পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : চট্টগ্রামের আন্দরকিল্লা শাহি জামে মসজিদ। বারান্দাজুড়ে সারিবদ্ধ বসে হাজার হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ। শিশু থেকে বৃদ্ধ, কিশোর থেকে যুবক। নানা বয়স, আর নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ পাশাপাশি। নেই ধনী গরীব, শ্রেণি-পেশার ভেদাভেদ। সবার সামনে ইফতার সামগ্রী। সাইরেন বাজতেই দোয়া পড়ে শুরু ইফতার। সাড়ে তিনশ’ বছরের ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে এমন দৃশ্য প্রতিদিনের ইফতারে। নগরীর জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ, জিইসি মোড়স্থ প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় জামে মসজিদ, বলুয়ারদীঘি আলমগীর খানকাহ শরীফসহ নগরীর অনেক মসজিদ ও খানকায় চলছে সম্মিলিত ইফতারির আয়োজন। সব পরিচয় ভুলে শুধুমাত্র রোজাদার পরিচয়ে এক কাতারে শামিল হয়ে একসাথে ইফতার করছে হাজারো মানুষ। মুসলিম সৌভ্রাতৃত্বের এ যেন এক অনন্য নজির।
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে প্রথম রোজা থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার মুসল্লি ইফতার করছেন। মসজিদের খতীব সাইয়্যেদ আনোয়ার হোসাইন তাহের জাবেরীর উদ্যোগে এই ইফতারীর আয়োজন। পুরো আয়োজন তদারক করছেন মুসল্লিদের একটি কমিটি। খতিব প্রিন্সিপাল মাওলানা জালালুদ্দীন আল কাদেরীর উদ্যোগে ৩২ বছর ধরে জমিয়াতুল ফালাহ মসজিদে চলছে ইফতারী আয়োজন। প্রতিদিন কয়েক হাজার মানুষ সেখানে ইফতার করছেন।
আর এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর উদ্যোগে নগরীর জিইসি মোড়ে প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদে চার বছর ধরে চলছে ইফতারি। তাতে শরিক হচ্ছেন শত শত মুসল্লি। আনজুমান ট্রাস্টের উদ্যোগে আলমগীর খানকায় সম্মিলিত ইফতারির আয়োজন চলছে কয়েক বছর ধরে। মহানগরী আর অসংখ্য মসজিদে এমন আয়োজন চলছে। ইফতার আয়োজনে যে খরচ তা বহন করেন নগরীর ধনাঢ্য ব্যক্তি ও ব্যবসায়ীরা। অনেকে নীরবে মসজিদে এসে টাকা পয়সা দিয়ে যাচ্ছেন।
এসব টাকায় কেনা হয় ইফতার সামগ্রী। মসজিদের পাশে সামিয়ানা টানিয়ে তৈরী হয় ইফতার। আসরের আগেই ইফতার তৈরী শেষ। আসরের পর শুরু হয় মাহে রমজানের ফজিলত বর্ণনা করে বয়ান। ইসলামের বিভিন্ন দিক ও বিষয়েও আলোচনা হয়। মুসল্লিরা শরিক হন আলোচনায়। ততক্ষণে ইফতারী পরিবেশন শেষ। ইফতার সামনে নিয়ে রোজাদাররা অপেক্ষা করেন কখন আযান হবে। তার আগে চলে দোয়া দরূদ পাঠ, বিশেষ মুনাজাত।
মসজিদের বারান্দায় শামিয়ানার নিচে কয়েক সারিতে ও মসজিদের ভেতরেও বসে ইফতার করেন মুসল্লিরা। ইফতারিতে খেজুর, ছোলা, পেঁয়াজু, জিলাপি, সমুচা, নিমকি, মুড়ি, শরবতসহ বেশ কয়েকটি পদ পরিবেশন করা হয়। মসজিদের ইফতারে শরিক হন অনেকে। তাদের মধ্যে আছেন মসজিদের নিয়মিত মুসল্লি, আছেন পথচারী, আশপাশের ব্যবসায়ী দোকানি। ফুটপাতের ফকির মিসকিনেরাও শরিক হন ইফতারে। নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকেও লোকজন এসব ইফতার আয়োজনে শরিক হচ্ছেন। বাড়িতে বাহারি ইফতার ফেলে অনেকে ছুটে আসেন মসজিদে।
আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদের খতিবের সহকারী হাসান মুরাদ বলেন, প্রতিদিন দুই থেকে আড়াই হাজার মুসল্লি ইফতার করেন। বিগত ২০০৮ সাল থেকে মসজিদের খতিবের উদ্যোগে সুপরিসর এই ইফতারির আয়োজন। আগে সীমিত পরিসরে ইফতার হতো। সম্মিলিত ইফতারি আয়োজনের কারণে মুসল্লিরা ইসলামের বিভিন্ন দিক ও বিষয়ে আলোচনা শুনতে পারছেন। আবার এক সাথে ইফতার ও জামায়াতে নামাজ আদায় করার সুযোগও কাজে লাগাতে পারছেন।
জমিয়াতুল ফালাহর খতিব মাওলানা জালালুদ্দীন আল কাদেরী ৩২ বছর আগে মসজিদে ইফতারির আয়োজন শুরু করেন। দিনে দিনে আয়োজন আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। বেশ কয়েকজন মুসল্লি এই আয়োজনে সহযোগিতা করে আসছেন। সকালে বাজার করে শুরু করে ইফতারি তৈরী। জোহরের পর পর ইফতার তৈরী শেষ করে আসরের পর শুরু হয় পরিবেশন। হাজার হাজার মুসল্লি সারিবদ্ধভাবে বসে ইফতার সারেন।
নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি সাবেক মেয়র এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বাড়িতে ইফতারের আয়োজন হয়ে আসছে দীর্ঘদিন থেকে। এর পাশাপাশি গত চার বছর ধরে প্রিমিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় মসজিদেও বড় আয়োজনে ইফতার চলছে। প্রতিদিন সেখানে শত শত মানুষ ইফতার করছেন। মাঝে মধ্যে তিনি নিজেও সেখানে ইফতারিতে শরিক হন।
চট্টগ্রামে প্রথম দু’দিনে রেলে অগ্রিম টিকিটের বেশির ভাগ অবিক্রিত
চট্টগ্রাম ব্যুরো : রেলের আগাম টিকিট বিক্রি শুরু হলেও প্রথম দুইদিন বেশির ভাগ টিকিট অবিক্রিত থেকে গেছে। গতকাল (বৃহস্পতিবার) চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে ২ জুলাইয়ের অগ্রিম টিকিট বিক্রি করা হয়। স্টেশনে টিকিট প্রত্যাশীদের তেমন ভিড় ছিল না। বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা মিজানুর রহমান জানান, দ্বিতীয় দিনেও অগ্রিম টিকিট বিক্রির কার্যক্রম জমে ওঠেনি। যাত্রীদের উপস্থিতি কম থাকায় টিকেটের চাহিদাও কম। গতকাল ৭ হাজার টিকেট বরাদ্দ ছিল। আজ শুক্রবার থেকে আশা করছি টিকিটের চাহিদা বাড়বে।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, অগ্রিম টিকেট বিক্রি কার্যক্রমে আজ ৩ জুলাই, ২৫ জুন ৪ জুলাই ও ২৬ জুন দেওয়া হবে ৫ জুলাইয়ের টিকিট। একইভাবে ৪ জুলাই ৮ জুলাইয়ের ফিরতি টিকিট দেওয়া হবে। ৫ জুলাই ৯, ৬ জুলাই ১০, ৭ জুলাই ১১ ও ৮ জুলাই ১২ জুলাইয়ের টিকেট দেওয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।