পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : বাংলাদেশ উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, এই অগ্রযাত্রা রুখে দেয়া যাবে না। এখন সময় বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার। এই ধারায় আগামী ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে উন্নত দেশ। তিনি বলেন, চট্টগ্রামকে ঘিরেই বাংলাদেশের মানুষ স্বপ্ন দেখে। চট্টগ্রামের উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা জাতীয় উন্নয়নকে এগিয়ে নিচ্ছি।
গতকাল রোববার চট্টগ্রামের পাঁচ তারকা র্যাডিসন ব্লু হোটেলের মেজবান হলে চট্টগ্রাম চেম্বারের শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল বিজনেস কনফারেন্সে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বিগত ৭ বছরে নেয়া সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- তুলে ধরেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, এলএনজি টার্মিনাল, স্পেশাল ইকোনমিক জোন, মাতারবাড়ি এনার্জি হাব, গভীর সমুদ্রবন্দরের মতো মেগা প্রকল্পের পাশাপাশি ঢাকা-চট্টগ্রাম ইকোনমিক করিডোরের জন্য হাইস্পিড রেল, ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের জন্য চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন, উপকূলীয় মহাসড়ক নির্মাণ, আইসিটি সেক্টরে উচ্চতর পড়াশোনার সুযোগ সৃষ্টি, কক্সবাজার-চট্টগ্রাম-পার্বত্য চট্টগ্রামে পর্যটন হাব গড়ে তোলার মাধ্যমে অন্যরকম এক বাংলাদেশ উপহার দিতে সরকার কাজ করছে।
মন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক জাতির সামনে সুযোগ আসে। আমাদেরও সুযোগ এসেছে। ২০২০ সালে প্রবৃদ্ধি হবে ৮ শতাংশের মত। যদি প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে পারি তাহলে ২০৪০ সালে বাংলাদেশ থাকবে উন্নত বিশ্বের কাতারে। তখন আমাদের অর্থনীতি হবে পৃথিবীর ২৩তম অর্থনীতি। এমনকি থাইল্যান্ড, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, অস্ট্রেলিয়ার উপরে থাকব আমরা। এখন আমাদের রূপান্তরের সময়। সেই সুবর্ণরেখায় পৌঁছাবই।
সব সূচকেই বাংলাদেশ সঠিক পথে আছে জানিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, জাপান, চীন ও ভারত আমাদের সঙ্গে আছে। তারা পরস্পর প্রতিযোগিতা করছে। আমাদের (বাংলাদেশ) ছাড়া তারা এগিয়ে যেতে পারবে না। মোস্তফা কামাল বলেন, পৃথিবীর অর্থনীতিতে পরিবর্তন আসে। একসময় যারা সমৃদ্ধশালী ছিল আজ তারা সে অবস্থানে নেই। একসময় আর্জেন্টিনা শীর্ষে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র শীর্ষে। এরপর জার্মানি, জাপান, চীন হয়ে পরিবর্তন চলছে। এখন বাংলাদেশের সময়। বাংলাদেশ এখন যেখানে দাঁড়িয়ে শত চেষ্টা করেও কেউ তা পেছাতে পারবে না।
বিশ্বব্যাংক এবং গ্যালোপের বরাত দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, তাদের পূর্বাভাস বলছে ২০১৬ সালে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয় হবে। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে হবে তৃতীয়।
চট্টগ্রামের অর্থনৈতিক গুরুত্ব বিবেচনায় এ অঞ্চলকে ঘিরে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকা- এগিয়ে চলেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও পার্বত্য চট্টগ্রামে সাত বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে ৫৮টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন। সব বড় প্রকল্প চট্টগ্রামে দিয়েছি। তিন বছর পর চট্টগ্রাম শহর চিনতে পারবেন না। দেশের রাজস্ব আয়ের ৮০ শতাংশ চট্টগ্রাম থেকে এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ৭০ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে হয়। চট্টগ্রামের উন্নয়ন হলে জাতীয় উন্নয়ন তরান্বিত হবে।
প্রশ্নোত্তর পর্বে ব্যবসায়ী নেতা চট্টগ্রাম চেম্বারের সাবেক সহ-সভাপতি এম এ সালাম এবং বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী বিশ্ববাজারের সাথে সমন্বয় করে জরুরীভিত্তিতে জ্বালানী তেলের মূল্য সমন্বয় করার দাবি জানান। জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে সরকার সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা দিয়ে যাচ্ছে। এ বিষয়টিও সরকার অবশ্যই বিবেচনা করবে। পিএইচপি ফ্যামিলির চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমানের এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ব্যাংক খাতে শৃঙ্খলা বিরাজ করছে, খেলাপী ঋণ আদায়ে সরকার সচেষ্ট হয়েছে।
চেম্বারের শতর্বষ উদযাপন কমিটির চেয়ারম্যান এম এ লতিফ এমপি বলেন, শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন।
এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের ডেপুটি কান্ট্রি ডিরেক্টর ওলেগ তনকনোজেনকভ বলেন, ভারত-চীন এবং দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার সংযোগস্থল বাংলাদেশ। আঞ্চলিক সহযোগিতার সম্ভাবনা কাজে লাগাতে বাংলাদেশের অবকাঠামো উন্নয়নে আমরা কাজ করছি।
জাইকার সিনিয়র রিপ্রেজেনটেটিভ হিতোশি আরা বলেন, অবকাঠামো উন্নয়ন সব নয়। অবকাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণ, সরকারি-বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ এবং সুশাসন গুরুত্বপূর্ণ।
‘দ্যা বে অব বেঙ্গল গ্রোথ ট্রায়েঙ্গেল অ্যান্ড দ্যা মেরিটাইম সিল্ক রুট’ শীর্ষক মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এ কে খান অ্যান্ড কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালাউদ্দিন কাশেম খান। চেম্বারের সভাপতি মাহবুবুল আলমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন মিশরের রাষ্ট্রদূত মাহমুদ ইজ্জত, কলকাতার বেঙ্গল চেম্বারের সভাপতি সুতনু ঘোষ, এফবিসিআই’র প্রথম সহ-সভাপতি শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও স্টার্ন্ডাড চার্টাড ব্যাংকের প্রধান নির্বাহী আবরার এ আনোয়ার। আন্তর্জাতিক এ সম্মেলনে সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন, সংসদ সদস্য শামসুল হক চৌধুরী, দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সালমান ইস্পাহানি, ইঞ্জিনিয়ার আলী আহমদসহ বিভিন্ন দেশের চেম্বার প্রতিনিধি এবং কূটনীতিকরা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।