পোশাক রপ্তানিতে উৎসে কর ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব
আগামী পাঁচ বছরের জন্য তৈরি পোশাক রপ্তানির বিপরীতে প্রযোজ্য উৎসে করহার ১ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০.৫ শতাংশ নির্ধারণের প্রস্তাব করেছে পোশাক খাতের দুই সংগঠন
অর্থনৈতিক রিপোর্টার ঃ মোবিক্যাশের ৩০ হাজার ৫শ’ এজেন্টকে আলাদা ব্যাংক হিসাব খোলা ও পরিচালনার জন্য মোবাইল অপারেটর গ্রামীণফোনকে নির্দেশ দিলেও তারা সে অনুযায়ী কাজ করেনি। পার হয়ে গেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বেঁধে দেয়া ছয় মাস সময়। তাই এ কাজটি শেষ করার জন্য সম্প্রতি আরও তিন মাস অতিরিক্ত সময় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সম্প্রতি গ্রামীণফোন লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেস লেনদেন স্বচ্ছ, স্ষ্ঠুু ও নিরাপদ রাখা ও হিসাবায়ন সহজ করার জন্য ৬ মাস সময়ের মধ্যে আপনাদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ প্রতিটি ব্যাংকের জন্য এজেন্টদের পৃথক পৃথক হিসাব খোলা ও পরিচালনা করতে বলা হয়েছিল। যার সময়সীমা ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। এ অবস্থায় আগামী তিন মাসের মধ্যে বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার পুনরায় পরামর্শ দেয়া হলো। সেই সঙ্গে প্রতি মাসে এর অগ্রগতি প্রতিবেদন বাংলাদেশ ব্যাংকে দাখিল করতে বলা হয়েছে। পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগ থেকে এ চিঠিটি গ্রামীণফোনকে দেয়া হয়েছে। এসব এজেন্টের মাধ্যমে সেবা দেয়ার জন্য ছয়টি ব্যাংকের সঙ্গে গ্রামীণফোনের চুক্তি রয়েছে। এখন মোবাইল ব্যাংকিং সেবা দিতে হলে সবক’টি ব্যাংকেই এসব এজেন্টের হিসাব থাকতে হবে। এজেন্টদের মাধ্যমে সেবা দিতে গ্রামীণফোনের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ ব্যাংকগুলো হলোÑ ডাচ্-বাংলা, মার্কেন্টাইল, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ওয়ান ব্যাংক, আইএফআইসি ও ইউসিবিএল।
জানতে চাইলে গ্রামীণফোনের লীড কমিউনিকেশন্স স্পেশালিস্ট সৈয়দ শওকত ইমাম বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক এবং আমাদের সহযোগী ব্যাংকগুলোর সাঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদাগুলো পূরণ লক্ষ্যে আমরা একটি প্রযুক্তিগত সমাধান তৈরি করেছি এবং তা তারা অবগত আছে। কিন্তু এরপরও কেন চিঠি দিয়েছে তা আমাদের বোধগম্য নয়।
বর্তমানে মোবিক্যাশের কতগুলো এজেন্ট রয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের রিটেইলারের সংখ্যা সংহত করছি এবং বর্তমানে আমাদের ৩০ হাজার ৫০০ মোবিক্যাশ এজেন্ট আছে। আগে অবশ্য মোবিক্যাশের এজেন্ট সংখ্যা ছিল প্রায় ৬০ হাজার।
ডাচ্-বাংলা, মার্কেন্টাইল, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ওয়ান ব্যাংক, আইএফআইসি ও ইউসিবিএল-এর সঙ্গে বর্তমানে গ্রামীণফোনের চুক্তি রয়েছে এবং গ্রামীণফোন বিলপে, টিকেটিং ইত্যাদি মোবাইল আর্থিক সেবা প্রদান করে যার অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে বলেও জানান শওকত ইমাম। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংক ডিসিএমপিএস/পিএসডি/৫৭/২০১০-৪৯৫ পত্র দিয়ে গ্রামীণফোনকে মোবিক্যাশের মাধ্যমে তিন ধরনের সেবার অনুমোদন দিয়েছে। এগুলো হলোÑ ট্রেন ও ক্রিকেট টিকিট ক্রয় এবং পরিষেবা বিল পরিশোধ। আর মোবাইল ব্যাংকিং বিষয়ে এ-সংক্রান্ত নীতিমালায় বলা হয়েছে, এ সেবা অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হবে। সেলফোন অপারেটররা শুধু প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।
দ্বিতীয়বারের মত কেন গ্রামীণফোনকে চিঠি দেয়া হয়েছে জানতে চাইলে পেমেন্ট সিস্টেম বিভাগের মহাব্যবস্থাপক মো. ইস্কান্দার মিয়া বলেন, মোবিক্যাশের এজেন্টগুলো নির্ধারিত ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কোন চুক্তি করে নাই। আমরা ছয় মাসের সময় দিয়েছিলাম সেটা হয় নাই। এরপর আরও তিনমাসের সময় দেয়া হয়েছে। অনেকেই মোবাইল ব্যাংকিং সেবার সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে চায়, তবে সেটা তো নিয়মের বাইরে হতে পারবে না।
উল্লেখ্য, এর আগে অনুমোদহীনভাবেই মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান শুরু করেছিল গ্রামীণফোন। প্রচার করেছিল মোবিক্যাশের বিজ্ঞাপন। যদিও এগুলো এখন বন্ধ রয়েছে। তারা এখন অনুমোদিত সেবার মধ্যে সীমিত রয়েছে। সে সময় কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও গ্রামীণফোণের এবং জরুরী বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানকার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মোবিক্যাশের পরবর্তী কোনো সেবা ও প্রচারণার ক্ষেত্রে অবশ্যই বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে লিখিত অনুমোদন নেবে বলে গ্রামীণফোন কথা দিয়েছিল। নীতিমালা অনুযায়ী, মোবিক্যাশের সব এজেন্টের সঙ্গে ব্যাংকের পৃথক চুক্তি থাকবে। পাশাপাশি এজেন্টগুলোও ধীরে ধীরে ব্যাংকের সেবা প্রদান বন্ধ করে দেয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে মোবিক্যাশ এজেন্টের মাধ্যমে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করতে হলে এজেন্টকে পৃথক হিসাব খোলার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রথমে গ্রামীণফোন মোবিটাকা ব্র্যান্ডের নাম ব্যবহার করে সেবা চালুর অনুমোদন চায়। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তাদের টাকার পরিবর্তে অন্য নামে সেবা চালু করে তিন ধরনের কার্যক্রম পরিচালনার অনুমোদন দেয়। গ্রামীণফোন মোবিক্যাশ নামে সেবা চালু করে তিন ধরনের সেবার অনুমোদন নিয়ে নিজেরাই হিসাব খুলে ব্যাংকিং সেবা প্রদান শুরু করে। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপে বন্ধ করতে বাধ্য হয়। প্রান্তিক জনগণের কাছে ব্যাংকিং সুবিধা পৌঁছে দিতে ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বাংলাদেশে মোবাইল ব্যাংকিং চালু হয়। তবে এ-সংক্রান্ত বিধিমালা প্রণয়ন হয় একই বছরের ২০ ডিসেম্বর; যা মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনাকারী সব ব্যাংককে মেনে চলার নির্দেশ দেয়া হয়। নির্দেশনা অমান্য করলে লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানানো হয়। এ-সংক্রান্ত নীতিমালায় বাংলাদেশ ব্যাংকের স্পষ্ট নির্দেশনা- এ সেবা অবশ্যই ব্যাংকের মাধ্যমে দিতে হবে। সেলফোন অপারেটররা শুধু প্রযুক্তিগত সহায়তা দেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।