পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
গাজীপুরে অবৈধভাবে গড়ে ওঠা ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় প্রতিনিয়ত দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। এর প্রভাবে জনজীবনে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিচ্ছে। পরিবেশ অধিদফতরের অভিযান অব্যাহত থাকলেও কোন ভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না অবৈধভাবে গড়ে ওঠা এসব ইটভাটার কালো ধোঁয়া। এই পরিস্থিতিতে এরই মধ্যে উচ্চ আদালত ঢাকা ও আশপাশের ৪টি জেলায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ইটভাটাগুলো ১৫ দিনের মধ্যে বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
গাজীপুর পরিবেশ অধিদফতরের তালিকা অনুযায়ী ৩৫০টি ইটভাটার মধ্যে ২৬৯টি অবৈধ। সিটি কর্পোরেশন এলাকায় প্রায় ১৭০টি ভাটা থাকলেও একটিরও নেই বৈধ কাগজপত্র। এছাড়া শ্রীপুর উপজেলার ২২টি ভাটার মধ্যে মাত্র ৬টি বৈধ। বাকি ১৬টির নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। আর লাইসেন্স হালনাগাদ আছে মাত্র ২টির।
শুধু সিটি কিংবা শ্রীপুর না, জেলার কালিয়াকৈরে ৩৮টির মধ্যে মাত্র ২০টি বৈধ, কাপাসিয়ায় ৩২টির মধ্যে ১০টি বৈধ, কালীগঞ্জে ২২টির মধ্যে ৫টি বৈধ, সদর উপজেলার ৬৬টির মধ্যে ৪০টি বৈধ। অবৈধ এসব ভাটার নেই ট্রেড লাইসেন্স, পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র কিংবা জেলা প্রশাসকের অনুমোদনপত্র।
জেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অবৈধ ইটভাটাগুলো কোন নিয়ম না মেনেই ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় গড়ে উঠেছে। যেগুলোর ৫০০ মিটারের মধ্যেই রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক স্থাপনা। ইটভাটার কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন চারপাশ, অল্প দূরেই ভাওয়াল মির্জাপুর হাজী জমির উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ। মাঠে খেলা করছে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী। সোহেল নামে একাদশ শ্রেণির এক ছাত্রকে জিজ্ঞেস করা হলো- তোমাদের প্রতিষ্ঠানের পাশেই ইট পোড়ানো হচ্ছে, কালো ধোঁয়া উড়ছে, কোনও সমস্যা হচ্ছে না? উত্তরদাতা সোহেলের সঙ্গে আরও অনেকেই বলে উঠলো- সমস্যা হলেই বা কি! কয়দিন পর পর সরকারি লোকজন এসে ভেঙে দেয়, পরে আবার চালু হয়ে যায়। রাতদিন ধোঁয়া উড়তেই থাকে।
শুধু ভাওয়াল মির্জাপুর কলেজের পাশেই নয়, গাজীপুরে এমন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও আবাসিক এলাকায় অবৈধভাবে গড়ে উঠেছে ইটভাটা। যদিও স্কুল-কলেজের এক কিলোমিটারের মধ্যে কোনও ভাটা তৈরির নিয়ম নেই। তবুও সরকারি নিষেধাজ্ঞা তোয়াক্কা না করে দেদারছে গড়ে উঠেছে এসব অবৈধ ইটভাটা। কৃষিজমির মাটি কেটে ব্যবহার করা হচ্ছে ইট তৈরিতে। ইট পোড়াতে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে গাছ। ভাটার কালো ধোঁয়ায় মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন, দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকিতে স্থানীয় বাসিন্দারা। কৃষিজমিতে ইটভাটা গড়ে ওঠায় কৃষকরা অনেকটা বাধ্য হয়েই হারাচ্ছেন তাদের ফসলি জমি।
গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর এলাকার বাসিন্দা নাজিমুদ্দিন বলেন, কৃষিজমির পাশেই ইটভাটার কারণে এখন আর ধান ভালো হয় না। যার কারণে ধানক্ষেত করা ছেড়ে দিয়েছি। এখন চাল কিনে ভাত খাই।
গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের কড্ডা এলাকার বাসিন্দা সাইদুর বলেন, এখন তো কম চলছে ভাটা। কিছুদিন পর সমানে চলবে। ইটভর্তি ট্রাকগুলো যখন রাস্তায় ওঠে, তখন ধুলায় চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়।
কাপাসিয়ার আরেক ভুক্তভোগী লিটন মিয়া বলেন, ইটভাটায় ছোট চিমনী ব্যবহার করার কারণেই পরিবেশ দূষণ বেশি হচ্ছে। ইটভাটা বন্ধ হোক সেটা আমি চাই না। শুধু নিয়ম করে সঠিক স্থানে পরিবেশবান্ধব ভাটা তৈরি হলেই আর সমস্যা থাকবে না।
গাজীপুর জেলা পরিবেশ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. আবদুস সালাম সরকার জানান, আমরা অবৈধ ইটভাটার তালিকা তৈরি করেছি এবং অভিযানও শুরু করেছি। গত রোববার জেলার শ্রীপুরে অভিযান চালিয়ে ৩টি অবৈধ ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। অবৈধভাবে গড়ে ওঠা সকল ভাটা গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।