পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজশাহী গোদাগাড়ী সাহেব নগর সীমান্তে জিরোলাইনের ওপরে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) একটি অস্থায়ী চৌকি স্থাপন করে জেগে ওঠা একটি চর দখলের অপতৎপরতা চালাচ্ছে। এ নিয়ে মানুষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। অপরদিকে পদ্মার ওপারে আরেক সীমান্ত চরখানপুরে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পাহারা বসিয়েছে গ্রামবাসী। বিজিবির সাথেই তারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে।
বিজিবির কোম্পানি পর্যায়ে ইতোমধ্যে প্রতিবাদ জানিয়ে বার্তা পাঠালেও বিএসএফ তা গ্রহণ করেনি। স্থানীয়রা বলছেন, বিএসএফ যেখানে ক্যাম্প করেছেন সেটি বাংলাদেশ সীমান্তের মধ্যেই। গত শুক্রবার গভীর রাতে এ অস্থায়ী ক্যাম্পটি বসানো হয়।
রাজশাহীর-১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীন ডেলটা কোম্পানির কমান্ডার নায়েব সুবেদার শওকত আলী জানান, বিএসএফ জিরোলাইনের ৭০ মিটারের ভিতরে অস্থায়ী ছাউনিটা করেছে, সেটি নোম্যান্সল্যান্ডের ওপরে। আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নোম্যান্সল্যান্ড থেকে নিজ নিজ সীমানার ১৫০ মিটার ভেতরে চৌকি করার নিয়ম। হঠাৎ গড়ে ওঠা এই চৌকিটা দেখতে পেয়ে বিজিবির পক্ষ থেকে বিএসএফের চরলবণগোলা কোম্পানিকে চিঠি ও বিভিন্ন মাধ্যমে বার্তা পাঠানোর চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত বিএসএফ কোনো চিঠি গ্রহণ করেনি। বিষয়টি বিজিবির রাজশাহী ব্যাটালিয়ন সদর কমান্ডার ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
রাজশাহীর-১ বিজিবি নায়েব সুবেদার শওকত আলী জানান, রাজশাহীর গোদাগাড়ীর সাহেবনগর সীমান্ত ফাঁড়ির এক কিলোমিটার পূর্ব পাশে পদ্মা নদী থেকে বের হয়ে একটি কাটা নদী উত্তর থেকে দক্ষিণমুখী হয়ে ভারতের মুর্শিদাবাদ জেলার চরলবণগোলা এলাকায় ঢুকেছে। তবে কাটা নদীটির ভাঙনে সেখানকার সীমানা পিলারগুলো গত বছরই নদীতে বিলীন হয়ে যায়। স¤প্রতি কাটা নদীটিতে পানি কমে গিয়ে পশ্চিম প্রান্তে বাংলাদেশ সীমানার মধ্যে ছোট একটি চর পড়েছে। নোম্যান্সল্যান্ড সংলগ্ন চরটিতে গিয়ে কিছু দিন ধরে বিজিবি সদস্যরা টহল দেন। চরটি বাংলাদেশ ভ‚খন্ডের সঙ্গে সংযুক্ত বলে নৌকা ছাড়াই পায়ে হেঁটেই বিজিবি সেখানে যাতায়াত করেন।
এলাকাবাসী জানায়, শুক্রবার রাতে বিএসএফ সদস্যরা ইঞ্জিন নৌকাযোগে চরটিতে গিয়ে রাতারাতি সেখানে বাঁশের মাচা পেতে ওপরে খড় ও পাটকাঠি দিয়ে একটি অস্থায়ী চৌকি তৈরি করেন। পর দিন শনিবার সকাল থেকে ভারতের চরলবণগোলা ফাঁড়ির বিএসএফ সদস্যরা সেখানে অবস্থান ও টহল করতে শুরু করেন। বিজিবি সদস্যরা সেখানে গেলে বিএসএফ সদস্যরা সরে যায়। আবার রাতের বেলা নৌকা নিয়ে বিএসএফ সদস্যরা চরে আসে। বিজিবি সদস্যরা গেলে তারা সরে যায়। গতকাল সকালে বিজিবির সদস্যরা চরে গেলে তারা চলে যায়।
এলাকাবাসি জানায়, চরটি জেগে ওঠায় তা বিএসএফ দখল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বিজিবি সদস্যরা রোববার দিনের বেলায় একবার ও রাতের বেলা আরেকবার চরের কাছাকাছি গিয়ে চলে যাওয়ার সিগন্যাল দিলে বিএসএফ সদস্যরা চৌকি ছেড়ে চলে যায়। রাতে আবারও নৌকা যোগে গিয়ে বিএসএফ সদস্যরা চরে ওঠার চেষ্টা করলে খবর পেয়ে বিজিবি চরে গিয়ে অবস্থান নেয়। এর পর বিএসএফ নৌকা ঘুরিয়ে ভারতের ভেতরে চলে যায়। তবে গভীর রাতে বিএসএফ আবারও চরের অস্থায়ী চৌকিতে গিয়ে অবস্থান নেয়। সোমবার সকালে বিজিবি সেখানে গেলে বিএসএফ চর ত্যাগ করে চলে যায়।
এলাকাবাসী জানিয়েছেন, নতুন এই চরটির সঙ্গে বাংলাদেশের মূল ভূখন্ড সংযুক্ত। চরের আশপাশে রয়েছে বাংলাদেশের ফসলি জমি, যেখানে কৃষকরা নিয়মিত চাষাবাদের কাজ করতেন। কিন্তু শুক্রবার রাত থেকে বিএসএফ অস্থায়ী চৌকি তৈরি করার পর থেকে কৃষকরা জমিতে যেতে পারছেন না। কৃষকরা তাদের নিরাপত্তার স্বার্থে চরে বিজিবির অস্থায়ী চৌকি তৈরির দাবী জানিয়েছে।
চরখানপুর পাহারা দিচ্ছে গ্রামবাসি
এদিকে রাজশাহীর পদ্মার ওপারে আরেক সীমান্ত চরখানপুরে অনুপ্রবেশ ঠেকাতে পাহারা বসিয়েছে গ্রামবাসী। বিজিবির সাথেই তারা রাত জেগে পাহারা দিচ্ছে। এখানে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত একটি আইল দ্বারা চিহ্নিত। এক ধাপ ফেললেই এপার ওপার হয়। এখান দিয়ে সহজেই অনুপ্রবেশ করানো যায়। যশোর অঞ্চলের মত এখান দিয়েও অনুপ্রবেশ হবার আশঙ্কায় এমন পাহারা। পালা করে বিজিবির সাথে গ্রামবাসিও পাহারায় নেমেছে। ২৮ নভেম্ববর থেকে শুরু হয়েছে এমন পাহারা।
চরখানপুর সীমান্ত ফাঁড়ির ইনচার্জ নায়েক সুবেদার নজরুল ইসলাম বলেন, গত ২৭ নভেম্বর তারা জানতে পারেন ভারত থেকে ওই সীমান্তপথে অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। এ জন্য পরের দিনই তিনি গ্রামের ইউপি সদস্য এরশাদুল হক ও কোহিনুর বেগমকে ডেকে বৈঠক করার সিদ্ধান্ত নেন। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় গ্রামের বাসিন্দারা সন্ধ্যা ছয়টা থেকে সকাল ছয়টা পর্যন্ত পালা করে পাহারায় থাকবেন। গ্রামবাসী একজোট হয়ে বিজিবিকে সহযোগিতা করছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।