Inqilab Logo

শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ঈদের মৌসুমী পেশা

প্রকাশের সময় : ২৬ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম

তারিন তাসমী

ঈদুল ফিতর এখনো বেশ কিছুদিন বাকি। এ উপলক্ষে অনেক পেশাই হতে পারে সাধ্যের মধ্যে, সামান্য পুঁজিতে। যারা এ সময় কিছু করার কথা ভাবছেন এবং হাতে যথেষ্ট সময় আছে, তারা ঈদের মৌসুমী পেশাগুলো থেকে নিজের মনের মতো যে কোনো একটি খুঁজে নিতে পারেন। আর এর আগে অবশ্যই আপনাকে ভেবে ঠিক করতে হবে, কোন এলাকায় কোনটি ভালো চলবে।

যে জিনিসগুলো ভালো চলবে
যেহেতু ঈদ উৎসব সামনে সেহেতু মানুষের চাহিদা অনুযায়ী ঈদের জিনিসপত্র ভালো চলবে। যেমন-কাপড়-চোপড়, ঈদের শুভেচ্ছা কার্ড। বুটিক ও হস্তশিল্পের কাজ, ঘর সাজানোর সামগ্রী, উপহার সামগ্রী। টুপি, আতর, জায়নামাজ, ছোটদের খেলনা, সেমাই, চিনিসহ ঈদ মৌসুমের নানা জিনিসপত্র। পছন্দের যে কোনো খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন।
ঈদ কার্ড
ঈদে আপনজনকে শুভেচ্ছা জানাতে অনেকেই ঈদ কার্ড বেছে নেন। তাই ঈদকে ঘিরে ঈদের শুভেচ্ছা কার্ডের ব্যবসা করার বেশ সুযোগ রয়েছে এখন। চাইলে বিনিয়োগ করতে পারেন এই খাতে। বিভিন্ন প্রকাশনা থেকে নানা ধরনের ঈদ কার্ড পাইকারি দামে কিনে বিক্রি করতে পারেন। আবার নিজের সৃজনশীলতাকে ব্যবহার করে ঈদ কার্ড তৈরি করে বিক্রি করতে পারেন। ঈদের শুভেচ্ছা কার্ড পাইকারি দামে কিনে এলাকার অস্থায়ী ছোট ঘর তৈরি করে সেখানে বিক্রি করতে পারেন। এজন্য বেশি বিনিয়োগও করতে হবে না।
নিউমার্কেট গিফট কার্ডের ব্যবসায়ী মো. কামাল হোসেন দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, পুরানা পল্টন, বংশাল, বাংলাবাজার নিউমার্কেট এলাকায় দেশের বড় বড় প্রকাশনার পাইকারি বিক্রির দোকান আছে। এসব জায়গা থেকে পাইকারি দামে কার্ড কেনা যাবে। তবে কার্ড কেনার সময় অবশ্যই রং ও ধরণ দেখে নিতে হবে। ক্রেতার রুচিকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরো জানান, কার্ড কেনার সময় জেনে নিতে হবে পরবর্তী সময়ে অবিক্রীত কার্ডগুলো ফেরত নেয়া হবে কিনা।
নিজের তৈরি কার্ড
যদি নিজে কার্ড তৈরি করতে পারেন, সেটাও আয়ের ক্ষেত্র হতে পারে। তাহলে আর বসে থাকার সময় নেই। চিন্তা করে ফেলুন, কার্ডের নকশা কেমন হবে। এসব কার্ড নিজে বিক্রি করতে পারেন অথবা এলাকার কার্ডের দোকানগুলোতে সরবরাহ করতে পারেন। ঈদের অন্তত ১০ দিন আগে কার্ড তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। তাই যারা এ ব্যবসা করতে চাইছেন, কিনে ফেলুন প্রয়োজনীয় উপকরণ। সুন্দর একটি নকশার কার্ড তার চাহিদা যেমন বাড়িয়ে দেবে, তেমনি ভালো দাম পেতে পারেন এর মাধ্যমে। বাজারে পাওয়া যাচ্ছে এমন কার্ডের চেয়ে আলাদা ধরনের কার্ড বানাতে চেষ্টা করুন। তবে পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার বিনিয়োগ ও রুচির ওপর।

পোশাক
ছোট হোক বড় হোক ঈদে একটি নতুন কাপড় চাই-ই-চাই আর শিশু-কিশোরদের যেন নতুন কাপড় না হলে ঈদ হবেই না। তাই পোশাকে নিয়োগ করতে পারেন। বিশেষ করে ছেলেদের পাঞ্জাবির দোকান দিতে পারেন। এলাকার মোড়েই। পাঞ্জাবি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে রং ও ধরণকে বিবেচনায় রাখুন। পাইকারি দামে পাঞ্জাবি কিনতে পারেন। ঢাকার বঙ্গবাজার, গুলিস্তান, সদরঘাট ও ইসলামপুরে পাঞ্জাবির পাইকারি বাজার রয়েছে। তবে খুব সাবধানতার সাথে কিনতে হবে এবং এক সাথে অনেক মাল না কিনে অল্প অল্প কিনে বিক্রি করলে ঝুঁকি কম থাকে।

টুপি ও আতর
নামাজের জন্য টুপি, জায়নামাজ অতি প্রয়োজনীয় উপকরণ। ঈদের এ সময়টা আতর বিক্রি হয় বেশি। তাই সুবিধামতো কোনো স্থানে টুপি, জায়নামাজ ও আতরের পসরা সাজিয়ে বসতে পারেন। এ ব্যবসায় আপনার বিনিয়োগটাও লাগবে কম। এসব জিনিস নষ্ট হওয়ার আশঙ্কাও তেমন একটা থাকে না। আর এগুলো পাইকারি কিনতে যেতে হবে ঢাকার চকবাজার, মিটফোর্ড এবং বায়তুল মোকাররম। বায়তুল মোকাররম মসজিদের আশপাশের এলাকাতে রয়েছে বেশ কিছু পাইকারির দোকান।

উপহার সামগ্রী
যদি বিভিন্ন ধরনের নকশায় পারদর্শী হয়ে থাকেন, তাহলেই কেবল বিনিয়োগ করতে পারেন উপহার সামগ্রী তৈরি খাতে। ঈদের সময় অনেকেই প্রিয়জনকে উপহার দিতে বেছে নেবেন এসব পণ্য। বাঁশ-কাঠের নানা সৌখিন সামগ্রী। মাটির বিভিন্ন ধরনের ফুলদানি, কলমদানি, মোমদানি ও ছবির স্ট্যান্ডসহ বেশ কিছু পণ্য তৈরি করতে পারেন। কী কী জিনিস লাগবে সে সবের একটা তালিকা করে নিতে হবে। আর এসব কিনতে হবে পাইকারি দরে। পণ্যটি একটু আকর্ষণীয় হলেই ক্রেতাদের কাছ এর চাহিদা বেশি। ঈদের এ সময় ইচ্ছা করলে এরকম নানা ধরনের উপহার সামগ্রী নিজ হাতে তৈরি করে পাড়ার মোড়ের দোকানে বা শহরের বড় বড় দোকানে বিক্রি করতে পারেন।

ঘর সাজানোর সামগ্রী
ঈদের সময় অনেক আত্মীয়-স্বজন আসবে বাসায়। তাই সামর্থ্যরে মধ্যে ঘর না সাজালে নয়। এর জন্য ঘর সাজানোর পণ্যের ব্যাপক চাহিদা থাকে এ সময়। তাই এখানে অর্থ বিনিয়োগ করতে পারেন। আর এসব পণ্য তৈরি করতে পারেন মাটি, কাঠ, কাগজ ও বেত দিয়ে। এসব জিনিসের চাহিদা শুধু ঈদের সময়ই নয়, সারা বছরই রয়েছে চাহিদা। মনে রাখবেন পণ্যটি দেখতে যত সুন্দর হবে, সেটি দিয়ে ঘর সাজানো দেখতেও তত ভালো লাগবে। আর এর ফলে আপনার পণ্যের চাহিদা বেড়ে যাবে। যে কোনো আনন্দ উৎসবকে সামনে রেখে মৌসুমী ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করে আয় করতে পারেন। আর তা একদিন আপনার স্থায়ী উপার্জনের মাধ্যমও হতে পারে। উৎসবের এই ছোট আয়োজন ঘুরিয়ে দিতে পারে আপনার জীবনের মোড়।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ঈদের মৌসুমী পেশা

২৬ জুন, ২০১৬
আরও পড়ুন