পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঘোষণা ছিল ১৯ মেট্রিক টন শপিং ব্যাগ তৈরির কম দামের টিস্যু আমদানির। তবে কন্টেইনার খুলে পাওয়া গেল ২৬ টনের বেশি মূল্যবান বোরকার ফেব্রিক্স। মিথ্যা ঘোষণায় চীন থেকে আনা ওই চালানের মাধ্যমে প্রায় ৬০ লাখ টাকা শুল্কফাঁকি দেওয়া হচ্ছিল। কন্টেইনারটি খুলে শতভাগ কায়িক পরিক্ষা শেষে গতকাল বৃহস্পতিবার জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্কফাঁকির এই প্রচেষ্টা ভ-ুল করেন চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের কর্মকর্তারা। হংকং থেকে সাড়ে ২৩ টন পেরেক আমদানির ঘোষণা দিয়ে ২৬ টন নাট-বোল্টের আরও একটি চালান ধরা পড়ে। ওই চালানটির মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা শুল্কফাঁকির চেষ্টা হচ্ছিল।
এ নিয়ে গত তিন সপ্তাহে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে মিথ্যা ঘোষণায় আনা পাঁচটি বড় চালান ধরা পড়লো। এসব চালানে শুল্কফাঁকি দেওয়া হচ্ছিল তিন কোটি আট লাখ টাকা। শুল্ক, কর ও রাজস্ব ফাঁকি দিতে প্রতিনিয়তই মিথ্যা ঘোষণায় পণ্য আমদানি হচ্ছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে প্রায়ই ধরা পড়ছে এ ধরনের চালান। চট্টগ্রাম কাস্টম হাউসের এআইআর শাখার হিসাবে গেল দুই মাসে এ ধরনের অসংখ্য চালান ধরা পড়েছে। তার মধ্যে সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা শুল্কফাঁকির চেষ্টা হয়েছে এমন বড় চালানের সংখ্যা ৫৯টি। এসব চালানের মাধ্যমে প্রায় ২৫ কোটি টাকা শুল্কফাঁকির ঘটনা ধরা পড়ে।
আমদানি-রফতানি সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অর্থমন্ত্রী এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কড়া নির্দেশনায় জালিয়াতি প্রতিরোধে অতীতের যেকোন সময়ের তুলনায় এখন সক্রিয় চট্টগ্রাম কাস্টম হাউস। আর এ কারণে বড় বড় চালান ধরা পড়ছে। তবে এখনও মিথ্যা ঘোষণা আর নানা জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য আমদানি করে শুল্কফাঁকির প্রবণতা কমেনি। একশ্রেণির অসাধু আমদানিকারক মিথ্যা ঘোষণায় সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা আবার বিদেশে অর্থপাচারও করছে।
পণ্য আমদানির জন্য বিদেশে কোটি কোটি টাকা পাঠিয়ে সেখান থেকে খালি কন্টেইনার ও ইট, বালু আনার ঘটনাও ধরা পড়ছে। সম্প্রতি ডাবল-এ ফোর সাইজের কাগজ, প্লাস্টিক দানা, তুলা ও সুতার বদলে কন্টেইনার ভর্তি বালু আনার ঘটনায় বড় চারটি চালান ধরা পড়ে। হুইল চেয়ারের নামে আসে কন্টেইনার ভর্তি ইট। এছাড়া ক্যাপিটাল মেশিনারিজের নামে সিগারেটের দুটি চালানও জব্দ করে কাস্টম হাউস কর্তৃপক্ষ। এসব আমদানিকারকদের বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগ রয়েছে। তা তদন্ত করছে কাস্টম হাউসের সংশ্লিষ্ট শাখা।
কাস্টম হাউসের ডেপুটি কমিশনার নূর উদ্দিন মিলন ইনকিলাবকে বলেন, ননওভেন ম্যাটেরিয়েল ঘোষণা দিয়ে বোরকার ফেব্রিক্স আনা পুরো চালানটি ছিলো মিথ্যা ঘোষণার। চীন থেকে চালানটি আসে গত বছর। সন্দেহ হওয়ায় আগে থেকেই চালানটির উপর নজরদারি ছিলো। আর তা বুঝতে পেরেই সম্ভবত আমদানিকারক এতোদিন ছাড় করেননি। গত ২৮ নভেম্বর আমদানিকারকের প্রতিনিধি আমদানি পণ্য খালাসের জন্য চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করে। আর তখনই চালানটি লক করে দিয়ে কাস্টম হাউসের এআইআর শাখা খালাস স্থগিত করে।
সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা মোতাহার হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, কন্টেইনারটি খুলে তাতে প্রায় ২৫ টনের মতো মূল্যবান বোরকার ফেব্রিক্স ও আরও এক টনের বেশি কটন ফেব্রিক্স পাওয়া যায়। ঘোষণা ছিলো ১৯ টন শপিং ব্যাগ তৈরীর টিস্যু আমদানির। চালানটির মাধ্যমে ৬০ লাখ টাকা শুল্কফাঁকির চেষ্টা হচ্ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান রাজধানী ঢাকার পটুয়াটুলি লয়েল স্ট্রিটের সোনালী এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। চালানটির সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট চট্টগ্রাম নগরীর আগ্রাবাদ শেখ মুজিব রোডের সিদ্দিক ভবনের এ্যানি এন্টারপ্রাইজ।
আগের দিন পেরেক ঘোষণায় নাট-বোল্টের একটি চালান আটক করা হয়। চট্টগ্রামের নীল ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের চালানটি খালাসের দায়িত্বে ছিল নগরীর দেওয়ানহাটের সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট মা অ্যান্ড সন্স প্রাইভেট। উপ-কমিশনার নুর উদ্দিন মিলন বলেন, মিথ্যা ঘোষণায় হংকং থেকে আসা চালানটি খালাসের পর্যায়ে দুটি ট্রাক আটক করা হয়। তাদের ঘোষণা ছিল ২৩ হাজার পাঁচশ কেজি পেরেক। কিন্তু কায়িক পরীক্ষায় পেরেক পাওয়া গেছে মাত্র পাঁচশ কেজি। আর নাট-বোল্ট পাওয়া গেছে ২৬ টন। পেরেক এবং নাট-বোল্টের মধ্যে শুল্কের ফারাক অনেক বেশি জানিয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা রাজস্ব ফাঁকি ধরা পড়েছে। চালানটি আটক করা হয়েছে।
এর আগে গত ২৭ নভেম্বর একটি পোশাক কারখানার জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা টাউজার তৈরির পলিস্টার ফেব্রিক্সের ঘোষণায় আনা ২২ মেট্রিক টন মূল্যবান বোরকার ফেব্রিক্স ধরা পড়ে। বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে আনা ওই চালানের মাধ্যমে ৪৮ লাখ টাকা শুল্কফাঁকি দেয়া হচ্ছিল। একই দিন চীন থেকে মিথ্যা ঘোষণায় আসা শস্য দানার চালানে পাওয়া যায় মূল্যবান পানীয় ও চকোলেট। ওই চালানটির মাধ্যমে ৮০ লাখ টাকা শুল্কফাঁকির প্রচেষ্টা ভ-ুল করে দেয়া হয়।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ১৩ মেট্রিক টন ভুট্টার দানা ও নয় মেট্রিক টন মটরশুঁটি দানা আনার ঘোষণা দেয়। কন্টেইনারটি খুলে তাতে ঘোষিত পণ্য পাওয়া গেছে মাত্র পাঁচ কেজি। তাতে ২২ মেট্রিক টন চকোলেট ও জুস পাওয়া যায়। তার আগে ১৩ নভেম্বর পানির পাম্পের ঘোষণায় মূল্যবান প্রসাধনী আমদানির মাধ্যমে সোয়া কোটি টাকা রাজস্বফাঁকির আরও একটি ঘটনা ধরা পড়ে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।