পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
# খালেদা জিয়া সন্ত্রাসীদের গডমাদার
# অগ্নি সন্ত্রাসী ঠান্ডা মাথার খুনিরা যেন আর ক্ষমতায় আসতে না পারে
এতিমের টাকা আত্মসাৎ করে খালেদা জিয়া এখন জেলে রাজার হালে আছেন মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, হরতাল-অবরোধ দিয়ে খালেদা জিয়া মানুষকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে। সেই অবরোধ-হরতাল এখনও তোলেনি। তার হুকুমে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত বোন বিধবা হয়েছে! সে তো জেলে বেশ ভালো আছে, রাজার হালে আছে। তার জন্য আবার কারও কারও মায়াকান্নাও দেখি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর কোনো দেশে এই দৃষ্টান্ত কেউ দেখাতে পারবে যে, কোনো সাজাপ্রাপ্ত আসামির সেবার জন্য কাজের বুয়া যায়। সেটাও কিন্তু সে পাচ্ছে। আমাদের মধ্যে ওরকম কোনো প্রতিহিংসা পরায়ণতা নেই। জেলাখানায় খালেদা জিয়াকে সকল সুবিধা দেয়া হচ্ছে, এটা হলো বাস্তবতা। যারা খালেদা জিয়ার জন্য মায়া কান্না করেন তারা একটুও ওই সকল মানুষের কথা চিন্তা করেন না যাদের পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বিএনপি চেয়ারপারসনকে খালেদা জিয়াকে সন্ত্রাসের গডমাদার আখ্যায়িত করে শেখ হাসিনা বলেন, সন্ত্রাসের গডমাদারই হচ্ছে খালেদা জিয়া। সে এই বাংলা ভাই সৃষ্টি থেকে শুরু করে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারা, ঠা-া মাথায় হরতাল অবরোধ ডেকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছে। যার জনগণকে পুড়িয়ে হত্যা করেছে তারা কীভাবে মনে করে জনগণ তাদের ভোট দেবে? এসব ঠা-া মাথার খুনিরা যেন আর কোনো দিন ক্ষমতায় আসতে না পারে।
গতকাল গণভবনে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভায় প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিন বছর পর দলের এই ফোরামটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর আগে, ২০১৬ সালের ১৫ অক্টোবর ২০তম জাতীয় সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের জাতীয় কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়।
হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার জন্য নতুন কিছু নয় বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়া বিদেশে গিয়ে হুইল চেয়ারে করে শপিং করতেন, এমনকি হজ্বও করেছেন। তিনি যখন ১৯৯১ সালে ক্ষমতায় আসেন, তখন আমেরিকায় গিয়ে পায়ের নী-ক্যাপ (হাটুর বাটি) রিপ্লেস করেছিলেন, অপারেশনও হয়। তারপর আবার সউদী আরবে অপারেশন করান। খালেদা জিয়া যখন বিদেশে গেছেন, তখন তো হুইল চেয়ারে শপিং করতেন। ফালু হুইল চেয়ার ঠেলত, আর খালেদা জিয়া শপিং করত। সে (খালেদা জিয়া) যখন হজে যায়, তখনও ফালু হুইল চেয়ার ঠেলেছে, খালেদা জিয়া হজ করেছে। কাজেই এই যে হুইল চেয়ারে বসা, এটি নতুন কিছু না। এটি তো আমরা বহু যুগ ধরে দেখে আসছি। তারপরও আবার তার জন্য আন্দোলন। তিনি এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন। আল্লাহ তো বলে দিয়েছেন যে এতিমের অর্থ আত্মসাৎ করে, আল্লাহ নিজেই তার ব্যবস্থা নেন। এতিমের নামে টাকা এসেছে, সে টাকা সে চুরি করছে। আর সে মামলা দিয়েছে তারই প্রিয় ব্যক্তিরা, যারা ক্ষমতায় ছিল। তার বিরুদ্ধে গ্যাটকোর কেস, তার বিরুদ্ধে নাইকোর কেস।
বিএনপির অত্যাচারের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জিয়া পরিবারটাই খুনি পরিবার। ভোট চুরি, মানুষ হত্যা, আগুন দিয়ে পোড়ানো, এতিমের অর্থ আত্মসাৎ, দুর্নীতি, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলায় আইভী রহমানসহ মানুষ হত্যা অর্থাৎ জিয়া যেমন খুনি ছিল, খালেদা জিয়াও আরেক খুনি, তার ছেলেও খুনি। এই পরিবারটাই খুনের পরিবার। তারা মানুষ খুন, দুর্নীতি ও অর্থ আত্মসাৎ করা ছাড়া আর কিছুই জানে না।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালকে স্বর্ণযুগ আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সে সময় খাদ্যে স্বয়ং সম্পূর্ণতা অর্জন করেছে দেশ, বৈদেশিক বিনিয়োগ বেড়েছিল, দেশে অনেক উন্নয়ন হয়েছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত ২০০১ সালে ষড়যন্ত্রের কারণে ক্ষমতায় আসতে পারিনি। এরপর বিএনপি এসেই শুরু করে অত্যাচার। জিয়া যেমন বিমান বাহিনী, নৌবাহিনীর অফিসারদের হত্যা করেছে, ঠিক তেমনি খালেদা জিয়া প্রতিটি জেলায় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের জেল-জুলুম অত্যাচার নির্যাতন করে। বাংলা ভাইয়ের উত্থান হয়, নাটোরে আমাদের এক কর্মীকে হত্যা করে শত টুকরো করে মাটিতে পুতে ফেলে। বাংলা ভাই আইনজীবী, বিচারকদের হত্যা করে।
তিনি বলেন, ক্ষমতায় এসে বিএনপি একই দিনে অনেক সচিবের চাকরি খেয়েছে, অনেককেই ওএসডি করা হয়, বিএনপির ক্ষমতায় থাকতে আর তারা কাজে ফিরতে পারে নেই। অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে অনেক কে হত্যা করা হয়েছে এবং ১৫ আগস্টের মত ইমডেমনিটি করে হত্যার বিচারের পথ বন্ধ করা হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার জন্য অনেকের মায়াকান্না দেখি। খালেদা জিয়া যে মানুষকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে হত্যা করলো এটা তারা ভুলে যায় কেন? মানুষকে কীভাবে তারা অত্যাচার করেছে সেটা ভুলে যায় কেন? তার হুকুমে কত মায়ের কোল খালি হয়েছে, কত বোন বিধবা হয়েছে, কত বোন আগুনে পুড়ে বিকৃত চেহারা হয়েছে। ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক, আইনজীবী কেউ তো বাদ যায়নি। সে বীভৎস অবস্থাাটা নিয়ে মানুষ বেঁচে আছে। তারপর এই দরদটা যারা দেখায়, তাদের আবার আগুনে পোড়া মানুষের চেহারাটা একটু দেখে আসা উচিত।
দেশে কথা বলার অধিকার নেই বলে যারা সরকারের সমালোচনা করেন তাদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, টক শোতে যেয়ে টক মিষ্টি কথা বলার কত সুযোগ মানুষ পাচ্ছে। টক টক কথা তো বলেই যাচ্ছে। আজকে মানুষের এত কথা বলার সুযোগ, অত কথা বলার পরেও বলছে এ সরকারের আমলে কথা বলার অধিকার নেই। বলে যাচ্ছে কিন্তু। আসলে এ ধরনের পরচর্চা করা তাদের অভ্যাস।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পরেই দেশের মানুষের উন্নতি হয়েছে দাবি করে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, এর আগে অনেকে অনেক কিছুই বলতে পারে। এটা হয়েছে ওটা হয়েছে। ও এনজিও করেছে তার জন্য দেশ উন্নতি হয়েছে। কিন্তু উন্নতি যদি হতো তাহলে দারিদ্র্যের হার কমেনি কেন? প্রবৃদ্ধির হার বাড়েনি কেন? মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নতি হয়নি কেন? একমাত্র আওয়ামী লীগ যখন সরকারে এসেছে, তখন হয়েছে। আজকে আমরা ৮ দশমিক ১৩ ভাগ প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছি। মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রামে গঞ্জে মা বোন থেকে শুরু করে প্রত্যেকের কর্মসংস্থাানের ব্যবস্থাা হয়েছে।
সভা পরিচালনা করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতির একপাশে দলের উপদেষ্টা পরিষদ সদস্য ও সভাপতিম-লির সদস্যরা ছিলেন। উপস্থিাত ছিলেন, উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যদের মধ্যে আমির হোসেন আমু, আবুল মাল আবদুল মুহিত, তোফায়েল আহমেদ। সভাপতিম-লির সদস্যদের মধ্যে বেগম মতিয়া চৌধুরী, মোহাম্মদ নাসিম, কাজী জাফরউল্লাহ, আব্দুর রাজ্জাক, রমেশ চন্দ্র সেন, আবদুল মতিন খসরু, নুরুল ইসলাম নাহিদ, কর্নেল (অব.) মুহাম্মদ ফারুক খান, পীযূষ কান্তি ভট্টাচার্য, আব্দুল মান্নান খান, কোষাধ্যক্ষ এইচ এন আশিকুর উপস্থিাত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।