পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
চট্টগ্রাম ব্যুরো : পুলিশ যখন সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করছে তখন জামিনে বেরিয়ে যাচ্ছে জঙ্গিরা। গত দুই মাসে অন্তত ১৪ জন জঙ্গি জামিনে মুক্ত হয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বের হয়ে গেছে। বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা উচ্চ আদালত থেকে জামিন নিয়ে বের হতেই ফের কারাফটকে আটক হচ্ছেন। নতুন নতুন মামলায় তাদের আসামি দেখিয়ে চালান দেয়া হচ্ছে। জঙ্গিদের ব্যাপারে দেখা যাচ্ছে ভিন্নচিত্র। জামিন পেয়ে তারা নিরাপদেই কারাগার থেকে গন্তব্যে চলে যাচ্ছে।
নিষিদ্ধ ঘোষিত হিযবুত তাহরীরের প্রধান সমন্বয়কারী শেখ ওমর শরীফ গত ৩০ মে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। একই দিনে জামিনে বেরিয়েছেন হরকাতুল জেহাদ-হুজি নেতা আবুল কালাম। এভাবে গত দুই মাসে চিহ্নিত বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের কমপক্ষে ১৪ জন সদস্য জামিন পেয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বেরিয়ে গেছে। জঙ্গি ধরতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দেশজুড়ে সাঁড়াশি অভিযান চালালেও জামিনে মুক্ত হওয়া জঙ্গিদের দিকে নজর নেই তাদের। চট্টগ্রামে পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুসহ দেশের কয়েকটি এলাকায় কয়েকজনকে কুপিয়ে হত্যার পর টানা এক সপ্তাহ সাঁড়াশি অভিযান চালায় পুলিশ। এ অভিযানে চট্টগ্রামে ২ হাজারের মতো লোকজনকে গ্রেফতার করা হলেও তাতে কথিত জঙ্গি সংগঠনের সদস্য ছিল মাত্র ৩ জন। বাইরের জঙ্গিদের ধরতে পুলিশের তোড়জোড়ের শেষ নেই। অথচ একের পর এক জামিনে বের হয়ে যাচ্ছে কারাবন্দি জঙ্গিরা।
চিহ্নিত জঙ্গিদের জামিনের জন্য চট্টগ্রাম মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট ফখরুদ্দিন দায়ী করেছেন পুলিশকে। তিনি বলেন, জঙ্গিদের বিরুদ্ধে মামলাগুলো হয় সন্ত্রাস দমন আইনে। তারাই মামলার এজাহার দাখিল করে, অভিযোগপত্র প্রস্তুত করে, আসামিদের জন্য ফরোয়ার্ডিং দাখিল করে। একমাত্র বিচারের জন্য প্রস্তুত হওয়ার পরই সেটা কৌসুলিদের কাছে যায়। সুতরাং জামিনের দায়টাও পুলিশেরই।
তবে নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (অপরাধ ও অভিযান) দেবদাস ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, জামিন হলেও চিহ্নিত জঙ্গিদের কঠোর নজরদারির মধ্যে রাখা হচ্ছে। তারা নিয়মিত থানায় এসে হাজিরা দেবে, এই মর্মে তাদের জামিনে মুক্ত করা হচ্ছে। তাদের স্থায়ী-অস্থায়ী ঠিকানা থানায় সংরক্ষিত আছে। সুতরাং তারা নজরদারিতে থাকছে।
চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের আটক ও জামিনে মুক্ত হওয়া জঙ্গিদের নিয়ে ৫৯ জনের একটি তালিকা তৈরি করেছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি)। তালিকা পর্যবেক্ষণে ১৪ জনের মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। এর মধ্যে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৮ জন, জেএমবির একজন ও হরকাতুল জেহাদের আছে দু’জন। জঙ্গি কার্যক্রমে অভিযুক্ত শহীদ হামজা ব্রিগেডের আছে তিনজন।
সূত্রমতে, হিযবুত তাহরীরের জামিনে মুক্ত হওয়া সদস্যরা হলো বোয়ালখালীর রায়হানুল ইসলাম ও হাবিবুন্নবী ওরফে আশিকুর রহমান, কক্সবাজারের পেকুয়ার আরিফুল ইসলাম ও কুতুবদিয়ার ইফতেখারুল ইসলাম, সীতাকু-ের আব্দুল কাদির, হাটহাজারীর মো. ইসমাইল, জামালপুরের মো. আবুল কালাম এবং চাঁদপুরের শেখ ওমর শরীফ (সাবেক সহকারী জজ)।
হিযবুত তাহরীরের সদস্যরা ৪ এপ্রিল থেকে ১ জুন পর্যন্ত সময়ের মধ্যে জামিনে বেরিয়ে গেছেন। এর মধ্যে ২০ এপ্রিল একদিনেই বেরিয়ে গেছে হিযবুত তাহরীরের তিন সদস্য। হুজির সদস্য পাবনার মো. আবদুল্লাহ আল আমিন গত ১৩ এপ্রিল এবং জামালপুরের মো. আবুল কালাম ২০ এপ্রিল মুক্তি পেয়েছেন। ৪ মে জেএমবির নীলফামারীর মো. আবু হাফিজ চট্টগ্রাম কারাগার থেকে জামিনে বেরিয়ে গেছে। শহীদ হামজা ব্রিগেডের হালিশহরের মোছাম্মৎ রহিমা আক্তার ৭ মে ও এনামুল হক ২০ জুন জামিনে বেরিয়ে গেছেন।
কারা কর্মকর্তাদের সূত্রে জানা গেছে, চিহ্নিত প্রত্যেক জঙ্গি সদস্য জামিনে মুক্ত হওয়ার আগে জেলা ও নগর পুলিশের বিশেষ শাখাকে অবহিত করা হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অন্য কোনো মামলায় পরোয়ানা কিংবা গ্রেফতার দেখানোর প্রয়োজন আছে কিনা সেটা খতিয়ে দেখার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশের পক্ষ থেকে এসব অভিযুক্ত জঙ্গি সদস্যদের বিষয়ে জোরালো কোনো পদক্ষেপ দেখেননি কারা কর্মকর্তারা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।