Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইইউ ছাড়ল ব্রিটিশরা

প্রকাশের সময় : ২৫ জুন, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১১:৪৭ পিএম, ২৪ জুন, ২০১৬

ইনকিলাব ডেস্ক : যুক্তরাজ্যের ঐতিহাসিক গণভোটে ইউরোপের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে ৪১ বছরের বন্ধন ছেঁড়ার পক্ষে রায় এসেছে। গত বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত এই ভোটের ফল আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণার আগেই বিচ্ছেদপন্থিদের জয় স্পষ্ট হয়ে যায়। বিবিসি বলেছে, ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট পড়েছে ৫২ শতাংশ, আর থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন সাড়ে ৪ কোটি ভোটারের ৪৮ শতাংশ।
রয়টার্স, গার্ডিয়ান, ইন্ডিপেন্ডেন্ট, স্কাই নিউজের প্রতিবেদনেও একই ধরনের ফলাফল জানিয়ে বলা হয়, ভোটে যুক্তরাজ্যে দ্বিধাবিভক্তি স্পষ্ট হয়ে গেছে। কিছুদিন ধরে বিশ্ববাসীর আগ্রহের কেন্দ্রে থাকা এই ভোটের ফল দেখে যুক্তরাজ্যের মুদ্রা বাজারে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। টলমলে হয়ে উঠেছে পুঁজিবাজারও। ইউরোপের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির দেশটির গণভোটের রায় ইইউর বাকি ২৭ সদস্য দেশের রাষ্ট্রনেতার কপালেও ভাঁজ ফেলেছে।
অভিবাসী ও গ্রিসকে উদ্ধারের পরিকল্পনা বাধাগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি নিজ নিজ দেশেও ইইউ ছাড়ার জিগির উঠতে পারে বলে শঙ্কা করছেন অন্য দেশগুলোর রাষ্ট্রনায়করা। গণভোটের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের ভবিষ্যতেও অনিশ্চয়তার ছায়া ফেলেছিল গণভোটের এই ফল। দাবি ওঠার প্রেক্ষাপটে গতকাল শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে ক্যামেরন পদত্যাগের ঘোষণাও দিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে গণভোটের রায়কে ঐতিহাসিক আখ্যায়িত করে ইইউ ছাড়ার পক্ষে জোর প্রচারকারী ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির নেতা মাইকেল ফারাজ বলছেন, জনগণ ‘স্বাধীনতার’ পক্ষে রায় দিয়েছে।
৪১ বছর আগে ইউরোপিয়ান ইকোনমিক কমিউনিটিতে (ইইসি) যোগ দেওয়ার প্রশ্নে গণভোট দিয়েছিল যুক্তরাজ্যবাসী। তাতে ৬৭ শতাংশ ইইসির পক্ষে ভোট দিয়েছিল। ওই ইইসিই পরে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ) রূপ নেয়। ২৮ জাতির জোটের সঙ্গে চার দশকের সম্পর্ক ছিন্ন করে নতুন পথে হাঁটার প্রশ্নে যুক্তরাজ্যের এই গণভোটকে সংক্ষেপে বলা হচ্ছে ‘ব্রেক্সিট’। গণভোটের ফল অনুসারে কাজ হলে যুক্তরাজ্যই হবে প্রথম দেশ, যারা ইইউ ছেড়ে বেরিয়ে যাচ্ছে।
যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় জোট থেকে বের করে আনার লক্ষ্যে কিছু ডানপন্থি রাজনীতিবিদের উদ্যোগে ১৯৯১ সালে গঠিত হয় ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টি। দলটি ২০১৩ সালে স্থানীয় কাউন্সিল নির্বাচনে সাফল্য পায় এবং প্রতিনিধিত্বের বিচারে যুক্তরাজ্যের চতুর্থ শক্তিশালী দলে পরিণত হয়। ইনডিপেনডেন্স পার্টির এই উত্থান কনজারভেটিভ পার্টির জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়ায়। এই পরিস্থিতিতে ২০১৫ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে অনেকটা চাপের মুখেই ইইউ প্রশ্নে গণভোটের প্রতিশ্রুতি দিতে বাধ্য হন কনজারভেটিভ নেতা ক্যামেরন, সেই ভোটের ফলই এখন তার গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ক্যামেরন ইইউর পক্ষে অবস্থান জানালেও তার দলের একটি বড় অংশ বিপক্ষে অবস্থান নেয়। তবে গণভোটের ফল ঘোষণার পরপরই ইইউর সঙ্গে বিচ্ছেদ হচ্ছে না যুক্তরাজ্যের। পুরো প্রক্রিয়া ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনের আগে সম্পন্ন হবে না বলে জানিয়েছে বিবিসি। লিসবন চুক্তির আর্টিকেল-ফিফটিতে স্বাক্ষরের পরও অন্তত দুই বছর ‘বিচ্ছেদ’ সংক্রান্ত আলোচনা চলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওই আলোচনাতেই ‘যুক্তরাজ্য কোন প্রক্রিয়ায় ইইউ ছাড়বে’ তা ঠিক হবে।
গণভোটের রায় ঘোষণার পরপরই ক্যামেরন ওই আর্টিকেলে স্বাক্ষর করবেন বলে আগে প্রতিশ্রুতি দিলেও ‘বিচ্ছেদপন্থী’দের শীর্ষ নেতা বরিস জনসন ও মাইকেল গোভ এ বিষয়ে ‘তাড়াহুড়ো’ না করতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান চানিয়েছেন। ইইউ’র নিয়ম অনুযায়ী, আর্টিকেল-ফিফটি চালু করা দেশ এরপর আবারও সংস্থায় ফিরতে চাইলে সদস্য সব রাষ্ট্রের সমর্থন লাগবে।
ক্যামেরনের পদত্যাগের ঘোষণা
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন আগামী অক্টোবর নাগাদ পদত্যাগ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকা না-থাকা নিয়ে গণভোটে ত্যাগে ইচ্ছুক জনতা জয়লাভের পর গতকাল শুক্রবার তিনি এ ঘোষণা দেন।
ইইউতে যুক্তরাজ্যের থাকা-না থাকা নিয়ে অনেক দিন ধরেই বিতর্ক চলে আসছে। বিষয়টি যে যুক্তরাজ্যের জন্য অর্থনৈতিক যন্ত্রণা হয়ে দাড়াবে, এ ব্যাপারে তিনি আগেই সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তার এই সতর্কতা উপেক্ষিত হয়েছে। গণভোটের রায়ে ত্যাগে ইচ্ছুক ব্যক্তিরা জয়ী হওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন তার লন্ডনের সরকারি বাসভবন ডাউনিং স্ট্রিটে সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি মনে করি না পরবর্তী গন্তব্যে দেশকে নিয়ে যেতে চালকের ভূমিকায় থাকা আমার জন্য ঠিক হবে।’
ভোটের ফল প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরনের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে আসে। চাপের মুখে পড়ে গত বছর গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেওয়া এ নেতার পদত্যাগের দাবি তোলেন লেবার ও ইউকে ইনডিপেনডেন্স পার্টির নেতারা। তবে ইইউ ছাড়ার পক্ষে জোর প্রচারক বরিস জনসন ও মাইকেল গোভসহ ৮৪ জন কনজারভেটিভ এমপি এক চিঠিতে ক্যামেরনকে প্রধানমন্ত্রী পদে থেকে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন। লেবার পার্টির প্রধান জেরমি করবিনও ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষে থাকতে প্রচার চালিয়েছেন। ভোটের ফল তার নেতৃত্বকেও চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অস্থিতরতায় বিশ্ববাজার, এশিয়াতেও বড় ধরনের প্রভাব
গণভোটের আগে মতামত জরিপ এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের বক্তব্যে মনে হয়েছিল, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হলেও ফল ইইউ’তে থাকার পক্ষেই আসবে। সে অনুযায়ী পাউন্ডের দামও বাড়ছিল। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার মুদ্রার দর বেড়ে দেড় ডলারের খানিকটা নিচে এসেছিল।
কিন্তু ফল ঘোষণার শুরুর পর এ দর নামতে থাকে। সর্বশেষ পাউন্ডের দর ১০ শতাংশ নেমে আসে, যা ১৯৮৫ সালের পর সর্বনিম্ন বলে জানিয়েছে বিবিসি। শুক্রবার লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জে এফটিএসই ১০০ সূচক খোলার মুখেই ৮ শতাংশ ধস নামে।
এ ঘটনায় বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ার বাজারের সূচকও কমেছে বলে গণমাধ্যমগুলো খবর দিয়েছে। পড়ে গেছে জ্বালানি তেলের দামও। গণভোটের প্রতিক্রিয়ায় ধস নেমেছে এশিয়ার পুঁজিবাজারেও। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি খবরটি নিশ্চিত করেছে। জাপানের স্টক এক্সচেঞ্জ সূচক নিক্কেই-২২৫ ৭ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১৪ হাজার ৯৮২ দশমিক ৪৮ পয়েন্টে দাঁড়ায়।
এদিকে দক্ষিণ কোরিয়ায় সূচক কোসপি ৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে ১ হাজার ৯০৯ দশমিক ১৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। ২০১১ সালের পর প্রথম এই ডলারের বিপরীতে কোরিয়ান মুদ্রার দাম সর্বোচ্চ কমল। এদিকে চীনের সাংহাই কম্পোজিট সূচক ১ দশমিক ২ শতাংশ কমে ২ হাজার ৮৫৭ দশমিক ৫৮ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্যদিকে হংকংয়ের স্টক এক্সচেঞ্চ হ্যাং স্যাংয়ের সূচক ৪ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ১৯ হাজার ৮৯৪ দশমিক ১২ পয়েন্টে পৌঁছেছে।
আর ভারতের মুম্বাইয়ের সেনসেক্স সূচক ৩ দশমিক ৪ শতাংশ কমে ২৬ হাজার ২২ দশমিক ৬০ পয়েন্টে।
উদ্বেগ ইইউতে
ভোটের এ ফল যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ইউরোপের অন্যান্য দেশের সম্পর্কে বাঁকবদল হবে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। এর ফলে গ্রিসকে দেউলিয়াত্বের হাত থেকে রক্ষা করতে ইইউর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন বাধাগ্রস্ত হবে; সিরিয়াসহ বিভিন্ন যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ থেকে আসা শরণার্থীদের নিয়েও জোটটি বিপদে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। অন্যান্য দেশগুলোও যুক্তরাজ্যকে অনুসরণ করে ইইউ ছাড়তে গণভোটের আয়োজন করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, যার নজির ফল ঘোষণার পরপরই দেখা যেতে শুরু করেছে। ভোটে যুক্তরাজ্যভুক্ত দেশগুলোতে আলাদা ফল হওয়ায় ‘যুক্তরাজ্য’র ঐক্যও প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে বলে বিবিসির এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক ধারণা করছেন।
স্পষ্ট দ্বিধাবিভক্তি
ভোটের আগেই ধারণা করা হয়েছিল যে লড়াই হবে হাড্ডাহাড্ডি, ফলাফলেও তার প্রতিফলনই ঘটেছে। ভোট মানচিত্রে দেখা যায়, গোটা যুক্তরাজ্যের উত্তর অংশ ইইউতে থাকার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, বিপরীতে দেশের দক্ষিণের প্রায় পুরো অংশ এই জোট ছাড়ার পক্ষে। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে বিচ্ছেদপন্থিরা জয়ী হলেও স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডে দেখা গেছে উল্টো চিত্র। তবে সবখানেই ব্যবধান খুবই কম। ইংল্যান্ডে ১ কোটি ৫২ লাখ ইইউ ছাড়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন। বিপরীতে থাকার পক্ষে ভোট পড়েছে ১ কোটি ৩৩ লাখ। এখানে ভোটের হার ৭৩ শতাংশ। ওয়েলসেও রায় গেছে ইইউ ছাড়ার পক্ষে। মোট ভোটারের ৭২ শতাংশ ভোট দিয়েছেন। ইইউ ছাড়ার পক্ষে ভোট সাড়ে ৮ লাখ, থাকার পক্ষে পৌনে ৮ লাখ। স্কটল্যান্ডে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন সাড়ে ১৬ লাখ, ছাড়ার পক্ষে ১০ লাখ। এখানে ভোটের হার ৬৭ শতাংশ।
একইভাবে উত্তর আয়ারল্যান্ডের সাড়ে ৪ লাখ ভোটার ইউতে থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সাড়ে ৩ লাখ ভোট দিয়েছেন ছাড়ার পক্ষে। এখানে ৬৩ শতাংশ ভোটার ভোট দিয়েছেন। রাজধানী লন্ডনের বেশিরভাগ ভোটার ইইউতে থাকার পক্ষে রায় দিয়েছেন। এখানে ৬০ শতাংশ ভোট পড়েছে থাকার পক্ষে, বাকি ৪০ শতাংশ বিপক্ষে।
স্বাধীনতা চাইতে পারে স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড
ব্রিটেনের গণভোটে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ রায়ের পর এখন ইউনাইটেড কিংডম অব গ্রেট ব্রিটেন বা যুক্তরাজ্যও টিকে থাকবে কিনা তা নিয়েও সংশয় তৈরি হয়েছে। গণভোটের ফলাফল থেকে বোঝা যায়, স্কটল্যান্ড, উত্তর আয়ারল্যান্ড এবং ওয়েলসেরও একটা অংশের ভোটাররা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের থাকার পক্ষে ভোট দিয়েছেন, যারা ইংল্যান্ড ছাড়া যুক্তরাজ্যের অংশ অন্য তিনটি রাজ্য। সুতরাং এখন প্রশ্ন উঠছে, ভোটের এই ফলাফলের পর তারা যুক্তরাজ্যের অংশ থাকবে কিনা।
বিশেষ করে স্কটল্যান্ডে দু’বছর আগেই স্বাধীনতা প্রশ্নে এক গণভোটে ১০ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে যুক্তরাজ্যে থাকার পক্ষের অংশ জয়ী হয়েছিল। উত্তর আয়ারল্যান্ডে বহু দশক ধরে স্বাধীন আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রের অংশ হবার দাবিতে সশস্ত্র সংগ্রাম চলেছে। যুক্তরাজ্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের অংশ হবার পর এ ব্যাপারটা অনেক কমে এসেছিল। তাই প্রশ্ন হলো, সেই পুরোনো দাবিগুলো এবার আবারো উঠবে কিনা।


 






































 






 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ইইউ ছাড়ল ব্রিটিশরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ