম্প্রতি অবস্থার অবনতি ঘটে। ধীরে ধীরে জাহাজজট বাড়তে থাকে, সেইসাথে বাড়ে বন্দরে জাহাজের গড় অবস্থানকাল। বহির্নোঙর থেকে জেটিতে আসতে একেকটি জাহাজকে ১০ থেকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হচ্ছে। লাইটারেজ শ্রমিকদের টানা ধর্মঘট, এরপর ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে কয়েকদিন বন্দরের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ থাকায় অচলাবস্থার শুরু হয়। এর সাথে যোগ হয়েছে বন্দরের ইক্যুইপমেন্ট সংকট। বেশি ড্রাফটের বড় জাহাজ আসা ভোগ্যপণ্যের আমদানি বেড়ে যাওয়ার কারণেও জট বেড়েছে।
বন্দর ব্যবহারকারীদের একটি সূত্র জানায়, সাম্প্রতিককালে বন্দরের অপারেশন কার্যক্রম কিছুটা স্থবির হয়ে পড়েছে। ধর্মঘট, ঘূর্ণিঝড় ছাড়াও কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে ইক্যুইপমেন্ট সংকট এ জটের জন্য অনেকাংশে দায়ী। বেসরকারি কন্টেইনার মালিক সমিতির একজন নেতা জানান, চট্টগ্রাম বন্দরে জাহাজ আগমনের হার যে অনুপাতে বেড়েছে সে অনুপাতে ইক্যুইপমেন্ট বাড়েনি। এ কারণে কাজে ধীরগতি চলছে। কন্টেইনার ডেলিভারি নিতে একটি ট্রেইলরকে বন্দর জেটিতে ১৬ থেকে ২০ ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এতে করে সময়ক্ষেপণ হচ্ছে এবং বন্দর এলাকায় পণ্যবাহী ভারী যানবাহনের জটও বেড়ে গেছে। ইক্যুইপমেন্ট বাড়িয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং কার্যক্রম গতিশীল করতে ইতোমধ্যে বন্দর চেয়ারম্যানের কাছে চিঠি দিয়েছে বেসরকারি কন্টেইনার টার্মিনাল মালিকদের সংগঠন। বেসরকারি কন্টেইনারগুলো ঈদের ছুটিতেও কন্টেইনার টার্মিনাল খোলা রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। এক্ষেত্রে তারা ঈদের ছুটিতে বন্দরের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার দাবি জানান।
বিজিএমইএ’র একজন নেতা জানান, বন্দরে জটের ফলে ক্ষতির মুখে পড়ছে রফতানিমুখী তৈরি পোশাক খাত। যথাসময়ে পণ্য শিপমেন্ট করতে না পারায় বিদেশী ক্রেতাদের অর্ডার বাতিল হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় বন্দরের কার্যক্রম আরও গতিশীল করার উপর গুরুত্বারোপ করেন ওই নেতা। চট্টগ্রাম চেম্বার সভাপতি মাহবুবুল আলম বলেন, বন্দরে এমনিতেই জট চলছে। তার উপর টানা ৯ দিন সরকারি ছুটি হলে জট পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করবে। অচলাবস্থা নিরসনে বিশেষ ব্যবস্থায় বন্দর সচল রাখার পরামর্শ দেন তিনি।
বন্দরে জট চলছে কিংবা ছুটির দিনে এ জট আও বাড়বে এমনটা স্বীকার করতে চান না বন্দরের কর্মকর্তারা। তবে বন্দরের একটি সূত্র জানায়, গতকাল বন্দরে ৯০টি জাহাজ ছিল। আরও বেশ কয়েকটি জাহাজ ভিড়বে বহির্নোঙরে। বিভিন্ন ইয়ার্ডে কন্টেইনার ছিল ৩২ হাজারের মতো। এর মধ্যে আমদানি পণ্যবাহী কন্টেইনারের সংখ্যা ২৫ হাজার। আর খালি কন্টেইনারের সংখ্যা ধারণক্ষমতার চেয়ে দেড়গুণ বেশি রয়েছে। সব মিলিয়ে কন্টেইনারের সংখ্যা এখন ধারণক্ষমতার কাছাকাছি। চলতি সপ্তাহে কর্মদিবস রয়েছে আর ৪ দিন। ৪ দিন পর শুরু হবে ঈদ ও সরকারি ছুটি মিলিয়ে টানা ৯ দিনের ছুটি। আর তখন পরিবহন খাতের প্রায় পুরোটাই ছুটি ভোগ করবে। ফলে বন্দর থেকে পণ্য পরিবহন প্রায় বন্ধ হয়ে যাবে। ব্যাংক-বীমা এবং কাস্টম হাউসও থাকবে বন্ধ। এ অবস্থায় বন্দরে জাহাজ ও কন্টেইনার জট বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।